শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

তিনে মিলে এক জামায়াত!

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ছে সিলেট অঞ্চলে। ইতোমধ্যে গেল মাসের ৯ নভেম্বর জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম এর সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত চৌধুরী গ্রেপ্তার হন। এর চারদিন পর গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলাম এর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. শফিকুর রহমান। পিতা-পুত্রের গ্রেপ্তার পরবর্তী সিলেট অঞ্চলে জঙ্গি কার্যক্রম এবং সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনায়। অপর জঙ্গি সংগঠনের নাম জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। ডা. রাফাত চৌধুরী গ্রেপ্তারের আরও আগে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় জড়িয়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য সিলেট থেকে হিজরত করা তিন জঙ্গি সদস্যকে যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছেলে রাফাত চৌধুরী ও পিতা জামায়াতে ইসলামীর নায়েব আমির ডা. শফিকুর রহমান গ্রেপ্তার পরবর্তী সিলেট অঞ্চলে জঙ্গি কার্যক্রমের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ হতে থাকে। সিলেট থেকে জঙ্গি কার্যক্রম প্রশিক্ষণ এবং সম্পৃক্তার অংশ হিসেবে প্রথমেই একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে টার্গেট অনুযায়ী মাদরাসা পড়ুয়া ও বেকার একটি অংশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে মাইন্ডওয়াশ করে প্রস্তুত করা হয়। এরপর শুরু হয় হিজরত। হিজরতীদের নেওয়া হয় দুর্গম অঞ্চলে। সেখানে দিনের পর দিন চলে জঙ্গি প্রশিক্ষণ। এই কার্যক্রমে সকল প্রকার পৃষ্টপোষকতার অভিযোগ রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর উপর।

এই কার্যক্রমে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন এবি পার্টি ও বিডিপি নামের আরও দুটি সংগঠনেরও সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সিলেটের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জামায়াত ইসলামী জাতীয় রাজনীতিতে নীরব থাকলেও থেমে ছিল না তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলেও টেনশন ফ্রি এই সংগঠন। নিষিদ্ধ ঘোষণার আগেই এবি পার্টি এবং বিডিপি নামের দুটি সংগঠন নিয়ে চলছে এই সংগঠনের কার্যক্রম। সংস্কার তকমা লাগিয়ে গঠন করা হয় এবি পার্টি।

একই ভাবে জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান অনেক নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে বিডিপি নামের আরও একটি সহযোগী রাজনৈতিক সংগঠন। মোট কথা, বিডিপি ও এবি পার্টিকে নিয়ে ত্রি-ইন ওয়ান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে এবি পার্টি এবং বিডিপির সিলেট জেলার নেতারা পরস্পরকে জামায়াতের সহযোগী বলে দোষারোপ করছেন।

বিডিপি, এবি পার্টি, আনসার আল ইসলাম ও 'জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া' এর সাংগঠনিক আদর্শ এবং নামকরণে ভিন্নতা থাকলেও মূলত জামায়াতের হাতেই নিয়ন্ত্রণ বাকি সবকটি সংগঠনের। বিডিপি এবং এবি পার্টি সিলেট জেলা ও মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে এমন তথ্যই জানা গেছে।

এবি পার্টি ও বিডিপির সিলেট জেলা ও মহানগর কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় দুটি সংগঠনের সাথে যুক্ত সকলেই জাময়াত-শিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতা। আদর্শিক ভাবে দুটি সংগঠনের সাথে জামায়তের কিছুটা অমিল থাকলেও দুটি সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জামায়াতের হাতেই। যদিও বিষয়টির সাথে দ্বিমত প্রকাশ এবি পার্টির সিলেট জেলা সভাপতি এডভোকেট নাজমুল ইসলামের।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে মুক্তির জন্য জামায়াতের তরুণ প্রজন্মের একটি তাগিদ ছিল। সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাময়াত থেকে সংস্কার পন্থীদের নিয়ে তিন বছর আগে এবি পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। জামায়াতে ইসলামকে ধর্মভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দল আখ্যা দিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, 'জামায়াত এবং এবি পার্টিকে একই বৃন্তের কুসুম বলাটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হবে না। কারণ জামায়াত যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সংগঠন।'

