মঙ্গলবার বৈঠক, দাবি পূরণ না হলে চা-শ্রমিকদের আন্দোলন চলবে

মুজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই চা-শ্রমিকদের আলোচনার জন্য ডেকেছে সরকার। তবে বৈঠকে গেলেও শ্রমিকদের পূর্বনির্ধারিত ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে মৌলভীবাজারের বিভাগীয় শ্রম দপ্তর কার্যালয়ে শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক নাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি নিরসন করার জন্য মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শ্রম অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক থাকবেন। একই সঙ্গে বৈঠকে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বা তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তবে ওই বৈঠকে চা বাগানের মালিকপক্ষের কেউ থাকবেন না বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, মঙ্গলবারের বৈঠকের জন্য শ্রম অধিদপ্তর থেকে আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। আমরা বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ১০ জনের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নিবেন। বৈঠকে অংশ নিলেও আমরা যে ধর্মঘট ডেকেছি সেটা চলমান থাকবে।
এদিকে চলমান সংকট নিরসনে আগামী ২৩ আগস্ট শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান চা-শ্রমিকদের নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক ডেকেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মুঠোফোনে বৈঠকের বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সেই বৈঠকেও অংশ নিব কিন্তু আমাদের যে মূল দাবি অর্থাৎ চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণ না করা পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
এদিকে আগামী ১৭ আগস্ট চা-শ্রমিকরা হবিগঞ্জে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করার যে ঘোষণা দিয়েছেন তা মঙ্গলবারের শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকের কারণে স্থগিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মঘট তুলে আলোচনায় বসতে বলা হয়েছিল। আমরা সেই দাবি মানতে পারছি না। তবে মঙ্গলবারের আলোচনার জন্য আমরা ১৭ আগস্টের মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছি। বৈঠকে যদি কোনো ফলপ্রসু সমাধান না আসে তাহলে আমাদের পূর্বনির্ধারিত মহাসড়ক অবরোধের কর্মসূচি বহাল থাকবে। পাশাপাশি চলমান শ্রমিক ধর্মঘটও চলবে।
এদিকে চা-শ্রমিকদের চলমান ধর্মঘটের আজ তৃতীয় দিন চলছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ চা-শ্রমিকরা কোথাও মিছিল মিটিং করেননি। এদিন সকালে ভাড়াউড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের ফ্যাক্টরির প্রধান ফটক বন্ধ। চা বাগানের কোথাও কোনো ধরনের কাজ হচ্ছে না।
এসজি/
