হারের মাঝেও সাকিবের আরেকটি বিশ্বরেকর্ড
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ তলানিরে দিকে থাকতে পারে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধুকতে পারে। কিন্তু এর মাঝে ব্যতিক্রম সাকিব আল হাসান। ব্যক্তি হিসেবে তিনি থাকবেন যেন শির উঁচু করে সবার উপরে। অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে নাম্বার ওয়ান ছিলেন অনেক দিন। এই অর্জন ছিল তার তিন ফরম্যাটেই। এ ছাড়াও আছে আরো বেশ কয়েকটি রেকর্ডের মালা। সেই রেকর্ডের মালায় নতুন করে যোগ হয়েছে নতুন আরেকটি ফুল। সেই ফুলের নাম হলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ‘ডাবল’ অর্জন। সাকিব ১০০ উইকেট নিয়েছিলেন আগেই। রবিবার (৩ জুলাই) ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্ক স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংস খেলার পথে এই বিশ্ব রেকর্ড গড়েন সাকিব।
দল হিসেবে বাংলাদেশ যতোই নিচের দিকে থাকুক, মাঠের পারফরম্যান্স ভালো না হোক কিন্তু সাকিব নিজ গুনে থাকেন অনন্য। ২ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ক্ষেত্রে সাকিব শুধু বিশ্বরেকর্ড গড়েননি ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন সবার আগে। যেহেতু সাকিবই প্রথম তাই তার ম্যাচ খেলার সংখ্যাটাও রেকর্ডের পাতায় লেখা হয়ে থাকবে। নতুন রেকর্ড গড়তে তিনি ম্যাচ খেলেছেন ৯৮টি। তার বর্তমান রান ২০০৫, উইকেট ১২০টি।
সাকিবের নতুন অর্জনে তার আশপাশেও কেউ নেই। খুবই কাছে যিনি আছেন তিনি হলেন আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী। তার রান ১৬২৮, উইকেট ৭৬টি। সাকিবকে ছুঁয়া বা অতিক্রম করা অনেক দূরের রাস্তা, ডাবল অর্জন করতেই মোহাম্মদ নবীকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
সাকিব রবিবার নেমেছিলেন ৬৩ রান কম নিয়ে। তাকে ব্যাট করতে নামতে হয়েছে বলা যায় ইনিংসের উদ্বোধন করতেই। কারণ দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই লিটন দাস আউট হয়ে গেলে সাকিব উইকেটে এসেছিলেন। পরে আর তাকে আউট করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তার এই ইনিংস দলে হারের ব্যবধান কমিয়ে আনতে শুধুই ভূমিকা রাখে। জয়ের ক্ষেত্র অবশ্য তৈরি করতে পারেনি। আর পারবে কী করে? ৩ ওভারেই যদি ৩ উইকেট চলে যায়, তাহলে ১৯৪ রান তাড়া করা কী আর সম্ভব? তাইতো সাকিবও বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ব্যাটিং ধ্বস ঠেকাতে মনযোগী হয়ে পড়েন। এতে করে তার ইনিংস হয়ে পড়ে মন্থর। যে কারণে ক্যারিয়ারের ১০ম ফিফটি এসেছে মন্থর গতিতে সবচেয়ে বেশি ৪৫ বল খেলে। অবশ্য হাফ সেঞ্চুরি করার পর তিনি কিছুটা আক্রমণাত্বক হন। এ সময় তিনি পরে যে ১৮ রান যোগ করেন সেখানে বল খেলেন সাতটি। এই ৭ বলে ১৮ রান করার পথেই তিনি ম্যাককয়কে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়েং বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক বনে যান। অবশ্য ম্যাককয়ের আগের বলেই সাকিব ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিন্তু মিড উইকেটে তা তালুবন্দি করতে পারেননি ওয়ালশ জুনিয়র। জীবন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাকিব বোনাস হিসেবে ৪ রানও পেয়ে যান। তিনি পৌঁছে যান ১৯৯৮ রানে। পরের বলে আসে সেই ছ্ক্কা। পৌছে যান ল্যান্ড মার্কে।
সাকিব মানেই যেন রেকর্ড আর মাইলফলক স্পর্শ করা। এই ম্যাচে তিনি যে শুধু ‘ডাবল অর্জন করেছেন তা শুধুমাত্র নয়, তার ২ হাজার রান ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে। তার আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই বছর মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে মাহমুদউল্লাহ ২ হাজার রান করতে ম্যাচ খেলেছিলেন ১১৫টি। সেখানে সাকিবের ম্যাচ খেলার সংখ্যা ১৭টি কম।
মাহমুদউল্লাহর বর্তমান রান ২০২১। সাকিবের চেয়ে মাত্র ১৬ রান বেশি। যেভাবে ব্যাট হাতে চলতি সিরিজে ফর্মে আছেন সাকিব। তাতে করে পরের ম্যাচেই মাহমুদউল্লাহকে টপকে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এমপি/এসআইএইচ