দেশের সব চা বাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
দেশের সকল চা বাগানে আগামীকাল সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন৷ চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবীতে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি৷
ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা ঢাকা প্রকাশ-কে জানান,আজ সন্ধ্যা ছয়টার ভেতর চা বাগানগুলোর মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ যদি আমাদের মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না জানায় তাহলে আমরা আগামীকাল সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশের ২৩২ টি চা বাগানের শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে যাবো৷ পাশাপাশি চা শ্রমিকরা আগামীকাল সকাল থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধও করবো৷
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক নিপেন পাল জানান,গত ৩ আগস্ট আমরা চা বাগানের মালিকদের কাছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য ১ সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু তারা সেটাতে কর্ণপাত করেন নি৷ এর প্রতিবাদে আমরা গত চারদিন ধরে সারাদেশের সকল চা বাগানে দুই ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছি৷ তারপরও মালিকপক্ষ আমাদের দাবী মেনে না নেওয়ায় আমরা ধর্মঘটের মত কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হচ্ছি৷
এদিকে চলমান এই সমস্যা সমাধানের জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের মৌলভীবাজারস্থ কার্যালয়ে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালকের আমন্ত্রনে মালিকপক্ষ ও চা শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে সমজোতা বৈঠকের আয়োজন করা হয় কিন্তু সেই বৈঠকে চা বাগানের মালিকপক্ষের কেউ আসেন নি৷
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী জানান,আমরা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা মজুরি থেকে ৩০০ টাকা করার দাবি করছি। গতকাল বিকেলে সমঝোতা বৈঠকের জন্য আমাদের শ্রমকল্যাণ দপ্তরে ডাকা হয়। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম শ্রমকল্যাণ দপ্তরের কর্মকর্তারা আমাদের ২৮ তারিখ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করতে বলেন। কিন্তু আমাদের শ্রমিকেরা সেটা মানবে না। তা ছাড়া মালিকপক্ষের কেউ বৈঠকে ছিলেন না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷
বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম বলেন, 'কাজ বন্ধ করে শ্রমিকেরা আন্দোলনে গেলে মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষেরই ক্ষতি হবে। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একটা সমঝোতা বৈঠক করেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ২৮ আগস্ট তাঁদের সঙ্গে বসতে সময় চেয়েছেন। আপাতত আন্দোলন স্থগিত রাখতে বলেছেন। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সেটা মানেনি।'
এদিকে এই বিষয়ে চা বাগান মালিকপক্ষের বক্তব্য জানতে বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি৷
এএজেড