জিম্বাবুয়েকে বধ করে সিরিজে বাংলাদেশের সমতা
জিম্বাবুয়েতে উড়েছে নতুনের কেতন। যে কেতন উড়ার কথা ছিল প্রথম ম্যাচ, তা উড়েছে পরের দিন দ্বিতীয় ম্যাচে। চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে জিম্বাবুয়ে মুদ্রার উল্টো পিঠও দেখে ফেলল। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে যেখানে মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের পাহাড় গড়েও জিম্বাবুয়ে ম্যাচ জিতেছিল মাত্র ১৭ রানে, সেখানে দ্বিতীয় ম্যাচে তারা হেরেছে কোনো রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই। আট উইকেটে করা ১৩৫ রান বাংলাদেশ হেলে-দুলে জিতেছে সাত উইকেটে। ১৭.২ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ১৩৬ রান। জিম্বাবুয়েকে এমন করুণ হার এঁকে দিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করে। বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে চার ওভার বোলিং করে ২০ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। তার আগে বাংলাদেশের হয়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন ইলিয়াস সানি, মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। ম্যাচ জেতার ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা। সিরিজ নির্ধারণী অলিখিত ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ২ আগস্ট।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন টস জেতার পর ব্যাটিংই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর রানের ফাল্গুধারা তারা ছোটাতে পারেনি। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের স্পিন ভেলকিতে পড়ে তাদের ব্যাটসম্যানরা মুখ থুবড়ে পড়েন। মোসাদ্দেক ইনিংসের সূচনায় বল হাতে নিয়ে টানা চার ওভার বোলিং করে ২০ রান দিয়ে জিম্বাবুয়ের পাঁচ উইকেট নিয়ে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। এরপর আর তারা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সিকান্দার রাজার ৫২ বলে দুই ছক্কা ও চার চারে ৬২ ও রায়ান বার্লি ৩২ রান করলে জিম্বাবুয়ের দলীয় সংগ্রহ শতরান পার হয়। আর অলআউট না হয়ে সংগ্রহ করে ১৩৫ রান। এই দুই ব্যাটসম্যান ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১০.৫ ওভারে ৮০ রান যোগ করেন। মোসাদ্দেক ছাড়া বাকি তিন উইকেটের একটি করে নেন মোস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল।
টার্গেট খুব বেশি নয়, ১৩৬। কিন্তু বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান ঘাটলে এই রানও আতঙ্ক ছড়ায়। এর কারণ ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইন। আবার আগের ম্যাচে ২০৫ রান তাড়া করে ১৮৮ পর্যন্ত পৌঁছানো দেখলে মনে আবার জাগে আত্মবিশ্বাস। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এবার আর আত্মবিশ্বাসে আঘাত করেননি। রাজকীয় ঢংয়ে ২২ গজে বিচরণ করে সহজেই জয় তুলে নেয়। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে রান আসে এক উইকেটে ৫৩। যদিও মুনিম শাহরিয়ার ও এনামুল হক বিজয় নিজেদের ব্যর্থতার পাল্লা ভারী করেছেন ৮ ও ১৬ রান করে আউট হয়ে। তবে তাদের এই ব্যর্থতাকে আছর পড়তে দেননি লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
লিটন দাস মাত্র ৩৩ বলে ৫৬ রান করে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি তিনি তুলে নেন ৩০ বলে। তার ইনিংসে ছিল দুই ছক্কা আর ছয় চার। লিটন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের সঙ্গে ৪.৩ ওভারে ৩৭ ও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ৪.৩ ওভারে ৪১ রান যোগ করেন। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এনামুল আউট হওয়ার পর আফিফ ও নাজমুল জয়ের বাকি কাজ সারেন আট ওভারে প্রয়োজনীয় ৫৫ রান করে। এই ম্যাচে আফিফ প্রমোশন পেয়ে চারে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বলে একটি করে চার ও ছক্কা মেরে ৩০ ও শান্ত পাঁচে নেমে ২১ বলে এক চারে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এমপি/এসজি/