সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে কুমিল্লার তৃতীয় হার

বিপিএলের নবম আসরে সাকিবে ব্যাটে অন্য রকম দ্যুতি দেখা যাচ্ছে। প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ৩২ বলে করেছিলেন ৬৭ রান। পরের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আর ব্যাট করতে নামেননি। তৃতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৮ রান করেছিলেন ৩ বলে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী। তার ব্যাটের আগুনে পুড়ে ছাড় খার হয়ে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। কুমিল্লার ললাটে এঁকে দিয়েছেন ১৩ রানে হার। ম্যাচ সেরা সাকিব খেলেন ৪৫ বলে ৪ ছক্কা ও ৮ চারে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস। চার ম্যাচে বরিশালের এটি ছিল তৃতীয় জয়। বিপরীতে কুমিল্লার ৩ ম্যাচে ছিল টানা তৃতীয় হার।
প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে বড় স্কোর হয়েছে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল সাকিবের ব্যাটে করে উইকেটে ১৭৬ রান করে জবাব দিতে নেমে কুমিল্লা যেতে পেরেছিল ৭ উইকেটে ১৬৫ রান পর্যন্ত।
বরিশালের ইনিংস গড়ে উঠে মূলত সাকিবের ব্যাটকে কেন্দ্র করে। তার ৮১ রানের ইনিংসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ইব্রাহীম জাদরানের ২০ বলে ২৭রান। এ ছাড়া ২০ রান করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়।
সাকিব নেমেছিলেন ব্যাটিং পাওয়ার প্লেল শেষে। শুরুতে মেহেদি হাসান মিরাজ ৯ বলে ৬ রান করে আউট হন। এরপর ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে চাতুরঙ্গা সিলভ আউট হওয়ার পর সাকিব নেমে এনামু হক বিজয়ের (২০) সঙ্গে ২.১ ওভারে ২২ রান, ইব্রাহীম জাদরানের (২৭) সঙ্গে ৬.২ ওভারে ৫০ রান যোগ করেন। ইফতেখারের সঙ্গে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩.৫ ওভারে যে ৩৮ রান যোগ হয়, সেখানে ইফতেখারের অবদান ছিল মাত্র ৫ রানের। মাহমুদউল্লাহ এসেই প্রথম বলে আউট হয়ে গেলে করিম জানাতকে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৯ বলে ১৭ রান যোগ করেন। সাকিব তার হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩১ বলে ২ছক্কা ও ৫ চারে।
কুমিল্লার সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন তানভীর ইসলাম। এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে তিনি ৪ ওভারে ৩৩ রানে ৪ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে কুমিল্লার শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল। লিটনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ইনিংসের উদ্বোধন করতে নেমে পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫.৩ ওভারে ৪২ রান এনে দেন। ১১ বরে ১৮ রান করে রিজওয়ান কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার হয়ে ফিরে যাওয়ার পর লিটন দাসও আউট হয়ে যান দলীয় ৫৭ ও ব্যক্তিগত ৩২ রানে রান আউট হয়ে যান। তার ২৬ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি ছক্কা ও১ টি চার। দলকে জেতাতে হলে প্রয়োজন ছিল যে কারও একজনের ইনিংস খেলা। সেটি কুমিল্লার কোনও ব্যাটসম্যানের পক্ষে সম্ভব হয়নি। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ১৫ বলে ২৮ রান করে চাতুরঙ্গা ডি সিলভার শিকার হন। উইন্ডিজের চাদউইক ওয়ালটনও খুব বেশি দূর যেতে পারেননি। ১৬ বলে ১৪ রান করার পর তাকে আউট করেন সাকিব। জাকের আলী এসেও কোনও রান না করে ফিরে গেলে কুমিল্লা বেশ চাপে পড়ে যায়। এ সময় তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ১৩.২ ওভারে ১০০। জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ৪০ বলে ৭৮ রানের। অসম্ভব কঠিন এক টার্গেট। সেই অসম্ভবের পেছনে তখন ছুটার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে তিনি ছুটতে থাকেন। জুটিতে ৫.২ ওভারে ৫২ রান আসার পর তাদের বিচ্ছেদ আসে। মোসাদ্দেক ১৯ বরে ১ ছক্কাও ২ চারে ২৭ রান করে আউট হন করিম জানাতের বলে। খুশদিল শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
বরিশালের হয়ে একটি করে উইকেট নেন সাকিব, করিম জানাত, চাতুরঙ্গা ডি সিলভা, কামরুল ইসলাম, ইফতেখার আহমেদ।
এমপি/এএস
