বৃষ্টি আইনে হেরে সিরিজ ড্র করলো বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত
তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এতে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র হলো। ১৪ ওভার ৪ বল খেলা পর বৃষ্টি আসে। ততক্ষণে বাংলাদেশের ১১০ রানের জবাবে ৫ উইকেটে ৯৫ রান করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। এতে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১৭ রানে জয় পায় কিউইরা।
মাউন্ট মঙ্গনুইয়ের বে ওভালে রবিবার আগে ব্যাট করে ১১০ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তবে স্বল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে শুরুতেই সাফল্যের দেখা পায় টাইগাররা। স্পিনার মাহেদী হাসানের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন সেইফার্ট। উইকেটরক্ষক রনি তালুকদার বল ধরে ভাঙেন উইকেট। ততক্ষণে ক্রিজের বাইরে সেইফার্ট। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখে তাকে আউটের সিদ্ধান্ত জানান। দ্বিতীয় ওভারে ১৬ রানে নিউজিল্যান্ড হারায় প্রথম উইকেট।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবারও কিউই শিবিরের হানা দেন মাহেদী। এবার তার শিকার ড্যারেল মিচেল। উইকেট থেকে সরে মিড অফ দিয়ে বল উড়াতে চেয়েছিলেন মিচেল। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে ক্যাচ দেন সোজা শান্তর হাতে। ২৬ রানে নিউজিল্যান্ড হারায় দ্বিতীয় উইকেট। মামুলী পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে বাংলাদেশ ভালোই লড়াই করছে।
এরপর স্বাগতিক শিবিরে ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে যান পেসার শরিফুল। অবশেষে দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পান তিনি। শরিফুলের ভেতরে ঢোকানো দ্রুতগতির বলে বোল্ড গ্লেন ফিলিপস। আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি। ৩০ রানে নিউজিল্যান্ড হারায় ৩ উইকেট।
এরপর রান আউটে চতুর্থ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ক্রিজের মাঝে দুই ব্যাটসম্যানের সংঘর্ষে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ফিরতে পারেনি মার্ক চ্যাপম্যান। মুস্তাফিজের বল কভারে পাঠিয়ে দুই রান নেওয়ার জন্য দৌড় দেন অ্যালেন। ডাবল হয়ে যেত। কিন্তু দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে অ্যালেন ও চ্যাপম্যান ক্রিজের মাঝে সংঘর্ষে পড়েন। আঘাত পান অ্যালেন। নন স্ট্রাইক প্রান্তে ফিরতে পারেননি চ্যাপম্যান। আফিফের থ্রো থেকে বল পেয়ে মুস্তাফিজ ভাঙেন উইকেট।
এবার ফিন অ্যালেনকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তার ভেতরে ঢোকানো বল মিস করে বোল্ড হন অ্যালেন। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো অ্যালেনকে আউট করলেন শরিফুল। ৩১ বলে ২৮ রান করে অ্যালেন বোল্ড হলেন। তার ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে বল আঘাত করে স্টাম্পে। তাতে বাংলাদেশ পেয়ে যায় পঞ্চম উইকেটের স্বাদ।
৮ ওভার তিন বলে দলীয় ৪৯ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর অনেকটাই চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। তবে নিশাম ও মিচেল স্যান্টনারের ব্যাটিংয়ে জয়ের দিকে এগোতে থাকে কিউইরা। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের জয়টা স্রেফ সময়ের ব্যাপার। ৩২ বলে তাদের দরকার কেবল ১৬ রান। কিন্তু ১৪ ওভার ৪ বলের পর নেমে আসে তুমুল বৃষ্টি।
বৃষ্টি আসার আগে অবধি নিশাম ও স্যান্টনারের জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩৭ বলে তাদের অপরাজিত ৪৬ রানের জুটি ছিল। খেলা বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে নিউজিল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের হতাশার শুরু হয় প্রথম ওভারেই। একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু টিম সাউদির চতুর্থ বলে তাকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন সৌম্য, কিন্তু অল্পের জন্য স্টাম্পে আঘাত করে বল; আউট হয়ে সাজঘরে ফেরত যান সৌম্য।
পরে রনি তালুকদারের সঙ্গে ছোট একটি জুটি গড়েন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২২ বলে ২৭ রানের ওই জুটিই অবশ্য শেষ অবধি ইনিংসের সবচেয়ে বড় হয়ে যায়। ১৫ বলে ১৭ রান করে এডাম মিলনের বলে ফিন অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
শান্তর বিদায়ের পরের ওভারেই রনি তালুকদার ১০ বলে ১০ রান করে এলবিডব্লিউ হন। এরপরও বাংলাদেশে কক্ষপথে রেখেছিলেন তাওহীদ হৃদয় ও আফিফ হোসেন। কিন্তু হৃদয় ১৮ বলে ১৬ ও আফিফ ১৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর কেবল রিশাদ হোসেন ছাড়া আর কোনো ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরেই যেতে পারেননি। ১৩ বলে ১০ রান করা রিশাদ দলের শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন টিম সাউদি, এডাম মিলনে ও বিন সিয়ার্স। ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে একাই চার উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার।
উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বৃষ্টির কারণে বাতিল হয়।