বেতন বৃদ্ধির দাবিতে দেশব্যাপী চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকা করার দাবিতে সারা দেশের সকল চা বাগানগুলোতে একযোগে কর্মবিরতি পালন করেছেন চা-শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দেশের প্রতিটি চা বাগানে একযোগে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়।
মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চা বাগানের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে দাঁড়িয়ে কর্মবিরতি পালন করেন। কর্মবিরতি শেষে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশও করেন।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ-সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, সরকার জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েই চলছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চা-শ্রমিকরা আজ দিশেহারা। ১২০ টাকা দৈনিক মজুরি দিয়ে এই দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালানো অসম্ভব। শ্রমিকদের আজ নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা, চাল-ডাল কিনতে গিয়ে মাছ কেনার টাকা থাকে না। শ্রমিকরা মাংস খাওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারে না। শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশোনার টাকা জোগাড় করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। বাগান মালিকদের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধি করার কথা থাকলেও, মালিকরা নানা টালবাহানা করে মজুরি বৃদ্ধি করছেন না। আমরা গত ১৯ মাস ধরে তাদের সাথে মজুরি বৃদ্ধির জন্য আলোচনা করতে চাইলে তারা (মালিক পক্ষ) আলোচনায় বসতেও রাজি হন না। তাই নিরুপায় হয়ে আমরা এই কর্মবিরতিসহ অন্যান্য কর্মসূচির ডাক দিয়েছি।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালি সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, গত ৩ আগস্ট দেশের চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের কাছে মজুরি বৃদ্ধির আবেদন দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আজ আমরা বাগানে কর্মবিরতি করেছি, মজুরি বৃদ্ধি না করলে চা-শ্রমিকরা বিভিন্ন মহাসড়ককে অবস্থান নিবে। শ্রমিকদের বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার আগে বাগান মালিকের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে মজুরি বৃদ্ধি করে শ্রমিকদের ভালোভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিন।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, আমরা মজুরি বৃদ্ধির জন্য তিনদিনের দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতির অংশ হিসেবে আজ সারা দেশের সকল চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করেছি। আগামীকাল এবং পরশু আমাদের এই কর্মসূচি চলবে তারপরও যদি মালিকপক্ষ আমাদের দাবি মেনে না নেয় তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।
এসজি/