তৃতীয় দিন চট্টগ্রাম টেস্টের টুকিটাকি
তামিম-মুশফিকের আভিজাত্যের লড়াই
চগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন ছিল তামিম ও মুশফিকের আভিজাত্যের লড়াই। একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াই। এ রকম লড়াই দলের জন্য মঙ্গল বহে আনে। বাংলাদেশের জন্যও তাই হয়েছে। তিন উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান। কিন্তু তামিম-মুশফিকের লড়াই কী ছিল?
টেস্ট ক্রিকেটে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী তামিম ইকবাল। কিন্তু না তাকে হটিয়ে আবার শীর্ষে মুশফিকুর রহিম। আবার কেন? কারণ টেস্ট শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন মুশফিকুর রহিমই। তার রান ছিল ৪৯৩২। তার থেকে ৮৪ রান পেছনে ছিলেন তামিম ইকবাল। তার রান ছিল ৪৮৪৮। তামিম ইকবাল ১৩৩ রানের ইনিংস খেলার পথে ব্যক্তিগত ৮৫ রানের সময় তিনি মুশফিকুর রহিমকে পেছনে ফেলে যান। কিন্তু তার মাসলপুল হলে তিনি রিটায়ার্ড হার্ট করেন। ফলে তার আর সবার আগে পাঁচ হাজার রান করা হয়নি। ৪৯৮১ রানে আটকা পেেড়ন তিনি। এদিকে মুশফিকুর রহিম ব্যাট করতে নেমে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পথে তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলে নিজের স্থান পূনারুদ্ধার করেন। তার বর্তমান রান ৪৯৮৫। এখন তার সামনে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচ হাজার রান ছোঁয়ার হাতছানি।
পাঁচ বছর ৬১ ইনিংস পর
টেস্ট ক্রিকেটে এমনিতেই বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে। খেলতে নামে হারকে মেনে নিয়েই। এক একটি হারও বেশ পেটমোটা আকালের হয়ে থাকে। সাফল্য বলতে ২০১৭৮ সালে শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হারানো আর এ বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়। এর বাইরে উইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কিছু জয় আছে। তবে প্রতিপক্ষ বিবেচনায় এইসব জয় নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগার কিছু নেই। এই জয়গুলো স্বাভাবিক। যেহেতু ব্যর্থতার পাল্লা ভারি, তাই বাংলাদেশের ব্যক্তিগত অর্জনও সেভাবে নেই। যে কারণে গত পাঁচ বছরে ৬১ ইনিংসে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে ছিল না কোনো শতরান। এ সময় ১৫ জুটি মাঠে নেমে ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে ২১ বারই দুই অংকের ঘরও স্পর্শ করা সম্ভব হয়নি। ৫০ ছাড়ানো ইনিংস ছিল ১১টি। যেখানে ৯০ রানের ঘরে ছিল দুইটি ইনিংস। ধীর্ঘ সেই খরা কেটেছে চট্টগ্রাম টেস্টে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিম ইকবালের নতুন সঙ্গি মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে বাংলাদেশ, দল এই খরা দূর করে। সেই খরা দূর করে তারা রানকে নিয়ে গেছেন উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের ১৬২ রানে। তাদের উপরে আছে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ১৮৫, ২২৪ ও ৩১২ রানের তিনটি জুটি।
সফল কানকাশন সাব কাসুন রাজিথা
বিশ্ব ফার্নান্ডোর ইনজুরিতে কনকাশান সাব হিসেবে খেলতে নেমেই সফল হয়েছেন কাসুন রাজিথা। তার কারণেই শ্রীলঙ্কা দল দারুণভাবে খেলায় ফিরেছে। তিনি বল হাতে তুলে নেন ৫৫তম ওভারে। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই নাজমুল হাসান শান্তকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন নিরোশান ডিকাবেলার সহায়তায়। ১২ রান পর আবারও আঘাত হানেন। এবার আউট করেন কাপ্তান মুমিনুলকে বোল্ড করে। দুই জনই দ্ইু রান করে আউট হন। সব মিলিয়ে তিনি...ওভার বোলিং করে...রানে নেন...উইকেট।
মুমিনুল টানা ব্যর্থ
বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণ টেস্ট ক্রিকেটার হলেন অধিনায়ক মুমিনুল। টেস্ট ক্রিকেটে টানা ১১ ম্যাচে তার পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস ছিল। তার ইনিংসগুলো ছিল ১৮১ ও ২২*, ৪৭ ও ১২৬*, ৮ ও ৫০, ১৩ ও ১০০*, ৫১ ও ১২, ৩ ও ৫৬, ৫৩ ও ০, ৩৫ ও ৫৪, ৪৮ ও ১৩১*, ৮০ ও ২১, ১৩ ও ৬৮। এই ইনিংসগুলো তাকে নিয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়। এক সময় তার গড়ও ছিল বেশ ভালো। পঞ্চাশের উপর। কিন্তু সেই মুমিনুলের বর্তমান সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। সর্বশেষ খেলা ছয় টেস্টে তার মাত্র একটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস। সময় গড়ানোর সঙ্গে তার রেকর্ড আরও মলিন হচ্ছে। সর্বশেষ খেলা পাঁচ ইনিংসে তিনি দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুই টেস্টে ৬ ও ৫ এবং ০ ও ২ রান করার পর আজ চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আউট হয়েছেন ২ রানে।
এমপি/এমএমএ/