রাতে চুরি করতে গিয়ে ধরা, সকালে পরিষদে মিলল মরদেহ
চুরির ঘটনায় রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার পঞ্চগড় ইউনিয়ন পরিষদে মো. সুজন (৩০) নামে এক যুবককে আটকে রাখা হয়। তবে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে পরিষদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই যুবক জেলা সদরের গোয়াল পাড়া এলাকার মৃত কছিম উদ্দীনের ছেলে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার ও ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে একটি মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগে স্থানীয় লোকজনসহ পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল ইমরান খান ওই যুবককে আটক করে। এসময় তিনি জাহেদুল হককে নিয়ে মসজিদের ব্যাটারি চুরির কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে সকালে চুরি করা ব্যাটারি উদ্ধার করে দিবেন বলেও জানান তারা। পরে রাত ২টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দিয়ে জাহেদুলকেও আটক করে ইউনিয়ন পরিষদের পৃথক দুটি কক্ষের তাদের রাখা হয়। তাদের দেখভালের জন্য ইউপি কার্যালয়ের চৌকিদার মকছেদুর রহমান বাবুল ও দফাদার জমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সকালে তাদের জন্য নাস্তা নিয়ে তাদের ডাকতে গেলে কক্ষের ভেতর সুজনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তারা।
নিহত সুজনের স্ত্রী চায়না আক্তার বলেন, আমার স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন। শুনেছি মসজিদের ব্যাটারি চুরি করে ধরা পড়েছে। পরে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। তবে তাকে কেউ মারধর করেনি বলে জেনেছি। এ ঘটনায় আমার কোনো অভিযোগ নেই। তবে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হলে ভালো হতো।
পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল ইমরান খান বলেন, রাতে আটকের পর তারা মসজিদের চুরি হওয়া ব্যাটারি সকালে উদ্ধার করে দিতে চেয়েছিল। তারা মসজিদের লোকজনের কাছে ক্ষমা চায় এবং স্থানীয়রা তাদের মাফ করে দেন। পরে আমি সকালে ব্যাটারি উদ্ধার শেষে সালিশ বৈঠকের পর তাদের পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করি। মূলত চুরি হওয়া ব্যাটারি সকালে উদ্ধারের জন্যই রাতে তাদের দুটি আলাদা কক্ষে আটকে রাখা হয়। কিন্তু রাতে সুজনের কাছে থাকা গামছা দিয়েই তিনি আত্মহত্যা করেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে মাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া যদি কোনো অভিযোগ থাকে এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজি/