মায়ের লাশ ঘরে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল জুমা
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বাড়িতে মায়ের লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল জুমা আক্তার নামে এক পরীক্ষার্থী। কেন্দ্রে ঢুকে বারবার কাঁদে জুমা। প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে একহাতে চোখ মুছে ও অন্য হাত দিয়ে খাতায় লিখেছে। মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে কেঁদেও উঠে সে। তবুও পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে জুমা।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কৃষিশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জুমা আক্তার। এসময় পরীক্ষাকেন্দ্রে শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা যায়, রবিবার জুমার মা পারভিন বেগম (৫০) মারা যান। পরে মায়ের লাশ ঘরে রেখে কেঁদে কেঁদে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে জুমা আক্তার। তাদের বাড়ি উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের চক-কাচিমপুর গ্রামে। জুমা ওই গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, রবিবার ভোরে জুমার মা আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান। মায়ের লাশ ঘরে রেখে মেয়েটি সকালে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে আমি তাকে দেখে তার কাছে গিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে মনকে শক্ত করে পরীক্ষা দিতে বলেছি।
পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষক গোবিন্দ রায় বলেন, এলাকার লোকজন থেকে খবর পেলাম জুমা আক্তার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মা আজ সকালে মারা গেছেন। সকাল ১১টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় জুমা। মায়ের মৃত্যুতে জুমা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সে সকাল থেকেই কাঁদছিল। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে সহপাঠী ও আমরা শিক্ষকেরা তাকে মানসিক সাহস জোগাতে সহযোগিতা করেছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে শোকাহত ওই শিক্ষার্থীর পাশে থেকে সাহস জোগানোর চেষ্টা করেছি। তার পাশে থেকে পরীক্ষা শেষ করিয়েছি।
এসজি