চট্টগ্রামে কোনো ম্যাচ না খেলেও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে সিলেট
নবম বিপিএলের চমক সিলেট স্ট্রাইকার্স। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে দুরন্ত-দুর্বার। ঢাকা পর্বে একমাত্র দল হিসেবে প্রতিদিনই মাঠে নেমেছে। প্রতিটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে। ৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা শীর্ষে চলে যায়। এর কারণও ছিল। ঢাকা পর্বে আর কোনো দলই ২টির বেশি ম্যাচ খেলেনি। যেখানে আবার প্রতিটি দলই একটি করে ম্যাচ হেরেছিল। তাই বিপিএল চট্টগ্রামে যাওয়ার পর প্রথম দুই দিন সিলেটের কোনো খেলা ছিল না। বাকি ৬ দলই মাঠে নেমেছে। এর মাঝে ফরচুন বরিশাল ও স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স খেলেছে দুইটি করে ম্যাচ। বাকি তিন দল ঢাকা ডমিনেটরস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্স খেলেছে একটি করে ম্যাচ। ৪টি করে ম্যাচ খেলে বরিশাল ও চট্টগ্রাম সিলেটকে টপকে যেতে পারেনি।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তমান রানার্সআপ বরিশাল হেরেছিল সিলেটের কাছে। সেই ম্যাচে বরিশালকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর নেতৃত্ব চলে আসে সাকিবের হাতে। তার নেতৃত্বে বরিশাল টানা ৩ ম্যাচ জিতে সিলেটের পিছে পিছে ছুটছে। তাদের পয়েন্ট ৬। চট্টগ্রাম ও রংপুর ২টি করে ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ও খুলনা ৩টি করে ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি।
চট্টগ্রামে সিলেট নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি। প্রতিপক্ষ ঢাকা ডমিনেটরস। দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা।
ঢাকা পর্বে শুরুতে দিনের প্রথম ম্যাচ রান খরা হয়ে উঠেছিল। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই রানখরা দূর হয়ে রানবন্যা হয়ে উঠে। চট্টগ্রামে ছিল উল্টো। দিনের প্রথম হয়েছে রানবন্যার, দ্বিতীয় ম্যাচ আবার হয়ে উঠে রানখরার। কিন্তু তা শুধু প্রথম দিনই ছিল। দ্বিতীয় দিনই রানখরা দূর হয়ে যায়। দুইটি ম্যাচই রানবন্যায় ভরপুর হয়ে উঠে।
ঢাকায় বড় সংগ্রহ অতিক্রম করার ঘটনা ঘটেছিল। বরিশালের করা ১৯৪ রান সিলেট টপকে গিয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রামে বড় সংগ্রহ হলেও টপকে যাওয়ার কোনো ঘটনা ছিল না। চট্টগ্রামে দুইটি বড় ইনিংসই ছিল বরিশালের। চট্টগ্রামের বিপক্ষে তারা ৭ উইকেটে ২০২ রান করে এবারের আসরের দলগত সর্বোচ্চ রানের কীর্তি গড়েছিল। অতিক্রম করেছিল ঢাকার বিপক্ষে সিলেটের করা ২০১ রানকে। বরিশালের ২০২ রানের জবাব মোটামুটি দিতে পেরেছিল চট্টগ্রাম। তারা করেছিল ১৭৬ রান। কুমিল্লার বিপক্ষে বরিশাল ৬ উইকেটে ১৭৭ রান করেছিল। কুমিল্লাও ছেড়ে কথা বলেনি। জবাব দিতে নেমে তারা করেছিল ৭ উইকেটে ১৬৫।
সিলেট যেমন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, তেমনি ব্যাটিংয়েও শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছেন তৌহিদ হৃদয়। ৪ ম্যাচে তার রান ১৯৫। দ্বিতীয় স্থানও ধরে রেখেছেন সিলেটের ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। তার রান ১৬৭। নাজমুলের চেয়ে ৪ রান কম করে তিনে চট্টগ্রামের পাকিস্তানের ওসমান খান ও ৬ রান কম করে খুলনার আজম খান আছেন চারে। এই দুইজনেই ঢাকায় পরস্পরের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। দুইটি সেঞ্চুরিই ছিল অপরাজিত। আজম খান ১০৯ ও ওসমান খান ১০৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। কুমিল্লার বিপক্ষে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলে ১৫৬ রান করে পাঁচে সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রামে প্রথম দুই দিন কোনো সেঞ্চুরি হয়নি।
ঢাকা পর্বে ৭ উইকেটে নিয়ে সিলেটের কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজা গড় রানে ছিলেন দুইয়ে। তিনিও তার এই স্থান ধরে রেখেছেন। তবে শীর্ষ স্থানে এসেছে পরিবর্তন। আগে ৭ উইকেট নিয়ে সবার উপরে ছিলেন ঢাকার আল আমিন। তিনি চট্টগ্রামে একটি ম্যাচ খেলে কোনো উইকেট পাননি। নেমে গেছেন তিনে। উপরে উঠে গেছেন রংপুর রাইডার্সের রবিউল। তারও উইকেট ৭টি। গড় রানে তিনি সবার উপরে। তিনে ও চারে থাকা সিলেটের দুই পেসার পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ও রেজাউর রহমান রাজা একধাপ করে নিচে নেমে গিয়ে চারে ও পাঁচে অবস্থান করছেন।
ঢাকার পর চট্টগ্রামেও কেউ ইনিংসে ৫ উইকেট নিতে পারেননি। তবে ৪ উইকেট নেওয়ার ঘটনা আছে একাধিক। রংপুরের রবিউল ২২ রানে খুলনার বিপক্ষে, প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে কুমিল্লার তানভীর বরিশালের বিপক্ষে ৩৩ রানে ও চট্টগ্রামের আবু জায়েদ ৪৯ রানে বরিশালের বিপক্ষে ৪টি করে উইকেট নিয়েছিলেন।
এমপি/এসজি