ডমিঙ্গোর কাঠগড়ায় ব্যাটসম্যানরা, প্রশংসায় বোলাররা
বেশ কিছুদিন আগে বিদেশি কোচিং স্টাফদের সঙ্গে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বৈঠক করে এসে জানিয়েছিলেন কোচিং স্টাফরা তাকে বলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টানা ১০ দিন খেলার মন-মানিসকতা নেই। তাদের এ কথা বলার পর দা ফুটে উঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে। যেখানে ছিল ব্যাটিং ব্যর্থতার মহামরি। ফলাফল দুই টেস্টেই বাজেভাবে হার। এবার উইন্ডিজেও একই পরিণতির দিকে হাঁটছেন টাইগাররা। আজ চতুর্থ দিন প্রথম সেশনেই খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কারণ স্বাগতিকদের জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৩৫ রানের। হাতে আছে সাত সাতটি উইকেট। খেলা এভাবে চতুর্থ দিনই শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা প্রথম ইনিংসে ১০৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানে অলআউট হয়ে।
দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এভাবে ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিক ব্যর্থতাকে দেখছেন আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হিসেবে। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের বড় কিছু খেলোয়াড় যেমন শান্ত, মুমিনুলসহ বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন। তাদের আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে। ক্রিকেট খেলায় আত্মবিশ্বাস বড় একটা বিষয়। যা আমাদের ব্যাটসম্যানদের মাঝে এ মুহূর্তে নেই।’
এভাবে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ডমিঙ্গো দেখছেন ব্যাটসম্যানদের বল সিলেকশনে দুর্বলতা। বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান সফট ডিসমিসাল হয়েছেন বলে জানান তিনি। ডমিঙ্গো বলেন, ‘দুই ইনিংসেই আমাদের অনেকগুলো সফট ডিসমিসাল হয়েছে। অনেকগুলো ভুল সিদ্ধান্তও ছিল। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হয়েছি। এই রান আরও বেশি হতে পারতো। দ্বিতীয় ইনিংসে করেছি ২৪৫ রান। এটাও বেশি হতে পারতো। মোট কথা ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য এইসব সফট ডিসমিসালই দায়ী।’
কিন্তু এভাবে তো আর চলতে পারে না। ব্যর্থতার জাল ছিন্ন করে বের হয়ে আসতে হবে। ডমিঙ্গো বলেন, ‘ব্যাটসম্যানদের এই ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এজন্য মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। এখানে টেকনিক্যাল পরিবর্তনের সুযোগ নেই। সবাই ভালো খেলোয়াড়। তারা আগে রান পেয়েছে। এটা আমরা দেখেছি। এখন আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। সব ধরনের সমালোচনা মাথা থেকে দূরে সরিয়ে রেখে খেলার দিকে নজর দিতে হবে।’
ব্যাটসম্যানদের সমালোচনা যেমন ডমিঙ্গো করেছেন, তেমনি প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বোলারদের। তিনি বলেন, ‘উভয় ইনিংসেই বোলাররা ভালো করেছেন। তাদের বোলিংয়ে আমি গর্বিত। প্রথম ইনিংসে আমার দেখা সেরা বোলিং করেছে তারা। কারণ এই উইকেটে তাদের ২৬৫ রানে আটকে রাখা অনেক বড় ব্যাপার।’
উইন্ডিজকে মাত্র ৮৪ রানের টার্গেট দিয়ে বাংলাদেশ তাদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল শুরুতেই। মাত্র ৯ রানে তুলে নিয়েছিল ৩ উইকেট। আর এই কাজটি এককভাবে করেছিলেন পেসার খালেদ। ডমিঙ্গো আরও উন্নতি চান জানিয়ে বলেন, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো বল করেছে। তিনটা উইকেট পেয়েছে। তবে তার উন্নতির আরও অনেক জায়গা আছে। এমনও হতে পারে মাঝে মাঝে ভালো বল করেও কোনো উইকটে পাবে না। আবার অনেক সময় খুব ভালো না করেও উইকেট পেয়ে যাবে। এটাই ক্রিকেট।’
দেড় বছর পর আবার সাদা পোশাকে ফিরে এসেছেন মোস্তাফিজ। উইকেট সেভাবে না পেলেও বোলিং করেছেন ভালো। তাকে নিয়ে ডমিঙ্গো বলেন, ‘মুস্তাফিজ ভালো বোলিং করেছে। তার কাছে আরও কিছু চাই। তাকে একটু গতি বাড়াতে হবে। যদিও সে বোলিং করেনি খুব বেশি, তবে সে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। সুইং ছিল ভালো। সে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। আরও খেলতে হবে। কিন্তু তাকে দিয়ে বেশি বোলিং করানো যাবে না। খুব সাবধানে খেলাতে হবে। সাদা পোশাকে সে আমাদের এখন গুরুত্বপূর্ণ বোলার।’
এমপি/এসজি/