পুরস্কারের টাকায় পুষ্টিহীন শিশুর পাশে ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান
জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান নিজের পুরস্কারের টাকা বিলিয়ে দিতে চান আর্তমানবতার সেবায়। পুরস্কারের এক লাখ টাকার সবটুকু অর্থ দিয়েই জলবায়ুর প্রভাবে সাতক্ষীরার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুষ্টিহীন শিশুদের মাঝে খাদ্য সহায়তা করবেন তিনি।
এর আগেও নিজের জার্সি বিক্রি করে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখেন তিনি। ২০২০ সালে করোনাকালীন তৈয়ব হাসান ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে (ভারত বনাম আফগানিস্তান) নিজের পরা ওই জার্সিটি নিলামে তোলেন। নিলামে জার্সিটি বিক্রি হয় ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। সেই অর্থ বিতরণ করা হয় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়, সংগঠক, রেফারিসহ অনেকের মধ্যেই। ওই সময় খোদ ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো তাকে বিশেষ প্রশংসাপত্র পাঠিয়েছিলেন এ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।
এমন সিদ্ধান্তে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। গত বুধবার (১১ মে) রাজধানী ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তৈয়বসহ এ পুরস্কার পেয়েছেন মোট ৮৫ জন। কিন্তু সবার চেয়ে আলাদা হয়ে রইলেন তিনি। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার গ্রহণের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশের সময় পুরস্কারের অর্থ নিজে খরচ না করার কথা বলেন। পরে বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাতে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা ফেরার পথে পুরস্কারের অর্থ নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা গণমাধ্যমকে জানান তৈয়ব হাসান নিজেই।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৈয়ব হাসান বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছিলেন দক্ষ হাতে খেলা চালিয়ে। বাংলাদেশের রেফারিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় (১০ বছর) এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন বা এএফসির এলিট প্যানেলে ছিলেন।
ফিফা রেফারি ছিলেন সর্বোচ্চ ১৮ বছর। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা রেফারিও তিনি। ম্যাচের সংখ্যা প্রায় ১০০। প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে রেফারি ছিলেন তৈয়ব হাসান। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে পেয়েছেন এএফসি ‘রেফারিজ মোমেন্টো অ্যাওয়ার্ড।’
এ ব্যাপারে তৈয়ব হাসান বলেন, ‘পুরস্কারের টাকাটা সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের পুষ্টিহীন শিশুদের জন্য দেব। ওরা হয়তো মায়ের দুধ পায় না। কিন্তু পুষ্টির জন্য গরুর দুধও কিনতে পারে না, আমি হয়তো দুধ কিনে দিলাম। আমার এ এক লাখ টাকায় হয়তো কিছুই হবে না। তবে একটা প্রতীকী উদ্যোগ তো হতে পারে।’
এসএন