তিনি বলেন, সিলেটে ২০২১ সালে জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের পর থেকে এবি পার্টি তাদের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিতের কার্যক্রম চালিয়ে প্রমাণ করেছে এবি পার্টি দেশবান্ধব একটি রাজনৈতিক সংগঠন।

জামায়াতের নেতাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জেলা সভাপতি এডভোকেট নাজমুল ইসলাম বলেন, জামায়াত ইসলাম থেকেই যেহেতু এবি পার্টি, সেহেতু সংস্কারপন্থী জামায়াতের অংশগ্রহণ এখানে থাকাটাই বাঞ্চনীয়। তিনি বলেন, জামায়াত ইসলাম ছাড়াও ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহাবস্থান রয়েছে এবি পার্টিতে।

বিডিবির সঙ্গে জামায়াত কিংবা এবি পার্টির মিল-অমিল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামায়াতের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিডিপির উত্থান। এই দলের তৃণমূল পর্যায়ে কার্যক্রম না থাকলেও ৫০০০ পৃষ্ঠার কাগজ সম্বলিত বই জমা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। মূলত জামায়াত ইসলামের হয়েই এই সংগঠন রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করতে চায়।

সংগঠনের মহানগর কমিটির আহবায়ক ওমর ফারুক বলেন, কল্যানকামী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যেই পথ চলা এবি পার্টির। ইসলামকে রাজনৈতিক সিঁড়ির হাতিয়ার নয় বরং ধর্মীয় অনুশাসন সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে সকল মানুষের রাষ্ট্র গঠন চায় এবি পার্টি।

অপরদিকে জামায়াত ইসলাম থেকে একটি অংশ যুক্ত হয়েছেন বিডিবিতে। জামায়াতে ইসলামীর নেতারাই সিলেটে ঠিক করে দিয়েছেন কমিটি। কমিটিতে স্থান পাওয়া সবাই আছেন জামায়াত ও শিবিরের সক্রিয় দায়িত্বে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এবি পার্টির সাথে জামায়াতের দ্বন্দের কারনেই বিডিপিকে তড়িঘড়ি করে সামনে নিয়ে এসেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জামায়াত আমীর শফিকুর রহমান জামায়াতের সংস্কারপন্থি গ্রুপ থেকেই আমীর হয়েছেন বলে সূত্র জানায়। ফলে জামায়াত ছয় বছর পূর্বে গঠিত বিডিপিকে সামনে নিয়ে আসে।

সংগঠনটির জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন খান বলেন, একটি নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হলে স্বাভাবিক ভাবে আদর্শগত কারণে কিংবা রাজনৈতিক সুবিধার কারণে অন্যান্য দলের লোকজন আসবে-এটা খুবই স্বাভাবিক। সুতরাং বিষয়টিকে জামায়াতের কৌশল বলা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। পথ ও পথের ভিন্নতায় জন্ম নেয় সংগঠন। বিডিপি সেই মত ও পথ নিয়েই তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এবি পার্টির বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াত থেকেই এবি পার্টির জন্ম। সুতরাং জামায়াত বিষয়ে এবি পার্টি কি প্রতিক্রিয়া দেখালো, সেটিকে আমরা কখনোই বিবেচনায় রাখি না।

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, সামনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যেহেতু জামায়াতে ইসলাম যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল গন্য হলে বিকল্প পথেই হাঁটতে পারে জামায়াত। এবং ইতোমধ্যে আরও দুটি সংগঠনকে এস্টাবলিশ করার সক্ষমতাও তৈরি করে রেখেছে এই সংগঠন।

তিনি বলেন, এখন নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে, এবি এবং বিডিবির রাজনৈতিক তৎপরতা, জামায়াতের সাথে সখ্যতা সর্বোপরি সাংগঠনিক দৃষ্টিভঙ্গিকে বিবেচনায় রেখে নিবন্ধন কার্যক্রম সুনিশ্চিত করা। জঙ্গি সংগঠন বিষয়ে এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, শিবির কর্মীরা রাজনৈতিকভাবে প্রকাশ্যে আসতে না পেরে বিভিন্ন্ পন্থায় কার্যক্রম চালাতে মরিয়া হয়ে উঠছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথের বাড়ছে শিবিরের সম্পৃক্ততা। সুতরাং জঙ্গি সংগঠনগুলোর অর্থের উৎস বিষয়ে তদারকি বাড়াতে পারলেই সবকিছই খোলাসা হয়ে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক রুহুল কুদ্দুস বাবুল বলেন, র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের নাম- জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া। পাহাড়ের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠির সঙ্গে যুথবদ্ধ হয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল তারা। এমন তথ্য নিঃসন্দেহে বিপদজনক। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনি জামায়াতে ইসলামীর সাথে এর সংশ্লিষ্টতাও পেয়েছে। জঙ্গিবাদের সঙ্গে রাজনীতির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক মদদ আশ্রয় প্রশ্রয় ছাড়া কখনও জঙ্গিরা সংগঠিত হতে পারে না।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন আখ্যায়িত করে সংগঠনটি নিষিদ্ধ করতে বলেছে। রাজনীতি এবং আইনের মারপ্যাঁচে তারা এখনও নিষিদ্ধ হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে। দল নিষিদ্ধের বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে তারা জোট মিত্র বিএনপির নির্বাচানি প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছে।

