নিয়ম রক্ষার ম্যাচেও উত্তেজনা আবাহনীকে হারলো বসুন্ধরা
এবারের প্রিমিয়ার বিভাগ ফুটবল লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ নিশ্চিত হয়ে গেছে ২০তম রাউন্ডেই। বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন, আবাহনী লিমিটেড রানার্সআপ। যে কারণে লিগের বাকি খেলাগুলো পানসে হয়ে পড়ে। যদিও রেলিগেশন লিগ ছিল এর বাইরে। বাকি দুই রাউন্ডের খেলামাঝে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের পরস্পরের বিপক্ষে খেলা বাকি ছিল। কিন্তু তা ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু এমন আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে উত্তেজনা পারদ ছড়াল। দুই দলের খেলোয়াড়রা পরস্পরের বিপক্ষে বিবাদে ঝড়ালেন। ধাক্কাধাক্কি হলো, দেখানো হলো হলুদ কার্ড। আর এতেই বুঝা যায় নিয়ম রক্ষার ম্যাচ হলেও দুই দলের উত্তেজনার কমতি ছিল না। এমন ম্যাচে চ্যাম্পিয়নরা ৩-২ গোলে হারিয়েছে রানার্সআপদের। লিগে প্রথম পর্বে দুই দলের খেলা ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল।
এক সময় ঘরোয়া ফুটবলে আবাহনী-মোাহমেডানের ম্যাচে উত্তেজনার পারদ ছড়াত। তা যে কোন পর্যায়ের ম্যাচই হোক। এখন তা নেই। বর্তমানে উত্তেজনা বিরাজ করে আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচে। আজকের ম্যাচে দুই দল সেই প্রমাণই রেখে গেলো।
বসুন্ধরা কিংস আগের ম্যাচেই মুন্সিগঞ্জে সাইফ স্পোটিং ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মেতে উঠেছিল। কিন্তু তারপরও কোথায় যেন শূন্যতা ছিল। আর তা ছিল ঢাকার বাইরে ম্যাচ। এবার নিজেদের আঙ্গিণায় রানার্সআপদের ৩-২ গোলে হারিয়ে নতুন করে উৎসবে মেতে উঠেছিল। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা লাল বর্ণে পরিণত হয়েছিল। বসুন্ধরার হয়ে রবসন রবিনিয়োর দুইটি ও নুহা মারোং এবং আবাহনীর হয়ে রকিব ও দোরিয়েলতন গোল করেন।
পাঁচ গোলের ম্যাচে প্রথম উত্তেজনা ছড়ায় ১৫ মিনিটে। বসুন্ধরার ফিগেইরাকে আবাহনীর মিলাদ শেষ সুলেমানি কনু্ দিয়ে গুতা দিয়ে ফেলে দিলে ফিগেইরা উঠে গিয়ে চড়ায় জন সুলেমানির উপরে। এর মাঝে আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল ইসলাম সোহলে নিজ সীমানা ছেড়ে এসে মিগেলকে ধাক্কা দেন। এরপর শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। পরে অন্যদের হস্তক্ষেপে সবাই শান্ত হওয়ার পর রেফারি ফিগেইরা ও শহীদুলকে হলুদ কার্ড দেখান। এর পাঁচ মিনিট পর ফিগেইরার ফ্রি কিক থেকে বক্সের ভেতর অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়ে নুহা মারোংয়ের গোল করে এগিয়ে নেন যায় বসুন্ধরাকে। ৪০ মিনিটে নুহা মারোং নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন গোলরক্ষক সোহেলকে একা পেয়েও কাজে লাগাতে না পারাতে। নিশ্চিত গোল হজম করা থেকে বেঁচে গিয়ে আবাহনী গোল পরিশোধ করে স্বস্তিতে বিরতিতে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে দোরিয়েলতনের নিখুঁত পাসকে গোলে পরিণত করেন রকিব।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পর আবাহনী একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করতে থাকে। গোলের দেখা আর পায়নি। কিন্তু গোলের দেখা পায় বসুন্ধরা। ৭১ মিনিটে রবসন রবিনিয়ো কুনাকুনি শটে গোল করে দলকে আবার এগিয়ে নেন ২-১ গোলে। ৮২ মিনিটে দোরিয়েলতনের হেড বারে লেগে ফিরে আসলে আবাহনী আবার গোল বঞ্চিত হয়। এরই মাঝে খেলা গড়ায় যোগ অতিরিক্ত সময়ে। প্রথম মিনিটেই রবিসন নিজের দ্বিতীয় গোল করে দলকে ৩-১ গোলে এগিয়ে নেন। তিন মিনিট পর দোরিযেলতন পেনাল্টি থেকে আাবহনীর হয়ে ব্যবধান কমান ৩-২। যদি তার নেয়া শট প্রথমে আনিসুর রহমান জিকো ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় প্রচেষ্ঠায় দোরিয়েলতন গোল করেন।
এই ম্যাচ জিতে বসুন্ধরা কিংস রানার্সআপ আবাহনীর সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান আরো বাড়িয়ে নিলো। ২১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৫৪। আবাহনীর পয়েন্ট ৪৪। দুই দলের খেলা বাকি আছে একটি করে। বসুন্ধরা খেলবে শেখ জামালের বিপক্ষে মুন্সিগঞ্জে, আবাহনী খেলবে গোপালগঞ্জে উত্তরা বারিধারার বিপক্ষে।
এমপি/