টিকিট নেই, দর্শকও নেই!
বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজের টিকিট ভোর থেকে বিক্রি শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা পরই জানিয়ে দেওয়া হয় টিকিট শেষ।
দৃশ্য-১: মঙ্গলবার সকাল ৯টা। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ভোর থেকেই দর্শকদের টিকিটের লাইন। ঘণ্টা দুয়েক টিকিট বিক্রি হওয়ার পর বুথ থেকে জানানো হয় টিকিট শেষ। কিন্তু একই সময়ে কালোবাজারিরা প্রকাশ্যে টিকিট বিক্রি করছিলেন। সে সময় অনেকেই বাড়তি দামে টিকিট কিনে নেন যদি পরে আর না পাওয়া যায়?
দৃশ্য-২: বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা। স্টেডিয়ামের ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর গেটে ঢোকার জন্য দর্শকদের নেই লম্বা সারি। টিকিটের জন্য নেই কোনো তোড়জোড়। কালোবাজারিরা টিকিট হাতে নিয়ে ক্রেতা খুঁজছেন। এক কালোবাজারি ৫০০ টাকার টিকিট কেনা দামেই বিক্রি করতে চাইলেন এই প্রতিবেদকের কাছে। নিজেই পরামর্শ দিলেন ২০০ টাকার গ্যালারির টিকিট ৩০০ টাকায় না কিনে ৫০০ টাকারটা কিনে আরামে খেলা দেখতে। কিছুদূর এগােনোর পর দেখা যায় একজন ষাটোর্ধ্ব মহিলা বোরকা পরে হাতে টিকিট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এগিয়ে যেতেই জানালেন টিকিট লাগবে। ‘না, শব্দ শোনার পর হতাশই হলেন। পরে কথা বলে জানা গেল সকাল থেকে একটিও টিকিট বিক্রি করতে পারেননি। এ রকমটি হবে জানলে তিনি কখনই টিকিট কিনতেন না। টিকিট কেনার দিন অনেক কষ্ট করে টিকিট ম্যানেজ করতে হয়েছে কয়েকটি টাকা লাভ করার আশায়। এখন তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। জানালেন গরিব মানুষ। টিকিট বিক্রি করতে না পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে? টাকা পাবেন কোথা থেকে?
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দর্শকরা যেন ইউটার্ন দিয়েছেন। বিসিবির মাধ্যম সারির বেশ কয়েকজন সংগঠক এনিয়ে নিজেরাও অবাক হয়েছেন। আগে দিন টিকিট নেই। পরের দিন দর্শক নেই।
দুই অধিনায়ক যখন টস করতে নামের, তখন মাঠে উপস্থিত দর্শক ছিল হাতে গোনা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক আসা শুরু করলেও তা ছিল খুবই কম। বেলা দেড়টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্টেডিয়ামের অর্ধেকেরও বেশি আসন ছিল খালি। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ও ক্লাব হাউজে সৌজন্য টিকিটধারীর উপস্থিতি ছিল আবার বেশ ভালো। কিন্তু সাধারণ দর্শকদের জন্য ২০০ ও ৩০০ টাকার গ্যালারির অধিকাংশ আসনই লি ফাঁকা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো আগের দিন যেখানে টিকিটের জন্য দর্শকরা সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, যাদের অনেকেই না পেয়ে ফিরে গেছেন টিকিট শেষ হয়ে গেছে বলে, সেই সব টিকি গেল কোথায়? মিরপুরে বসাসরত সামাদ নামে একজন বলেন, ‘এ সব কারসাজি। বেশি দামে বিক্রির আশায় আগের দিন অল্প টিকিট বিক্রি করেই শেষ বলা হয়েছিল। যারা টিকিট পাননি হয়তো তাদের অনেকেই আর আসেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কী আর বলব? সবইতো বোঝেন!’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক পরিচালক বলেন, ‘টিকিট নিয়ে কিছু বলতে পারব না। আজ ওয়ার্কিং ডে তাই দর্শক আসেননি। শুক্রবার টিকই আসবে।
এমপি/এমএমএ/