বাংলার আকাশে হারের পূর্বাভাস
না হলো না। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা তাদের ব্যর্থতার বলয় ছিন্ন করে বের হয়ে আসতে পারেননি। এই না পারার কারণে অ্যান্টিগা টেস্টের মেয়াদ পঞ্চম দিন গাড়ানোতো অনেক পরের কথা, তৃতীয় দিনই পার হওয়া নিয়ে আছে রাজ্যের শঙ্কা। কারণ তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। যোগ করেছে ৬৫ রান। দলের রান ছয় উইকেটে ১১৫। ইনিংস হার এড়াতে তাদের করতে হবে এখনো ৪৭ রান। ক্রিজে আছেন অধিনায়ক সাকিব ৫ ও নুরুল হাসান ২ রানে। দিনের খেলার এখনো দুই সেশন বাকি।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও উইন্ডিজের পেসাররা উইকেট নেয়ার প্রতিযোগিতায় শামিল হয়েছেন। ইনিংসে আগের দিন আলজারি জোফরা আক্রমণ করে বাংলাদেশের দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। আজ শনিবার পতন হওয়া ৪ উইকেটের মাঝে তিনি কোনো উইকেট পাননি। কেমার রোচ ও কাইল মায়ার্স দুইটি করে ভাগাভাগি করে নেন। যে কারণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মাঝে একমাত্র মাহমুদুল হাসান জয় ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। মাহমুদুল ১৫৩ বল খেলে ৪২ রান করেন। নাজমুল ও লিটন ১৭ রান করে আউট হন। আগের দিন তামিম ইকবাল ২২ রান করেছিলেন।
নাজমুল হোসেন শান্ত (১৭):
আগের দিন ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন নাজমুল। মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে বোঝাপড়াও ভালো হচ্ছিল। আজ দিনের শুরু থেকে দুজনেই খেলছিলেন সাবধানী হয়ে। খেলছিলেন বল ছেড়ে। কিন্তু কাইল মায়ার্স এসে সব ওলট-পালট করে দেন। তার এক্সটা বাউন্সের একটি বল খেলতে গিয়ে ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে না পেরে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাম্পবেলের হাতে ধরা পড়েন।শেষ হয় তার ৪৫ বলে ১৭ রানের ইনিংসের। মাহমুদুলের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তিনি যোগ করেন ২৯ রান।
মুমিনুল (৪):
ব্যাটিং ব্যর্থতার খরা কাটাতে মুমিনুল হক নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও তিনি নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন না। ব্যর্থতার পাল্লা ক্রমশই ভারি হচ্ছে। আজ তিনি আউট হন মাত্র ৪ রান করে। স্থায়ীত্ব ছিল ১২ বলের। কাইল মায়ার্সের বল খেলতে গিয়ে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন। বাঁচার জন্য রিভিউ নেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথম ইনিংসে তিনি কোনো রান করতে পারেননি। তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে তিনি করেছিলেন ৪ রান। এই নিয়ে টানা ৯ ইনিংসে তিনি দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। ১১ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
লিটন (১৭):
মাহমুদুল খেলছিলেন নিজের মতো করে। সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান লিটন দাস আসাতে আশার পালে হাওয়া লেগেছিল যদি এবার কিছু হয়। কিন্তু খুব বেশি দূর যাওয়া সম্ভব হয়নি লিটনের। জুটিতে ২৫ রান আসার পর তিনি ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা শুরু করেন কেমার রোচের বলে প্রথম স্লিপে মায়ার্সের হাতে ধরা পড়ে। লিটনের বিদায় বাংলাদেশ দলের জন্য ছিল বড় আঘাত। দলের রান তখন ৫ উইকেটে ১০০।
মাহমুদুল ( ৪৩):
লিটনের বিদায়ে যতোটা ধাক্কা ছিল বাংলাদেশের, তার চেয়ে বড় ধাক্কা খায় মাহমুুদুল হাসানের বিদায়ে। লিটন আউট হওয়ার ৯ রান পর তিনিও ফিরে যান ৪৩ রানে। কেমার রোচের ব্যাক অব লেন্থের আউটসাইড অফের বল খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে দি সিলভার হাতে ধরা পড়েন। তিনি বল খেলেন ১৫৩টি। লাঞ্চের আগে মাহমুদুলের বিদায় বাংলাদেশের প্রতিরোধের দেয়াল ভেঙ্গে হারের পানি ঢুকতে শুরু করে। সেই পানি ঢুকা বন্ধ করার চেষ্টা করবেন অধিনায়ক সাকিব ও নুরুল হাসান। তারা কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবেন, সেটাই দেখার বিষয় হবে লাঞ্চের পর।
এমপি/এসআইএইচ