ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল স্পেন। ১৬ বছরের ইয়ামাল ও দানি অলমোর গোলে জয় পেয়েছে লা রোযারা। যদিও প্রথমার্ধে আগে গোল করে ফরাসিরা।
ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালের ম্যাচ শুরুর আগেই অবশ্য স্পেনকে ইউরোর শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদার বলে মানছিলেন বেশিরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞ। স্পেনের ১৬ বছর বয়সী লামিন ইয়ামাল অসাধারণ স্ট্রাইক দিয়ে হয়ে গেলেন ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা। আর তার ম্যাচে গোল পেয়েছেন দানি অলমোও।
আবহমান গ্রাম-বাংলা থেকে হারাতে বসেছে শৈশবের চিরচেনা ঘুড়ি উড়ানো উৎসব। আর সেই হারানো ঐতিহ্যকে ফেরাতে ও বর্তমান প্রজন্মের সামনে ঘুড়ি উড়ানোর উৎসবকে তুলে ধরতে ‘এসো উড়াই ঘুড়ি, বাংলার ঐতিহ্য লালন করি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উদযাপন উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার নলিন বাজারের পাশে যমুনার ধূ-ধূ বালুচরে মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং স্থানীয় সেচ্ছাসেবী আমরা গোপালপুরবাসী ফেসবুক গ্রুপ ও শুভশক্তি বাংলাদেশের সহযোগিতায় ঘুড়ি উৎসব পালন করা হয়।
এই ঘুড়ি উৎসবে নানা শ্রেণি পেশার মানুষসহ স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নানা রঙয়ের, নানা বর্ণের রঙিন ঘুড়ি নিয়ে বালুময় চরে বিকাল বেলা সমবেত হয়। পরে একে একে ঘুড়ি উড়ানো ও ঘুড়ির সুতা কাটাকাটি খেলা শুরু হয়। তারপর সন্ধ্যায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাউল গানের আড্ডায় মেতে ওঠে বিনোদনপ্রেমিরা।
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
ঘুড়ি উড়াতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী আসফিয়া জান্নাত আদরিতা বলেন- ছোট বেলা শহরে থাকি, এবার পরিবার সঙ্গে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। এর আগে কখনো ঘুড়ি দেখেনি বা ঘুড়ি উড়ানো হয়নি। এবারই প্রথম ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে এসেছি এবং উড়িয়েছি। এখানে এসে সত্যিই ভাল লাগছে।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক বছর ধরে আমাদের স্কুল থেকে চরাঞ্চলে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে আসছে। আমরা কয়েক দিন ধরে নানা রঙয়ের বিভিন্ন ঘুড়ি তৈরি করেছি। নদীর পাড়ে বিকাল বেলা এমন উৎসবে অনেক আমাদের অনেক সহপাঠিরা তাদের মা-বাবা নিয়ে আনন্দ উপভোগ করছেন।
ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেওয়া স্কুল শিক্ষিকা শামীমা ইয়াসমিন বলেন, কর্ম ব্যবস্ততার কারণে যমুনা চরাঞ্চলে আসার সুযোগ হয় না। বসন্ত বরণ উপলক্ষে গতবারের ন্যায় এবারো ময়না আপার ডাকে ঘুড়ি উৎসব উদযাপনে পরিবার নিয়ে অংশ গ্রহণ করেছি। চরাঞ্চলের এমন উৎসবে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঘুড়ি উৎসব আয়োজক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না বলেন, গ্রাম-বাংলা ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ২০১৯ সাল থেকে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি উৎসব পালন করে আসছি। এরই ন্যায় এবার ঈদের পর এই আয়োজন করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর লোকজনের উপস্থিত বেড়েছে। প্রতিবছরই এমন ঘুড়ি উৎসব উদযাপন করা হবে।
গোপালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, ছোট বেলা আমি নিজেও ঘুড়ি উড়িয়েছি, এটিতে আলাদা একটি আনন্দ আছে। আমি মনে করি বাঙালির এই ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতির যে একটা অতীত সম্বৃদ্ধির অতীতকে স্মরণ করে থাকে। এটি একটি বিশুদ্ধ প্রতিযোগিতা। এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, ঘুড়ি উৎসব আমাদের প্রাণের একটি উৎসব। এমন পরিবেশে বর্ণিল এই রঙিন ঘুড়ি উৎসব কখনো দেখার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন পর এভ ঘুড়ি উৎসবে প্রাণ ফিরেছে সেই শৈশবে। ঈদ আনন্দের দ্বিতীয় দিনে বর্ণিল রঙিন রঙের ছটায় ঘুড়ি হাতে নিয়ে নীল আকাশে উড়িয়েছি। উৎসবে পরিবার নিয়ে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত।
প্রায় তিন যুগ মসজিদে ইমামতি করার পর ঘোড়ার গাড়িতে করে অবসরকালীন রাজকীয় বিদায় দেওয়া হয়েছে মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান নামে এক ইমামকে। এই ইমামের এমন বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন।
এর আগে ইমামকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান এবং এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয় ৯ লাখ টাকা। গ্রামের মানুষ নানা ধরণের উপহারও প্রদান করে। ইমামকে সংবর্ধনার সম্মানিত এমন উদ্যোগের কারণে প্রশংসায় ভাসছেন ওই এলাকাবাসী।
গত মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ইমামের এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠান দেখতে এক নজর ভিড় করেন এলাকাবাসী।
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
নতুন কহেলা গ্রামের মুসুল্লি আবুল হাশেম খান বলেন, মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি গ্রামবাসীর ভালবাসা তা জনশ্রুতেই বুঝা যায়। আমরা তাকে ইমামকে বিদায় দিয়ে ব্যথিত।
বিদায়ী ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬শ’ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায় বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এ ব্যাপারে নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকরির মত পেনশন দেওয়া হয়েছে। তার সর্বদা মঙ্গল কামনা করছি।
১৯৯১ সালে ৬শ’ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম হিবেসে যোগদান করেন মাওলানা মোহাম্দ শাহজাহান খান। বিদায়ের প্রাক্কালো ইমামের বেতন হয় ১৭ হাজার ৫’শ টাকা। মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান ঢাকার লালবাগের একটি মাদরাসা থেকে মাওলানা পাস করেন।
তার এই দীর্ঘ ইমামতি পেশায় থাকা কালীন এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারের অধিক মানুষের।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথমবারের মতো একসঙ্গে দেখা গেলো দলের চারজন সাবেক মন্ত্রীকে। তারা বর্তমানে লন্ডনের একটি হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তবে তাদের একসঙ্গে উপস্থিতির কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, চিকিৎসার জন্য তারা লন্ডনে গেছেন, আবার কেউ মনে করছেন, রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে।
সাবেক এই চার মন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তারা অনেকটাই নীরব ছিলেন। ফলে লন্ডনে তাদের একত্রিত হওয়া নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামনের দিনগুলোতে তাদের এই বৈঠকের বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।