নির্বাচনের পর জামায়াত এবং সাবেক শিবির নেতাদের সমন্বয়ে গড়ে তুলেছে রাজনৈতিক দল এবি পার্টি। বর্তমানে আরেকটি পার্টি গঠন করে নিবন্ধনের চেষ্টা করছে। এই পার্টি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করেছে।জামায়াতের কৌশল হলো- নিবন্ধন নিতে তাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কেউ সামনে আসবে না। দলের পদ পদবীতেও থাকবে না। অপরিচিতদের সামনে রেখে নিবন্ধনটি করিয়ে নিতে পারলে তারপর সময় বুঝে দলের হাল ধরবেন তারা।

উদ্বেগের কথা নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, 'শর্ত পূরণ করে তারা (জামায়াত) ভিন্ন নামে এলে এবং তাদের গঠনতন্ত্র যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, তাহলে নিবন্ধন পেতে বাধা নেই'। যা করার সরকারকেই করতে হবে। অগণতান্ত্রিক মানসিকতায় ক্ষমতাপাগল রাজনীতির প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে স্বাধীনতাবিরুধী সকল অপশক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। যা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ভয়ংকরভাবে আঘাত করতে পারে।

জেলা জামায়াতের আমির (উত্তর) হাফিজ আনোয়ার হোসেন খান বলেন, 'তিনে মিলে এক জামায়াত'-এমন মন্তব্যের বিষয়ে আমার কোনো উত্তর নেই। এই উত্তর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দিতে পারেন। জামায়াত আমিরের ছেলে গ্রেপ্তার বিষয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের সাথে জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা থাকতে পারে না। সুতরাং এই বিষয়ের সাথে জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতার বিষয়টিও যায় না। জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জামায়াতের যোগসূত্র রয়েছে-এমন প্রমাণিত সত্য এখনও পাওয়া যায় নি বলেও দাবি করেন তিনি।

জামায়াতে ইসলাম, এবি পার্টি ও বিডিপি কে একই মুদ্রার এপিট-ওপিট উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে সবচাইতে সুসংগঠিত দল হচ্ছে জামায়াত। সুতরাং যুদ্ধাপরাধের দায়ে এই সংগঠনের নিবন্ধন বাতিল হলেও পরিকল্পিত রাজনীতিতে এই সংগঠনকে বেকায়দায় পড়তে হবে না।

তিনি বলেন, এবি পার্টি ও বিডিপিকে এরই মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে এস্টাবলিশ করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত। তিনি ধর্মভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল এই রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর জঙ্গি কানেকশনের বিষয়ে কড়া নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকেও নিবন্ধন প্রদানের ক্ষেত্রে সজাগ থাকার আহবান জানান।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস বলেন, সিলেট কখনোই জঙ্গিবাদের আস্তানা করা অসম্ভব। কারণ, এন্টি টেরিরিজম এবং এসএমপি একই সাথে জঙ্গিবাদ রুধে কাজ করছে একই সাথে। যে কারণে সিলেট থেকেই জামায়াতের আমিরের ছেলে রাফাতকে গ্রেপ্তার করাও সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। ওই রায়ের পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। সে সময় তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো: আলমগীর জানিয়েছিলেন, শর্ত পূরণ করে ভিন্ন নামে জামায়াত ইসির নিবন্ধন পেতে পারে।

