এখনই শেষ বলতে চান না সাকিব
পেছনে তাড়া করছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দু:সহ স্মৃতি। দুই টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৩ ও ৮০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এখন সামনেও একই শঙ্কা! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩ রানে চার উইকেট হারানোর পর চতুর্থ দিন শেষ করেছে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৪ রানে। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস থেকে এখনো বাংলাদেশ ১০৭ রানে পিছিয়ে। তাদের আবার ব্যাট করতে নামাতে হলে কিংবা ম্যাচ বাঁচাতে হলে বাংলাদেশ দলকে অসাধারণ কিছু করে দেখাতে হবে। আপাত দৃষ্টিকে কাজটি কঠিন হলেও এখনই ‘শেষ’ দেখছেন না সাকিব। তিনি আশার প্রদীপ হিসেবে দেখছেন প্রথম ইনিংসে এর চেয়েও বাজে (২৪ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ) পরিস্থিতি রেকর্ড রানের জুটি গড়া মুশফিক ও লিটনকে।
চতুর্থ দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে আসা সাকিব আল হাসান বলেন, ‘পরিস্থিতিটা কঠিন। উইকেট অতোটা বেশি কঠিন না হলেও, আসলে দুই বা আড়াই দিন যখন আপনি ফিল্ডিং করবেন ১৬০-১৭০ ওভার। দ্বিতীয় ইনিংসে একটু তো কঠিন হয়ই চতুর্থ দিনে এসে। খেলোয়াড়রা হয়তো একটু টায়ার্ড। কারণ দুইটা ম্যাচই পাঁচ দিনের শেষ সময় পর্যন্ত যাচ্ছে হয়তো। যদি কালকে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারি। সেদিক থেকে চিন্তা করলে হয়তো খেলোয়াড়রা একটু টায়ার্ড। এরকম পরিস্থিতিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য ব্যাটিং করা কঠিন। ওই চাপটা আমরা হ্যান্ডেল করতে পারিনি এবং শেষ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ দলে এই সমস্যাটা হচ্ছে। আমি যখন টিমে ছিলাম না তখনও এটা হয়েছে। আবার আমি আছি এখনও হচ্ছে। সেকেন্ড ইনিংসে আমরা অনেকবারই ফেইল করেছি রিসেন্ট পাস্টে। ওই জায়গাতে উন্নতির সুযোগ ছিল। আজকেও আমরা ফেইল কেরছি। বাট এখনও যেহেতু শেষ হয়ে যায়নি। শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শেষ বলাটা ঠিক না।’
তিনি বলেন, ‘মুশফিক ভাই ও লিটনের মতো যদি সেকেন্ডে ইনিংসে ব্যাটিং করতে পারে দুইজন তাহলে ম্যাচ বাঁচানোর আশা আছে।’ চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘চতুর্থ ইনিংস যেকোনো ব্যাটসমানের জন্যই কঠিন পরিস্থিতি। মাথার ভেতর তখন অনেক কিছু কাজ করে। ম্যাচের অনেক সিনারিও থাকে। ওই চাপগুলো হ্যান্ডেল করা কঠিন যেগুলো আমরা পারছি না।’ সাকিব নিজেও চান দলকেব বাঁচাতে। এই জন্য তাকে অন্তত তিন ঘন্টার মতো ক্রিজে গিয়ে সময় কাটাতে হবে। তার আগে লিটন-মুশফিককে প্রথম সেশনও পার করতে হবে বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘আমিও চাই দলকে বাঁচাতে। এখনো ছয়টা উইকেট আছে। সবাইকে অবদান রাখতে হবে। পঞ্চম দিনে এরকম পরিস্থতি ওরা যখন আসবে কাল প্রথম ঘন্টা তো ফুল অ্যাটাক করবে আমাদের। খুবই স্বাভাবিক। আমরা ওদের জায়গায় থাকলে তাই করতাম। আমাদের সামলাতে হবে। প্রথম ঘন্টায় যদি উইকেট না হারাই। লাঞ্চ পর্যন্ত না হারাই তাহলে একটা জায়গায় আসার ট্রাই করব।’ তার ব্যাট থেকে কি সেঞ্চুরি আশা করা যায়? এ রকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘এখন দলের যা পরিস্থিতি সেঞ্চুরি থেকে আমি যদি তিন ঘন্টা ব্যাট করি, আশা করি যে দুই জন আছে ওরা লাঞ্চ পর্যন্ত খেলতে পারে।
আমি তারপরে তিন ঘন্টা ব্যাট করতে পারলে দলের জন্য ওটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ আসলে। লাঞ্চের আগে একটার বেশি উইকেট পড়লে আমরা খুব বাজে অবস্থায় থাকব। লাঞ্চ টাইম গুরুত্বপূর্ণ। যখন দুটা ব্যাটসম্যান এই উইকেটে সেট হয়ে যাবে তখন তাদের আউট করা কঠিন। আপনি যদি দেখেন তাদের দুটা ফ্রন্ট লাইন বোলার হচ্ছে পেসার। পেস বোলাররা মেক্সিমাম পাঁচ থেকে ছয় ওভারের স্পেল করতে পারে। লাঞ্চের ভেতর হয়ত দুই জন সর্বোচ্চ দশ বিশ ওভার বল করতে পারবে। ওই থ্রেট সামলাতে পারলে আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। বল পুরান হয়ে যাবে, বোলাররা ক্লান্ত হবে।’
এমপি/এএজেড