শঙ্কার দোলাচলে পাকিস্তানের বিপক্ষে লিটনের খেলা
এক দেশ, এক মহাদেশ অস্ট্রেলিয়া। নতুন কারও জন্য সাগরে হাবুডুবু খাওয়ার মতো। প্রয়োজনের তুলনায় লোকজন খুবই কম থাকায় রাস্তাঘাটে চলাচলরত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি দেখা যায় না। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই শুধুমাত্র খাবারের দোকান ছাড়া আর সবকিছুই বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তাঘাটেও অনেকটা সুনসান নীরবতা নেমে আসে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে আ্যডিলেড ওভালে অবশ্য মধ্যরাতেও প্রাণের সঞ্চার থাকে। বিশাল এই দেশটির সর্বত্রই সবুজের সমারোহ। এমন সবুজের মাঝেই বাংলাদেশ দল শুক্রবার (৪ নভেম্বর) গা গরম করে নেয় কারেন্ট রোন্টল ওভাল মাঠে। আ্যডিলেড ওভাল মাঠ থেকে হাঁটা দূরত্ব। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পরদিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকা বাংলাদেশ দল আজ এখানেই গা গরম করে নেয়।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়ায় বৃষ্টি না থাকলে রোদ উঠলে প্রচণ্ড গরম অনুভব হয়। সন্ধ্যার পর আবার কনকনে শীত। বাংলাদেশ দল যখন অনুশীলন করছিল রোদের তাপ আর সবুজের ছায়া মিলে সেখানে এক নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এমন পরিবেশে বাংলাদেশ দল অনুশীলন করছে ভারতের বিপক্ষে একটি জমজমাট লড়াইয়ের তরতাজা স্মৃতি নিয়ে। অনুশীলনের ময়দানে সবাইকেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু একটি মুখ চোখে পড়ছে না। এই মুখটি ছিল কাঙ্ক্ষিত। কারণ তিনি যে ভারতের বিপক্ষে জমজমাট ম্যাচের কারিগর। তিনি হলেন লিটন দাস। ভারতের বিপক্ষে ২৭ বলে ৩ ছক্কা ৭ চারে ৬০ রানের যে নান্দনিক ইনিংস খেলেছেন এতে করে সবার কাছে, এমনকি মিডিয়ার কাছেও তিনি ছিলেন বহুল কাঙ্ক্ষিত।
বাংলাদেশের অনুশীলনে অনেক প্রবাসীরা এসেছিলেন। তারা দলের যে খেলোয়াড়কেই পেয়েছেন তার সঙ্গে ছবি তুলেছেন, অটোগ্রাফ নিয়েছেন আর খুঁজছিলেন লিটন দাসকে। কিন্তু লিটন দাস তো নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লিটন মাঠে আসেননি, হোটেলেই বিশ্রাম নিচ্ছেন। এই বিশ্রাম নেওয়ার কারণ তার হ্যামস্ট্রিং চোট পাওয়া। এই চোট তিনি পেয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই বৃষ্টির পর আবার যখন খেলা শুরু হয়। প্রথম বলেই রান নিতে গিয়ে লিটন পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন। পরেরবার যখন রানআউট হন তখনো তিনি স্বাচ্ছন্দে দৌড়াতে পারেননি। প্রথমবার পড়ে যাওয়ার পর কিছুটা সময় নিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়েছিল।
লিটনের ইনজুরি বাংলাদেশের জন্য শঙ্কার। কারণ এখনো যদির উপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা যে জেগে আছে তার জন্য হারাতে হবে পাকিস্তানকে, হারতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা হারবে কি না সেখানে বাংলাদেশের কোনো হাত নেই। তবে পাকিস্তানকে হারাতে হলে লিটন দাসের মতো ব্যাটসম্যানের প্রয়োজন আছে। সেই ব্যাটসম্যানকেই যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া না যায়, তা বাংলাদেশের জন্য বিরাট চিন্তার কারণই।
তবে দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী সেখানে সবাইকে চিন্তামুক্ত করেন। লিটনের ইনজুরিকে তিনি ইনজুরি হিসেবে দেখছেন না বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, লিটনের এই সমস্যাকে কোনোভাবেই ইনজুরি বলা যাবে না। সে কিছুটা ব্যথা অনুভব করছে। চলতে ফিরতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে যেহেতু হাতে ৩ দিন সময় আছে, তাই তাকে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। আশা করছি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই সে সম্পূর্ণ ফিট হয়ে উঠবে। কাল (শনিবার) পরীক্ষা করার পর আমরা তার ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হব।
এমপি/এসজি