ডট বল করতে গিয়েই মোসাদ্দেকের পাঁচ উইকেট
এক ম্যাচেই ভুরি ভুরি রেকর্ড। এসবের মালিক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। একজন বোলারের চির আরাধ্য থাকে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া। আর তা যদি হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে, তাহলে তো কথাই নেই। মাত্র চার ওভার বোলিং করে পাঁচ উইকেট প্রাপ্তি, মোটেই সহজ নয়। মোসাদ্দেক সেই কাজটি করেছেন।
দলে মোসাদ্দেকের অন্তর্ভুক্তি ব্যাটসম্যান হিসেবে। বোলিং সেটা তো নিয়মিত করেন না। তার কব্জির মোচড়ে দ্বিতীয় ম্যাচ জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা আর প্রথম ম্যাচের মতো উড়তে পারেননি। প্রথম ম্যাচে যেখানে তারা করেছিলেন তিন উইকেটে ২০৫ রান, সেখানে দ্বিতীয় ম্যাচে আট উইকেটে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১৩৫ রান। আর পেছনে সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ছিল মোসাদ্দেকের। চার ওভারে ২০ রান দিয়ে তিনি জিম্বাবুয়ের পতন হওয়া প্রথম পাঁচ উইকেটের সবকটিই পকেটে ভরে নেন। এ প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে তিনি ঢুকে পড়েন বেশ কয়েকটি রেকর্ডে।
মোসাদ্দেকর ২০ রানে পাঁচ উইকেট তার ক্যারিয়ারের সেরা আর যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বোলিং। সাকিবও ২০ রানে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। বাংলাদেশের প্রথম ডান হাতি অফ স্পিনার হিসেবে মোসাদ্দেকের নাম ঢুকে গেছে ইতিহাসের পাতায়। প্রথম ওভারে দুই উইকেট পাওয়া তিনি প্রথম বাংলাদেশি বোলার। আবার প্রথম বলে উইকেট পাওয়ার দিক দিয়ে তিনি চতুর্থ বাংলাদেশি বোলার।
এ যে মোসাদ্দেকের নামের পাশে এত্তসব কীর্তি, তা কিন্তু তিনি ভুলেই ভাবেননি। আর ভাববেনই বা কী করে? যেখানে বোলারদের পক্ষেই পাঁচ উইকেট নেওয়া কঠিন, সেখানে তিনি নিয়মিত বোলার নন। যেখানে ২০ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তিনি কালকের (রবিবার) ম্যাচের আগে মাত্র একটি ম্যাচে চার ওভারের কোটা পূরণ করেছিলেন। তাও খুব বেশি দিন আগে নয়। এ মাসেই উইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে। ৩৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য। সেখানে এক ম্যাচ পরেই বিরল কীর্তি। অথচ নুরুল হাসান সোহান যখন তার হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন, তখন মোসাদ্দেকের পরিকল্পনা ছিল উইকেট প্রাপ্তি নয়, ডট বল করে যাওয়া। আর সেই ডট বল করতে গিয়েই তিনি উইকেট পাওয়ার নৃত্যানন্দে মেতে উঠেন। খেলা শেষে তিনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, আসলে পাঁচ উইকেটের জন্য বোলিং করিনি। আমার পরিকল্পনা ছিল ডট বল করার। ভালো জায়গায় বল করেছি হয়তো সেটার ফল আমি পেয়েছি।’
পাঁচ উইকেট পাওয়া মোসদ্দেক নিজেকে কখনো অকেশনাল বোলার মনে করেন না। সব সময় নিজেকে নিয়মিত বোলারই মনে করেই বোলিং করে থাকেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আগেও এ কথা বলেছি, নিজেকে কখনো অকেশনাল বোলার মনে করি না। নিজেকে মেইন বোলার মনে করেই বোলিং করে থাকি।’
পাঁচ উইকেট পাওয়া মানেই উইকেট বোলারদের স্বর্গ রাজ্য। কিন্তু মোসাদ্দেকের কথায় ছিল তার উল্টো সুর। উইকেটে বোলারদের জন্য বিশেষ কিছু ছিল না। তিনি বলেন, আসলে খেয়াল করলে দেখবেন, উইকেট বোলারদের জন্য ছিল আমি তা বলবো না। যে ভালো উইকেট ছিল। আমার মাথায় একটা জিনিসই কাজ করছিল ক্যাপ্টেন যখন বল দিয়েছিল, কীভাবে রানটা আটকে রাখতে পারি প্রথম থেকে। কারণ আগের দিন আমরা দেখেছি যে এ উইকেটে ২০০ রান হয়েছে। ওই জায়গা থেকে আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম ১৬০-১৭০ রানে মধ্যে যদি রাখতে পারি তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের টিমের জন্য ভালো হবে। তো ওই পরিকল্পনাই ছিল। অন্য কোনো কিছু চেষ্টা করিনি।’
এমপি/এসএন