মাইনাস ৪৪৯ নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ!
মাইনাস ৪৪৯; না এটাকে শেয়ার বাজারের অস্বাভাবিক দরপতন বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের পঞ্চপান্ডবের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সংখ্যা। ‘পঞ্চপাণ্ডব’ উপাধি ধারণ করার পর শনিবারই (৩০ জুলাই) প্রথম বালাদেশ তাদের ছাড়া কোনো ম্যাচ খেলতে নামবে। তার না খেলাতে এটি মাইনাস হয়ে গেছে।
মাশরাফি ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর চার পান্ডবকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাঝে প্রায় এক বছরের মতো তামিম ইকবাল ইনজুরি ও ছুটিতে থেকে খেলেননি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
এই অবস্থায় থেকেই না ফিরে সম্প্রতি তামিম ইকবালও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন। রইল বাকি তিন পাণ্ডব। তাদের একজন সাকিব আগে থেকেই ছুটি নিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন খেলবেন না জিম্বাবুয়ে সফরে। বাকি দুইজনের একজন ছিলেন মাহমুদউল্লাহ অধিনায়ক। তাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে দলে না রেখে সঙ্গে মুশফিককেও পাঠানো হয়েছে বিশ্রামে। এর ফলে বাংলাদেশ দল হয়ে পড়ে পঞ্চপান্ডব শূন্য। এই পাঁচজেনর মাঝে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ ১১৮টি। এরপর মুশফিকুর রহিম ১০০টি। এ ছাড়া সাকিব ৯৯টি, তামিম ইকবাল ৭৪টি ও মাশরাফি ৫৪টি। তাই সেখানে তৈরি হয়েছে এক বিশাল শূন্যতা। এদের বিহীন বর্তমান দলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ক্রিকটোর হলেন মোস্তাফিজ ৬৬টি। এরপর লিটন দাস ৫১টি, আফিফ হোসেন ধ্রুব ৪৪টি, শেখ মেহেদি হাসান ৩৪টি, নতুন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ৩৩টি। বাকিদের আরও কম।
এভাবে সিনিয়র শূন্য করে ফেলার কারণ তরুণদের একটু বাজিয়ে দেখা। আর এ জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলে। বিশ্ব ক্রিকেটে এক সময় জিম্বাবুয়ে বলে-কয়ে বাংলাদেশকে হারালেও এখন হয়েছে তার উল্টোটা। বর্তমানে বাংলাদেশ বলে-কয়ে হারায় জিম্বাবুয়েকে। যে কারণে বিসিবির এই বাজির ঘোড়া। এই পরীক্ষায় বাংলাদেশ পাশ করে কি না তা শুর হবে আজ হারারেতে? এরপর খেলবে আরও দুইটি ম্যাচ ৩১ জুলাইও ২ আগস্ট। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহন সিনিয়ররা না থাকলেও দলকে তিনি অনভিজ্ঞ বলতে নারাজ। তাইতো তিনি জানিয়েছেন জিম্বাবুয়েতে তরুণদের নিয়ে শিখতে যাননি, জিততে গিয়েছেন। খেলবেন নিজেদের ‘ব্র্যান্ড’ ক্রিকেট।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ভগ্ন দশা হলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবার বেশ সরস বাংলাদেরে পরিসংখ্যান। ১৬ বারের মোকাবিলাতে জয় ১১টিতে। আবার সর্বশেষ ১০ ম্যাচের সাতটিতেই জয় বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের অবস্থা এতটাই মলিন যে তাদের আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে হচ্ছে বাছাইপর্ব পেরিয়ে। আবার র্যাঙ্কিংয়ে অনেক পেছনে ১৬।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে কথা বললেও আহলাদে আটখানা হওয়ার কিছু নেই। কারণ পূর্ণ শক্তির বাংলাদেশ দল খেলেও গত বছর সফরে এসে একটি ম্যাচ হারতে হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচ ২৩ রানে জিতে জিম্বাবুয়ে সিরিজে সমতা এনেছিল। শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ পাঁচ উইকেটে জিতে সিরিজ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। বিষয়টি বেশ ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পেরেছেন নতুন অধিনায়ক। যে কারণে তিনি মনে করছেন সিরিজ ‘চ্যালেঞ্জিং’ হবে। তবে সে চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়ার ইচ্ছে নুরুল হাসান সোহানের।
আজকের ম্যাচে সেরা একাদশে অনেক পরিবর্তস আর ওলট-পালট দেখা যাবে। ওপেনিংয়ে জুটিতে আসছে আবার পরিবর্তন। যদি দলে একমাত্র নতুন মুখ পারভেজ হোসেন ইমন খেলেন,তা’হলে বাইরে চলে যেতে হবে মুনিম শাহরিয়ারকে। উইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে তিনি জায়গা হারিয়েছিলেন। এই দুই ম্যাচে উদ্বোধন করেছিলেন লিটন দাস ও এনামুল হক বিজয়। কিন্তু জুটিতে তারা সফল হতে পারেননি। তিন-চার-পাঁচে ব্যাটিং করতেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক। আজ সেখানে দেখা যেতে পারে নাজমুল-এনামুল-আফিফকে। এ পর্যন্ত টিক থাকলে পরে আসবেন নুরুল-মোসাদ্দেক-শেখ মেহেদি। সেরা একাদশে বাকি তিন ক্রিকেটার হতে পারেন মোস্তাফিজ-শরিফুল-নাসুম।
এমপি/এমএমএ/