কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৪ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৪ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
কুড়িগ্রামে আলোচিত সব ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগীর আত্মহত্যার ঘটনা। এ ঘটনার পর সাড়া পড়ে যায় সকল সচেতন মহলে। দাবি তোলা হয় অভিযুক্তদের বিচারের।
এদিকে এ ঘটনায় চার আসামির মধ্যে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করা গেলেও মামলার ৩ মাস ১৫ দিন পার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে মামলার অন্যতম আসামি শুকুর আলী (৫০)।
আরও পড়ুন: গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ লজ্জায় স্বামী স্ত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টায় স্ত্রীর মৃত্যু
এর আগে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে রাজিবপুর পুলিশ। গত শনিবার (১ জুন) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রধান আসামি মো. জয়নাল আবেদীন (৪৮) ও আরেক আসামি মো. আলম হোসেন (৪০)।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে বিষপানে নারীর মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২
পরে এ ঘটনায় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি মো. সোলায়মান (২৯) কে যৌথ অভিযানে ১৫ জুন শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে আলোচিত গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় সোলায়মানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
সোলায়মানকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, আমরা বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বসহকারে দেখেছি। র্যাবের যৌথ অভিযানে পলাতক আসামি মো. সোলায়মান (২৯) গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়াও পলাতক আসামি শুক্কুর আলীকে (৫০) ধরতে তৎপর রয়েছে র্যাব।
পলাতক আসামী শুকুর আলীর বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, আমি যেহেতু তৎকালীন সময়ে রাজিবপুর থানার দায়িত্বে ছিলাম না। থানার আয়ুর কাছে তথ্য নিয়ে জানাতে পারবো।
আরও পড়ুন: সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামির স্বীকারোক্তি, ধরাছোঁয়ার বাইরে পলাতকরা
এছাড়াও রাজিবপুরের জাউনিয়ারচর মিয়াপাড়ায় জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজন মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমত এখনো পুলিশের রাডারের বাইরে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা
গার্মেন্টস শ্রমিকের ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জালন ও মানববন্ধন করে শ্রমিক বৃন্দ, কুড়িগ্রাম।
এছাড়াও গ্রেফতার না হলে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিল তারা। পরে গত ১২ জুন ২০২৪ মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়।
একটি সূত্রে জানা যায়, একটি অডিও কল রেকর্ড নিয়ে আলোচনায় আসার পর কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম নির্দেশেই রাজিবপুর থানা মামলাটি গ্রহণ করে।
ভুক্তভোগী কোহিনুর আক্তার বলেন, মামলা নিতেও সময় ক্ষেপন করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
এদিকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি আব্দুল্লাহ ও কেসমত এর বিরুদ্ধে মিয়াপাড়া ওসিমন নেসা মাদরাসার সেক্রেটারী আজিজুর রহমান ক্বারীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আসরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় আব্দুল্লাহ ও কেসমত আলী আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের হাতে থাকা রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেরে জখম করে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে। পরে আমি রাজিবপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে জামালপুরে একটি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করলে সেখান থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করি। ঘটনার পরে থানায় অবহিত করি এবং একটি অভিযোগ প্রদান করি।
আজিজুর রহমান ক্বারীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও হুমকি বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আনতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।