তিনি বলেন, জামায়াতের কেউ যদি যুদ্ধাপরাধী না হয় এবং তাদের গঠনতন্ত্র যদি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, তাহলে শর্ত পূরণ করে ভিন্ন নামে তাদের নিবন্ধন পেতে কোনো বাধা নেই। তবে একই নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ইউটান দিয়ে এখন বলছেন জামায়াতের যুদ্ধাপরাধ সংশ্লিষ্টাতাহীন ব্যক্তি বর্গের সমন্বয়ে যদি ভিন্ন নামে দল গঠন করে তাতে নির্বাচন কমিশনের কোন আপত্তি নাই।

ঠিক তখনই নির্বাচন কমিশনে জামায়াত সংশ্লিষ্ট লোক বাংলাদেশ ডেভেলপম্যান্ট পার্টি নামের নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন পত্র নিয়ে হাজির। জামায়াত বলছে তাদেন নিবন্ধনের এখনো চুড়ান্ত ফয়সালা মূলক রায় হয়নি। তাই জামায়াত এখনো আছে। অপরদিকে বিডিপি প্রধান বলছে জামায়াতের সাথে তাদের কোন রকম সম্পর্ক নাই।
এএজেড

Header Ad
Header Ad

নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস

নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস। ছবি: সংগৃহীত

দুই ঠিকাদার কর্মীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ নৌঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এতে পাচার হয়েছে ঘাঁটির সংবেদনশীল এলাকার ছবি, ভিডিও, নথিসহ বিভিন্ন ভবনের নকশা।

এমন অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) বিরুদ্ধে। ভারতীয় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনআইএ) দাবি, নারী গোয়েন্দাকে ব্যবহার করে সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ পর্যন্ত দুই জনকে আটক করেছে দেশটির এনআইএ।

জানা যায়, ১১ হাজারেরও বেশি একর জায়গা নিয়ে ভারতের ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে অবস্থিত নৌঘাঁটি- ‛আইএনএস কদম্ব’। বর্তমানে এটিই দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ নৌঘাঁটি। তবে, সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলে পূর্ব গোলার্ধ্বের সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটিতে পরিণত হবে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে আইএনএস কদম্বকে। সামরিক ও প্রতিরক্ষাখাতে কৌশলগত ব্যাপক অবদান রয়েছে। তবে, চতুর্দিক নিরাপত্তায় মোড়া এই ঘাঁটির সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এমন অভিযোগ উঠেছে দেশটির প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) বিরুদ্ধে।

এদিকে, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর দাবি- ঐ নৌঘাঁটিতে কর্মরত দুই সিভিলিয়ান ঠিকাদার কর্মীদের হানিট্র্যাপে ফেলে তথ্য হাতিয়ে নেয় নাফিসা জান্নাত নামের এক পাকিস্তানি নারী গোয়েন্দা। যার সাথে ২০২৩ সাল থেকে পরিচয় ছিল ঐ দুই কর্মীর। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক এবং টেলিগ্রামে ভিন্ন নামের তাদের সাথে শখ্যতা গড়ে তোলেন ঐ নারী।

গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ঐ দুই ঠিকাদার কর্মীর মাধ্যমে আইএনএস কদম্বের খুবই সংরক্ষিত স্থানের ছবি, ভিডিও, গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্মাণাধীন স্থাপনার নকশা, সিমুলেটর বিল্ডিং এরিয়ার ছবি সুকৌশলে হাতিয়ে নেন ঐ পাকিস্তানি গোয়েন্দা। এমনকি কোন জাহাজ কখন কোথায় টহল দেয়, কোনটি অপারেশনাল কিংবা রেডি টু এনগেজ মুডে থাকে এসব তথ্য রয়েছে আইএসআই’র কাছে।

তবে, আটক দুই ব্যক্তির ভাষ্যমতে, প্রতি মাসে তাদের ৫ হাজার রুপি করে দেয়া হত। টানা ৮মাস টাকা দিয়ে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের বিশ্বাস অর্জন করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি, তাদের মাধ্যমে পাচার হয় ভারতীয় নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

Header Ad
Header Ad

নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের

নিহতদের বিচারের দাবি স্বজনদের। ছবি: সংগৃহীত

আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’ নামের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতদের স্বজনরা বলেন, একদল রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চাচ্ছে। কিন্তু এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দেওয়া যাবে না।

