'বাঁধের কাজে অবহেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যবস্থা'
সিলেট বিভাগের কমিশনার ডঃ মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেছেন, সুনামগঞ্জের একমাত্র বোর ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ দায়িত্ব নিয়েই করতে হবে। সরকারের নীতিমালার মধ্যেই থেকে কাজ করতে হবে। এবং পরকৃতিকে রক্ষা করেই করার আহ্বান জানান। হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধের কাজ কারো অবহেলা বা গাফিলতির কারণে ক্ষতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা ২০১৭এর আলোকে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর সমুহে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতা ভূক্ত ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গন বন্ধ করন মেরামত কাজের স্কীম অনুমোদন ও সার্বিক অগ্রগতি বিষয়ে কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনামগঞ্জ বাসীর স্বপ্নের সোনার ফসল ঘরে তোলার লক্ষে প্রতি বছর হাওর রক্ষাবাঁধের কাজের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। কাজের গতি বৃদ্ধি করতে হবে। অপরিকল্পিত কিছু করা যাবেনা। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে হবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর পরিকল্পনা ছিল কিন্ত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হচ্ছে না।
সুনামগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক ও কমিটির সভাপতি দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ১ ও কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মামুন হাওলাদারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ বিন রশিদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ২ মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ।
নির্ধারিত সময় মতো বাধেঁর কাজ শুরু না করলে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা যাবে না। তাই সভায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে জেলা কমিটির সদস্যগণ তাগিদ দেন। গত বছর যেসব পিআইসি কাজ করেছে তাদের ফাইনাল বিল এখনও পরিশোধ না করায় দ্রুত বিল পরিশোধ করার দাবী জানান। এ ছাড়াও কাজের মান ঠিক রেখেই করার আহ্বান জানান।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, যেসব পিআইসির অনুমোদন ইতিমধ্যেই দেয়া হয়েছে সেগুলোর ৩০ ভাগ কাজ ও সম্পন্ন হয়নি। এ জন্য বাকী গুলোও অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। আমরা যাচাই বাছাই করেই অনুমোদন দেব।
প্রসঙ্গত: সুনামগঞ্জ জেলার মোট ৯৫ টি হাওরের মধ্যে ৪৮ টি হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধের কাজের জন্য এ বছর মোট ১০৮৪ টি পিআইসির জন্য মোট ২১২ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্ত জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫৮০ টি পিআইসির অনুমোদন দেয়া হয়েছে যার বরাদ্দ ১১৩ কোটি টাকা।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রের মতে, এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৩০০ হেক্টর। ইতিমধ্যেই লাগানো হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৩ হেক্টর। হাওরে ৮৬ ভাগ নন হাওরে ২৮ ভাগ। মোট ৭১ ভাগ আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার মেট্রিক টন চাল। যার বাজার মূল্য ৩ হাজার ৭৮০কোটি টাকা।
এএজেড