মোসাদ্দেকের প্রথম পাঁচে বাংলাদেশের চতুর্থ
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত সম্বন্ধে যাদের ধারনা আছে তারা জানেন যে তিনি মূলত একজন ব্যাটসম্যান। আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে তার প্রবেশ ঘটে ব্যাটসম্যান তকমা নিয়েই। বল হাতে নিয়ে ঘুরাতেও পারেন। তবে তা নিয়মিত নয়। তিন ফরম্যাটে খেললেও টেস্ট ও ওয়ানডেতে হাত ঘুরানোর সংখ্যা খুবই কম।
তবে টি-টোয়েন্টিতে ২০ ম্যাচের ক্যারিয়ারের ১৬ ম্যাচেই বোলিং করেছেন। যেখানে চার ওভারের কোাট পূরণ করা ম্যাচের সংখ্যা মাত্র দুইটি। প্রথম চার ওভার বোলিং করে উইন্ডিজ সফরে তৃতীয় ম্যাচে। ৩৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য। এরপর আজ। আর সেখানেই বাজিমাত। টানা চার ওভার বোলিং করে ২০ রান দিয়ে নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের ইনিংসের পতন হওয়া প্রথম পাঁচ উইকেটের সব কটিই। তার আগে বাংলাদেশের হয়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন ইলিয়াস সানি, সাকিব আর হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মোসাদ্দেক পাঁচ উইকেট নিলেও এর মাঝে তিনি নিজে গড়েছেন বেশ কয়েকটি কীর্তি। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। আগের সেরা বোলিং ছিল ২১ রানে দুই উইকেট। ডান হাতি স্পিনারের মাঝে তিনিই প্রথম বাংলাদেশ বোলার। আগের তিনজনই বাঁহাতি।
ইলিয়াস সানি ও সাকিব আল হাসান বাঁহাতি স্পিনার, মোস্তাফিজ বাঁহাতি পেসার। মোসদ্দেকের বোলিং আবার দ্বিতীয় সেরা। সবার উপরে আছেন বাংলরাদেশের হয়ে প্রথম পাঁচ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি। ২০১২ সালে বেলফাস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি চার ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। এরপর ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে মোস্তাফিজ নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। ২০১৮ সালে মিরপুরে উইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব চার ওভারে পাঁচ উইকেট নিতে খরচ করেছিলেন ২০ রান। এবার মোসাদ্দেকেরও তাই।
বাংলাদেশের ইনিংসে বল হাতে স্পিনারদের ইনিংস সূচনা করার অনেক নজির আছে। তারা সবাই প্রতিষ্ঠিত বোলার। দলে তাদের জায়গাও বোলার হিসেবে। সেখানে আজ মোসাদ্দেককে দিয়ে বোলিং সূচনা করা ছিল নতুন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের অনেকটা জুয়া খেলার মতো। সেই জুয়াতে বেশ ভালোভাবেই জিতেছেন অধিনায়ক। চার ওভারের প্রতি ওভারেই তিনি একটি করে উইকেট নেন। প্রথম ওভারে ছিল দুইটি, পরের তিন ওভারে একটি করে।
নাসুম একাদশে না থাকাতে নুরুল হাসান সোহান বল তুলে দিয়েছিলেন মোসােেদ্দকের হতে। ম্যাচটি ছিল সিরিজে বাঁচানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার। সবাইকে অবাক করে দিয়ে মোসাদ্দেক প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন রেজিস চাকাভাকে উইকেটের পেছনে নুুরল হাসান সোহানের ক্যাচে পরিণত করে। একই ওভারের শেষ বলে তিনি আবারও শিকার ধরেন ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে দিয়ে। কাভারে তার ক্যাচ ধরেন শেখ মেহেদি হাসান। পরের ওভারে তার শিকার স্বযং জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে তিনি প্রথম স্লিপে লিটনের হাতে ধরা পড়েন।
জিম্বাবুয়ের আরেক কান্ডারি অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামসকে মোসাদ্দেক নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে চতুর্থ শিকার ধরেন। তার পঞ্চম শিকার ছিল চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে। মিল্টন সুম্বা সুইপ করতে গিয়ে হাসান মাহমুদ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে এসে বল তালু বন্দি করেন। জিম্বাবুয়ের রান তখন সাত ওভারে পাঁচ উইকেটে ৩১।
বাংলাদেশের সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে সৈকতে ভর করে দারণভাবে ড্রাইভিং আসনে বসে পড়েছে বাংলাদেশ।
এমপি/এমএমএ/