প্রথমার্ধে সাম্বা নৃত্যের তালে ব্রাজিলের ৪ গোল
গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে ভক্ত সমর্থকদের বারবার সাম্বা নৃত্য করার উপলক্ষ এনে দিয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করা ব্রাজিল শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে নিজেদের রিজার্ভ ব্রেঞ্চ পরীক্ষা করেছিল। সেই রিজার্ভ বেঞ্চেই ক্যামেরুনকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তারপর স্রোতে বিপরীতে গিয়ে একটি গোল হজম করে ম্যাচ হারলেও তাতে দর্শক সমর্থকদের অন্তরে ন্যূনতম কোনো টেনশন বিরাজ করেনি।
কারণ তারা জানতেন নকআউট পর্বে আবার সেরা খেলোয়াড়রা ফিরবেন। ব্রাজিল ফিরবে নিজেদের ছন্দে। আর নেইমার ফিরলেতো কথাই নেই। কোরিয়ার বিপক্ষে পুরো শক্তির ব্রাজিল ফিরে নেইমারকে নিয়ে। দুই ম্যাচ পর নেইমারকে ফিরে পেয়ে ব্রাজিল যেন আরও ছন্দময় হয়ে উঠে। সাম্বা নৃত্যের তালে তালে দর্শকদের বিমোহিত করে রাখে। ছন্দময় কবিতার মতো খেলা উপহার দিয়ে কোরিয়াকে কোনঠাসা করে প্রথমার্ধেই এগিয়ে গিয়েছে ৪-০ গোলে। গোল চারটি আসে ভিনিসিয়াস জুনিয়র, নেইমার, রিচার্লিসন ও লুকাসের পা থেকে।
নকআউট পর্বে অন্য দলগুলো যখন গোলের জন্য হা পিতেশ করছে। সেখানে ব্রাজিল খেলা শুরু হতে না হতেই একটি নয়, দুইটি গোল পেয়ে যায়। সাত মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোলটি ছিল শেষ ষোলতে দ্রুততম। ডান প্রান্ত থেকে রাফিনেহোরপাস থেকে নেইমারের পা ছুঁয়াতে ব্যর্থ হলেও ফাকায় বল পেয়ে যান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। দেখ-শুনে দ্বিতীয় বার দিয়ে তিনি গোল করেন। প্রথম আক্রমণেই ব্রাজিল সফলতার মুখ দেখে। ১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নেইমার গোল করে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে নেন। বক্সের মধ্যে রিচার্লিসনকে ফাউল করলে ব্রাজিল পেনারল্টি পেয়েছিল।
শুরু থেকেই ব্রাজিল চেপে ধরেছিল কোরিয়াকে। একের পর এক আক্রমণ করে কোরিয়াকে কোনঠাসা করে রাখে। সেই চাপে কোরিয়া দুই গোল হজম করার পরপ্রথম আ্ক্রমণে যায় ১৬ মিনিটে। হোয়াং হি চেনের বক্সের উপর থেকে ডান পায়ের তীব্র শট ব্রাজিলের গোলরক্ষক আলিসন পাঞ্চ করে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য ব্রাজিলের সামনে তারা বেশি সময় টেকতে পারেনি। পাল্টা আক্রমণে যায়। আবার ব্যস্ত করে তুলে কোরিয়ার রক্ষণ। সাফল্যও পায় ২৮ মিনিটে। এবার গোলদাতা প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে চলতি আসরের সেরা ও দৃষ্টিনন্দন গোল করা রিচার্লিসন।
এই গোলটিতেও ছিল মুন্সিয়ানা ও দৃষিনন্দন ছাপ। তিনবার মাথার উপর বল রেখে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বল পা দিয়ে রিসিভ করে থিয়াগো সিলভাকে দিয়ে নিজে বক্সের ভেতর ফাঁকায় জায়গা করে নিলে সিলভা তার দিকে বল বাড়িয়ে দেন। রিচার্লিসন সেই বল ধরে বাম পায়ে প্লেসিং শটে চলতি আসরে নিজের তৃতীয় গোল তুলে নেন। ৩৫ মিনিটে ছিল আরেকটি সাম্বা নৃত্য উদযাপনের উপলক্ষ। রিচার্লিসন ও নেইমার মাঝ মাঠ থেকে বল আদান-প্রদান করে নিয়ে বক্সে ডুকে নেইমার বামপ্রান্ত দিয়ে ভিনিসিয়াসকে দিলে তিনি বক্সে ক্রস করে লুকাস পাকুয়েটাকে উদ্দেশ করে। লুকাস ডান পায়ের জোড়ালো শটে গোলের খাতায় নাম লেখান।
৪৫ মিনিটে রাফিনহা গোলের তালিকায় নাম লেখাতে পারতেন। কিন্তু তিনি বাম পা দিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে প্রবেশ করাতে গিয়ে তার হাতে তুলে দেন। প্রথমার্ধের ইনিজুরি টাইমের তৃতীয় মিনিটে রিচার্লিসন বল নিয়ে এককভাবে ডুকে ডান প্রান্ত দিয়ে গোল করার চেষ্টা করলে গেোলরক্ষক কিম সিউওংয়ের পা লেগে প্রতিহত হয়। সেই বল সামনে থাকা নেইমারের কাছে গেলে তিনি হাটু দিয়ে গেোল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বল সাইডবার দিয়ে বাইরে চলে যায়।
এমপি/আরএ/