বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টেস্টের টুকিটাকি
বাংলাদেশ-টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে ২২ বছর। এই সময়ের মাঝে খুব বেশি টেস্ট খেলেছে তা কিন্তু নয়। ঢাকা টেস্টের আগে ঘরে-বাইরের মিলে সাকুল্যে খেলেছে ১৩১টি। কিন্তু এরই মাঝে বাংলার ক্রিকটে প্রেমিরা টেস্ট ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সাদা পোশাকের খেলায় দর্শক হয় না বললেই চলে। চট্টগ্রাম টেস্টে দর্শক খুঁজতে অনুবীক্ষণ যন্ত্র লেগেছে। তবে সে তুলনায় ঢাকা টেস্টে কিছু সংখ্যক দর্শক উপস্থিতি ছিল। তবে তারও কারণ আছে। বিসিবি ছাত্রদের বিনা টিকিটে খেলা দেখার ব্যবস্থা রেখেছিল। যে কারণে মিরপুর স্টেডিয়ামের আশে-পাশের কয়েকটি স্কুলের ছাত্ররা মাঠে বসে খেলা দেখতে চলে আসেন। তাদের করতালি আর জয়োধ্বনিতে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন ছিল মুখরিত। তবে এই সব ছাত্রদের বাদ দিলে সাধারণ দর্শক বা টিকিট কাটা দর্শকের উপস্থিতি ছিল খুবই নগন্য।
জয়ের চতুর্থ শূন্য
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিম পাঁচ হাজার রান করার পর দিন শেষে ড্রেসিং রুমে কেক কেটে তা উদযাপন করা হয়। কেকে কাটার পর মুশফিক প্রথমে মুখে তুলেদেন মাহমুদুল হাসান জয়কে। এই তুলে দেওয়ার পেছনে একটি কারণও ছিল মুশফিকের। তিনি মনে করেন আগামীতে দলের সবচেয়ে কনিষ্ট ক্রিকেটার এই জয়ই হবেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কান্ডারি। এটা শুধু মুশফিকের একার ভাবনা নয়। সবাই মনে করেন। মাত্র পাঁচ টেস্টের ক্যারিয়ারে তিনি একটি সেঞ্চুুর আর দুইটি হাফ সেঞ্চুরি ঝুঁলিতে ভরে নিয়েছেন। পাশাপাশি মুদ্রার অপর পিঠও দেখা শুরু করেছেন তিনি। পাঁচ টেস্টের আট ইনিংসে চারবার শূন্য রানে আউট হওয়ার নোনা স্বাদও পেয়ে গেছেন। যে কোনো আছে আবার উভয় ইনিংসেও শূন্য রানে আউট হওয়ার নজির। জয়ের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে শূন্য রানে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবান টেস্টের উভয় ইনিংয়সে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। যেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল গোল্ডেন ডাক (প্রথম বলে আউট)। প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিল দুই বল খেলে। এরপর আজ আবার মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আউট হলেন শূন্য রানে মাত্র দুই বল খেলে।
তামিমের দশম শূন্য
মাহমুদুল হাসান জয়কে দিয়ে যা শুরু হয়েছিল আরেক ওপেনার তামিম ইকবালও তাকে অনুসরন করে যেন পূর্ণতা আনেন। আশিথা ফার্নান্ডোর বল ফ্লিক করতে গিয়ে পয়েন্ট প্রভিন জয়াবিক্রমার চমৎকার ডাইভিং ক্যাটে পরিণত হন। তামিম ইকবাল ৬৭ টেস্টের ১২৬ ইনিংসের ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দশমবার শূন্য রানে আউট হলেন। তার নতুন সঙ্গি মাহমুদুল আর তিনি দুই জনেই প্রথমবার শূন্য রানে আউট হলেন। আজ তামিম ইকবাল বল খেলেন চারটি।
শূন্যতে সাকিবের পাঁচ আর দুই
টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর বাংলাদেশের যে ব্যাটিং ধস শুরু হয়েছিল, সেখানে সর্বশেষ আউট হন সাকিব। তিনি প্রথম বলেই কাসুন রাজিথা বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন। বাঁচার জন্য রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি সাকিবের। ৬১ টেস্টের ১১১ ইনিংসে সাকিব এই নিয়ে পঞ্চমবার শূন্য রানে আউট হলেন। আর গোল্ডেন ডাক ছিল দ্বিতীয়। সাকিব সর্বশেষ গোল্ডেন ডাক মেরেছিলেন ১৩ বছর আগে এই মিরপুরে। প্রতিপক্ষও ছিল শ্রীলঙ্কা। আর বোলার ছিলেন অজন্তা মেন্ডিস।
মুমিনুলের লাগাতর ব্যর্থতা
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান মুমিনুলের শুধু বাজে সময়ই যাচ্ছে না, খুবই বাজে সময় যাচ্ছে। দুই অংকে ঘরে যেতেই পারছেন না। গত পাঁচ ম্যাচে এক অংকের ঘরে আউট হওয়ার পর আজো তিনি এক অংকের ঘরে আউট হন। রান করেন নয়। বাউন্ডারি ছিল দুইটি। আর বল খেলেন নয়টি। তার আগের পাঁচটি ইনিংস ছিল চটগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২, দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টের চার ইনিংসে ৬ ও ৫ এবং ০ ও ২ রান। যে কারণে তার গড়ও ক্রমেই আসছে। এক সময় যা ছিল পঞ্চাশের উপরে-এখন তা নেমে এসেছে চল্লিশের নিচে।
বুকে ব্যথা নিয়ে কুশাল মেন্ডিসের মাঠ ত্যাগ
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজে আহত হয়ে মাঠ ছাড়ার ঘটনা কয়েকটি ছিল চট্টগ্রাম টেস্টে। শ্রীরঙ্কার বিশ্ব ফার্নান্ডো মাথায় বল লাগার কারণে মাঠ ছেড়েছিলেন। তার কনকাশান সাব হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন কাসুন রাজিথা। পরে বাংলাদেশের ইনিংসেও বল লেগে আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। এবার ঢাকা টেস্টেও মাঠ ছোরার ঘটনা ঘটেছে। তবে আহত হয়ে, অসুস্থ হয়ে। ২২.১ ওভারের সময় স্লিপে ফিল্ডিং করতে থাকা শ্রীলঙ্কার কুশাল মেন্ডিস বুকে ব্যথা অনুভব করাতে মাঠ ছেড়ে চলে যান। তার পরিবর্তে ফিল্ডিং করতে নামেনর কামিন্দু মেন্ডিস।
এমপি