পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়
পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়। ছবি: সংগৃহীত
এ যেন এক অন্য বাংলাদেশ। শেষ কবে লাল-সবুজের দলের খেলা দেখে এত মনপ্রাণ জুড়িয়েছে এ জন্য বেশ পেছনে ফিরতে হবে আপনাকে। ছাত্র জনতার নেতৃত্বে দেশে গণ অভ্যুত্থানের পর অনেকেই এখন ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশ’ বলছে। বাইশগজেও লেগেছে যেন নতুন বাংলাদেশের হাওয়া। পাকিস্তানের বিপক্ষে কখনো টেস্ট জিততে না পারা দলটা এবার ১০ উইকেটে জিতে নতুন ইতিহাস গড়ল।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগে ১৩ টেস্টের মধ্যে ১২ বারই হেরেছিল বাংলাদেশ। এদিকে টাইগারদের এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় ইনিংসে দুজনের মিলেই শিকার করেছেন ৭ উইকেট। আর এতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৪৮ রান করেছিল পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে টাইগাররা ৫৬৫ রানে অলআউট হলে, ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নেমে সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয় বাবর-রিজওয়ানরা। এতে ৩০ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশে।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ উইকেট এবং পুরো একটি সেশন বাকি থাকতেই জয় তুলে নেই বাংলাদেশ। সাদমান ইসলাম ৯* রানে এবং ২৬ বলে অপরাজিত ছিলেন আরেক ওপেনার জাকির হাসান।
রোববার (২৫ আগস্ট) দিনের শুরুতে শরিফুলের আঘাতে সাজঘরে ফেরেন শান মাসুদ। (১৪)। এরপরই বাবর আজমের ক্যাচ মিস করেন লিটন দাস। তবে পিচে থিতু হতে পারেননি এই পাক ব্যাটার। ৫০ বলে ২২ রান করে নাহিদ রানার বলে বোল্ড আউট হন তিনি।
পরের ওভারের দুই ওভারে সাউদ শাকিল (০) ও আব্দুল্লাহ শাফিককে (৩৭) সাজঘরে ফিরিয়ে জোড়া শিকার করেন সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে শিকার হন আঘা সালমান। এতে দলীয় ১০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। এতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতি শেষে মাঠে নেমে শাহিন আফ্রিদিকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪০তম ওভার বাংলাদেশের লিড পার করেন রিজওয়ান। ৪৩তম ওভারে নাসিম শাহকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে প্রতিরোধে দেওয়াল গড়ে তোলেন রিজওয়ান।
তবে ৫৪ ওভারে চতুর্থ বলে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। এতে বাংলাদেশের জয়ের পথ সহজ হয়। শেষ দিকে মোহাম্মদ আলিকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন মিরাজ। এতে ১৪৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে জয়ের জন্য ৩০ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিন উইকেট নেন আরেক স্পিনার সাকিব আল হাসান। এ ছাড়াও তিন পেসার শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ এবং নাহিদ রানা একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে তৃতীয় এবং চতুর্থ দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের ৪৪৮ রানের লক্ষ্য ভেদ করে ১১৭ রানের লিড পেয়েছে সফরকারীরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। দিনের শেষ সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ২৩ রান তুলে দিনশেষ করেছিল পাকিস্তান।