তারা বলেন, এই দুই হাজার হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে একজন হত্যাকারী পুলিশ কিংবা হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও দুই হাজার জন গ্রেপ্তার হতো। কিন্তু নগণ্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত মো. সিয়ামের ভাই মো. রাশেদ বলেন, এই সরকারের কাছে বেশি কিছু চাই না, ভাই হত্যার বিচার চাই। দেশে কোনো নির্বাচন দেওয়ার আগে ভাই হত্যার বিচার করুন।

নিহত সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দল নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি করছে। অথচ আমাদের সন্তান হত্যার বিচারের কথা কেউ বলছে না।

নিহত সাজ্জাত হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, পুলিশ আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সাত মাস হয়ে গেল আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার পেলাম না। কান্না করতে করতে এখন চোখের জল শুকিয়ে গেছে। তবুও ছেলে হত্যার বিচার পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনজন উপদেষ্টা নিয়ে ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়। সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে আছেন মো. মহিউদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ভুইয়া এবং মো. মীর মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাহী পরিষদ কমিটিতে চেয়ারম্যান হয়েছেন মো. গোলাম রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল ভুইয়া। কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছে আব্দুল্লাহ আল মারুফ ও জান্নাতুল ফেরদৌস সাফা। সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম মাহমুদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল হাওলাদার ও সহ সাধারণ সম্পাদক সাবিনা আক্তার রিমা।

এছাড়া কোষাধক্ষ্য হয়েছেন জারতাজ পারভীন ও সহকোষাধক্ষ্য আবু হোসেন, জনসংযোগ সম্পাদক শিল্পী আক্তার, দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ও সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল মান্নান। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন রাহাত আহম্মেদ খান, ক্রিয়া সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কবির হোসেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার খান পলাশ এবং সহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাবরিনা আফরুজ সেবন্ধী।

নির্বাহী সদস্য হয়েছেন সামছি আরা জামান, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. অব্দুল বাসার অনিক, স্বর্ণা আক্তার, রাজু আহমেদ, শাহিনা বেগম, ফারহানা ইসলাম পপি, খালেদ সাইফুল্লাহ, রাজু আহমেদ, মো. সুমন মিয়া, আহমেদ লামিয়া, পাপিয়া আক্তার শমী এবং এম. এ. মতিন।

Header Ad
Header Ad

চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত

মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসযাত্রী মির্জাপুর থানায় গিয়ে চলন্ত বাসে ডাকাতির বিষয়ে ডিউটি অফিসার মো. আতিকুজ্জামানকে অবহিত করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় কয়েক মিনিট পর তারা থানা ত্যাগ করেন।

এছাড়া ডিউটি অফিসার তাদের নাম ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর সহ কোন তথ্যই রাখেননি তিনি। যার কারণে মামলা গ্রহণ করতে বিলম্ব হয়। এরপর ঘটনার তিনদিন পরে এক ভুক্তভোগী বাস যাত্রীর মামলা নিতে হয়েছে।

এদিকে, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান গত শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি রাতেই এএসআই আতিকুজ্জামানকে মির্জাপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেন। শনিবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এএসআই আতিকুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান জানান, শনিবার আতিকুজ্জামানের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস
নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের
চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা
বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
১৩ দিনের চীন সফরে যাচ্ছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির
২৯ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেয়েছে ২ সদস্যের একটি অপরিচিত বাংলাদেশি ফার্ম: ট্রাম্প
ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা: প্রাণে বাঁচলেন দিতি কন্যা লামিয়া
ফাগুনের দুপুরে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
‘আমাদের অনেক বয়স হয়েছে, নবীন-তরুণরা দেশকে নতুন করে চিন্তা করছেন’
ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে গঠন বিএনপির পক্ষেই সম্ভব: তারেক রহমান
চলন্তবাসে বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি, টাঙ্গাইলে গ্রেফতার ৩
আমরা কারো দাবার গুটি হবো না: জামায়াত আমির
গরমে স্যুট পরে এসির তাপমাত্রা কমানো বন্ধ করুন: জ্বালানি উপদেষ্টা
সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ, আবেদন শুরু ২৮ ফেব্রুয়ারি
নতুন দলের শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে ‘সমঝোতা’
মিঠাপুকুরে তোপের মুখে পালিয়ে গেলেন সাব রেজিস্ট্রার
আমার মা চাইতেন না আমি বিয়ে করে সংসারী হই : পপি