লিটনের দৃষ্টিতে সমস্যা পাওয়ার হিটারের
মোট ৩২৩ রানের ইনিংসে ছক্কা ১৬টি। বাংলাদেশের ইনিংসে পাঁচটি। সেখানে উইন্ডিজের ওপেনার কাইল মায়ার্স একাই মেরেছেন পাঁচটি। পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন অধিনায়ক নিকোলাস পুরানও।
অপর ছক্কা এসেছে ব্রান্ডন কিংয়ের ব্যাট থেকে। এই ছক্কা হাঁকানোর পরিসংখ্যানেই বলে দেয় পাওয়ার হিটারের কী পরিমাণ অভাব বাংলাদেশ দলে। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। এই ঘাটতি মেনে নিয়েই ২০০৭ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তরি বয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ব্যর্থতার ভারে তরি এখন ডুবন্ত প্রায়। উদ্ধারে প্রয়োজন পাওয়ার হিটারের।
কিন্তু তার ঘাটতিতো পূরণ হয়নি। তাইতো গায়ানাতে এসেছে আরকেটি হার। বার বাংলাদেশ হেরেছে ৫ উইকেটে ১৬৩ রান করার পরও ৫ উইকেটে। উইন্ডিজের জয় সূচক রান এসেছে পাওয়ার হিট থেকে ছক্কায়।
হারের পর পাওয়ার হিট নিয়ে লিটন দাস বলেন, ‘তারা জেনেটিক্যালি অনেক পাওয়ারফুল, যেটা আমি না বা আমাদের টিমের কেউই না। তারা চাইলেই বড গ্রাউন্ডসেও ছয় মেরে দিতে পারে যেটাতে আমি বা আমাদের দলের কেউই সক্ষম নয়। আমরা সবসময় চেষ্টা করি চার মারার জন্য। আপনারা দেখবেন, আমাদের কিন্তু চারই বেশি হয়। ওরা ছয় বেশি মারে। এই পার্থক্যটা সবসময় থাকে।'
লিটনের কথার সত্যটা মেলে চারের পরিসংখ্যানেও। ছক্কায় উইন্ডিয়ানরা এগিয়ে থাকলেও চার মারার ক্ষেত্রে এগিয়ে আবার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল ১১টি, উইন্ডিজের ইনিংসে ৯টি।
১৬৩ রান করেও কোনো রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ৫ উইকেটে হার মেনে যাওয়াতে লিটন দাস মনে করেন বোলিংটা ভালো হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আজকের ম্যাচে বোলারদের এক্সিকিউশনে একটু সমস্যা ছিল। সব বোলার নিজেদের জায়গায় ঠিকঠাক বল করতে পারেনি। পুরান এবং মায়ার্সকে ক্রেডিট দিতে হবে, ওরা ভালো ব্যাটিং করেছে। অনেক ভালো ভালো বলেও ওরা মেরেছে। আমার মনে হয় এই জিনিসটা কাজ করেছে বোলারদের মাথায় যে একটু ১৯-২০ হলেই মেরে দিতে পারে উইন্ডিজ ব্যাটারা।'
লিটন নিজেদের ব্যাটিংয়েরও সমালোচনা করেছেন। তারা যে ভালো ব্যাটিং করতে পারেননি।
তিনি বলেন, ‘আমরা খুব একটা ভালো ব্যাটিং করিনি। প্রথম ম্যাচেও না, দ্বিতীয় ম্যাচেও না। সাকিব ভাই ছাড়া। আমরা যদি প্র্রথম থেকে যেমন আমি, বিজয় ভাই বা মুনিম যেদিন খেলেছে আমরা যদি আমাদের রোলটা পালন করতে পারতাম তাহলে হয়তো পেছনের দিকের ব্যাটাররা মন খুলে খেলতে পারত। আমার মনে হয় আমাদের ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য সব ঠিকঠাক হয়নি।'
ব্যাটিংয়ের এই সমস্যা অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে ভুগাবে বলে মনে করেন লিটন দাস। তিনি বলেন, ‘ভালো দলগুলো থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকব। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে। আমাদের অনেক কাজ করার আছে। আমরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলতে পারি না। অনেকে টি-টোয়েন্টিকে স্কিল, টেকনিক-ট্যাকটিকসের খেলা বললেও আমার কাছে মনে হয় পাওয়ার হিটিংটা খুব দরকার পড়ে। এই জিনিসটাতে আমরা অনেক পিছিয়ে।'
তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়ায় খেলব, সেখানে মাঠ অনেক বড় থাকবে। এই জিনিসটা আমাদের অনেক ভোগাবে। আমরা যত পারব অনুশীলন করব, ম্যাচ খেলব, এই জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে পারি, আমরা ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব বিশ্বকাপে।’
এমপি/এমএমএ/