টাইব্রেকারে সুইজারল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড
ছবি: সংগৃহীত
স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে বাইসাইকেল কিকে দুর্দান্ত গোল করে ইংল্যান্ডের বিদায় ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন জুড বেলিংহ্যাম। পরে হ্যারি কেনের গোলে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয় ইংলিশদের। তারকায় ঠাঁসা ইংল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনালেও পিছিয়ে পড়েছিল ব্রেল এমবোলোর গোলে।
নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগে ইংলিশদের সমতায় ফেরান বুকায়ো সাকা। তবে এদিন শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে পিকফোর্ড বীরত্বে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।
শনিবার (৬ জুলাই) ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডকে টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোল সমতায় শেষ করে দুইদল। ফলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। অতিরিক্ত সময়েও কোনো দলই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়া গোলের দেখা না পেলে খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়।
টাইব্রেকারে সুইজারল্যান্ডের প্রথম শট নিতে আসা মানুয়েল অকাঞ্জির শট ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্দান পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের প্রত্যেক খেলোয়াড়ই বল লক্ষ্যে পাঠাতে সমর্থ হন। বড় টুর্নামেন্টে টাইব্রেকারে ১৪টি স্পটকিকের মুখোমুখি হয়ে এখন পর্যন্ত চারবার ঠেকিয়েছেন পিকফোর্ড। ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বাকি গোলরক্ষকরা মিলে তার অর্ধেক শট ঠেকাতে পেরেছেন।
নির্ধারিত সময়ের ৭৫ মিনিটে ব্রেল এমবোলোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। কিন্তু পাঁচ মিনিট পরেই ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান বুকায়ো সাকা।
ইউরোর গত আসরের ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালির কাছে হেরেই শিরোপার স্বপ্ন ভেঙেছিল ইংল্যান্ডের। এদিন ইংল্যান্ডের হয়ে পঞ্চম শট নিতে আসা আলেক্সান্ডার আর্নল্ড বল জালে জড়াতেই উল্লাসে মাতে ইংলিশরা।
এদিন সাউথগেটের দল ফের ঘুমপাড়ানি ফুটবল উপহার দিয়েছে। তারকা সমৃদ্ধ ইংল্যান্ড প্রথমার্ধে কিছুটা ছন্দময় ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে স্বরূপে ফেরে। ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুই দল মিলে মাত্র ৩টি শট অন টার্গেটে রাখতে সমর্থ হয়।
সব মিলিয়ে ১২০ মিনিটের খেলায় ইংল্যান্ড ১৩টি শট নিয়ে মাত্র ৩টি লক্ষ্যে রাখতে সমর্থ হয়। সুইজারল্যান্ডেরও ১১টি শটের ৩টি লক্ষ্যে থাকে।
ডুসেলডর্ফ অ্যারেনায় প্রথম ভালো সুযোগটা ইংল্যান্ডই পেয়েছিল। ম্যাচের ২১ মিনিট কর্নার থেকে আসা বলে হেড নিয়েছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন। কিন্তু সেই হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
এই অর্ধের শেষ দিকে বক্সের ভেতর থেকে শট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কোবি মাইনু। কিন্তু সেই শট প্রতিহত করে সুইসদের রক্ষা করেন অধিনায়ক গ্রানিত জাকা।
দ্বিতীয়ার্ধে ভালো শুরু করে সুইজারল্যান্ড। ৫১ মিনিটে বক্সে ঢুকে কাছ থেকে শট নিয়েছিলেন এমবোলো। কিন্তু তার দুর্বল শট সোজা পিকফোর্ডের হাতে যায়। দুই দল মিলিয়ে এটিই লক্ষ্যে প্রথম শট ছিল।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে ডেডলক ভাঙে সুইসরা। ডান দিক থেকে ফাবিয়ান শার পাস বাড়ালে তাতে পা ছোঁয়ালেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনস। দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়ান এমবোলো।
গোল হজম করে একসঙ্গে তিনজন খেলোয়াড়কে পরিবর্তন করেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। এরপরেই গোল শোধ করে দেয় তার দল। ৮০ মিনিটে ডেকলান রাইসের পাস ধরে কাট ইনসাইড করে বক্সের বাইরে থেকে বল জালে জড়ান আর্সেনাল তারকা বুকায়ো সাকা।
ইতালিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা সুইজারল্যান্ড যোগ করা সময়ে ভালো সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি এমবোলো।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে রাইসের নেয়া ২৫ গজের দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। ১০২ মিনিটে বেলিংহ্যামকেও হতাশ করেন ইন্টার মিলানে খেলা এই গোলরক্ষক।
১১৩ মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও উড়িয়ে মারেন সুইজারল্যান্ডের ডিফেন্ডার ফাবিয়ান শার। ১১৮ মিনিটে জর্দান শাকিরির কর্নার শট বারে লাগলে হতাশ হতে হয় সুইসদের।
টানা দুটি ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে পাঁচটি বড় আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল সুইজারল্যান্ড। অন্যদিকে ইংল্যান্ড টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠার থেকে একধাপ দূরে।