বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে উগান্ডার ইতিহাস
ছবি: সংগৃহীত
আফ্রিকার ছোট্ট এক দেশ। ক্রিকেটটা ওখানে এতদিন ছিল বেশ পিছিয়ে। ফুটবল বা অলিম্পিকের কিছু খেলার চর্চাই হতো বেশি। এখনও কি ক্রিকেট পিছিয়েই থাকবে? সম্ভবত একটু হলেও বদলে যাবে দৃশ্যপট।
উগান্ডার অধিনায়ক আগেই বলেছিলেন, তাদের নিয়ে গর্বিত দেশের সব অঙ্গনের মানুষ। এখন নিশ্চয়ই সেটি আরও বাড়বে।
বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে নিজেদের স্রেফ দ্বিতীয় ম্যাচে এসেই যে প্রথম জয়টা পেয়ে গেছে তারা। ওয়াইসা সুইপ করে ফাইন লেগে ফেলতেই ঐতিহাসিক এই ক্ষণের সৃষ্টি হয়। উগান্ডার গ্যালারি ও ডাগ আউট ভেসে যায় উচ্ছ্বাস আর আনন্দে। কেউ জড়িয়ে ধরেন হয়তো, কারো কাঁধে অন্য কেউ। দিনটিই যে আজ তাদের!
বৃহস্পতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে উগান্ডা। শুরুতে ব্যাট করে ৭৭ রানে অলআউট হয়ে যায় পাপুয়া নিউগিনি। ওই ১০ বল আগে তাড়া করেছে উগান্ডা। এটি বিশ্বকাপে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ, এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সঙ্গী হয়েছিল বড় হার। সবমলিয়েই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেকোনো ধরনের আসরে তাদের প্রথম প্রতিনিধিত্ব।
পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে শুরুটাই দুর্দান্ত হয় উগান্ডার। দলটির হয়ে আসাদ ভালা প্রথম ওভারে উইকেট মেডেন করেন। ২ বল করে শূন্য রানে তিনি ফেরান আসাদ ভালাকে। এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ভালা।
পরের ওভারের কুয়েওতার প্রথম বলেও আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। তবে এবার রিভিউ নিয়ে উচ্চতার কারণে বেঁচে যান উরাও। ওই ওভারে বাউন্ডারিসহ ১১ রান পায় পাপুয়া নিউগিনি। পরের ওভারেই এসে অবশ্য আবারও একটি উইকেট পেয়ে যায় উগান্ডা। এবার সাসে বাউকে ফেরান মিয়াগি। ৯ বলে ৫ রান করেন তিনি।
মাঝে দুটি ছোট জুটি পায় পাপুয়া নিউগিনি। লাগা সাইকির সঙ্গে হিরি হিরির ২০ বলে ১৭ রানের জুটিটি ভাঙে রান আউটে। আর চার্লস আমিনির সঙ্গে হিরির জুটি ছিল ২১ বলে ১২ রানের। ১৪ বলে ৫ রান করে চার্লস আমিনিকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ফ্রাঙ্কো সুবুগা।
পাপুয়া নিউগিনির পক্ষে ১৯ বলে সর্বোচ্চ ১৫ রান করা হিরি হিরিকেও এলবিডব্লিউ করেন সুবুগা। শেষদিকে ২০ বলে ১২ রান করেন কিপলিন দুরিগা। তবুও অবশ্য পাপুয়া নিউগিনির রান ছুতে পারেনি একশ। উগান্ডার হয়ে ৪ ওভারে দুটি মেডেনসহ স্রেফ ৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ফ্রাঙ্কো সুবুগা। এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে কৃপণতম বোলিংয়ের রেকর্ড।
রান তাড়ায় নামা উগান্ডার জন্য ভর করেছিল হারের শঙ্কাও। প্রথম ১৩ বলে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা, তখনও দলে রান স্রেফ ৬। ওখান থেকে আলফেশ রমজানির সঙ্গে জুটি গড়েন রিয়াজাদ আলি খান। তবে তাদের ১৯ রানের জুটি ভেঙে যায় সুপারের বলে রমজানি ফিরলে। ১০ বলে ৮ রান করেছিলেন তিনি।
এরপরের ওভারে দিনেশ নারকানি তিন বলে কোনো রান করার আগেই আসাদ ভালার বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন। ২৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে উগান্ডা। তবে এবারও তাদের পথ দেখান রিয়াজাদ, তার সঙ্গী হন জুমা মিউওয়াগে।
৪৩ বলে তাদের ৩৫ রানের জুটিতে যখন জয়ের স্বপ্ন খুব কাছে উগান্ডার, তখনই হুট করে রান আউট হয়ে যান জুমা। ১৬ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৩ রান করেন তিনি। তবে একপ্রান্ত আগলে থাকেন রিয়াজাদ আলি।
৫৬ বলের ইনিংসে স্রেফ ১টি চার হাঁকান তিনি, করেন ৩৩ রান। জয় থেকে তিন রান দূরে থাকতে ভানুয়ার বলে ফেরেন তিনি। তবে ১৭ বলে ৭ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন কেনাথ ওয়াইসওয়া। নিজেদের ইতিহাসে স্মরণীয় এক জয় পায় উগান্ডা।