কাঁচাবাজারে স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের

রংপুরের কাঁচাবাজারে স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচাবাজারে প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে ডিম, মুরগির দামও। মাছ-মাংস, চাল-ডাল ও আটা ও ময়দার দামে তেমন হেরফের হয়নি।
শনিবার (১৩ আগস্ট) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি করলা ৫-১০ টাকা বেড়ে ৪৫-৫০, শসা ৩৫-১০০, চিকন বেগুন ২৫-৪০, গোল বেগুন ৫ টাকা বেড়ে ৪৫-৫৫, পেঁপে ২৫-৩০, কাঁচামরিচ ১৮০-২০০ টাকা থেকে ২১০-২৪০, লাউ প্রতি পিস ৩৫-৪৫, ঢেঁড়শ ২৫-৩০ থেকে ৪০-৪৫, কচুর লতি ৩০-৪০, বরবটি ৪৫-৫০, পটল ২৫-৩০ টাকা থেকে ৩০-৩৫, ঝিঙে ৫-১০ টাকা বেড়ে ৩৫-৪০, কাঁকরোল ৩৫-৪০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা পর্যায়ে ডিমের হালি ৪০-৪২ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা এবং আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ আগের দাম ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৮৫ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৯১০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা দরে। বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতো ২৩-২৫ টাকা ও শিল আলু ৩৫-৪০ টাকা এবং ঝাউ আলু ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। রংপুর জেলা জুড়ে বাজার দরের প্রায় একই অবস্থা।
নগরীর মুলাটোল আমতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা ভুট্টু মিয়া বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। এখন আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে কাঁচামরিচের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫০-৯০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৪০-১৫০, পাকিস্তানি মুরগি ২৩০-২৪০ টাকা থেকে ২৫০-২৬০, পাকিস্তানি লেয়ার ২৪০-২৫০ টাকা থেকে ২৬০-২৭০ এবং দেশি মুরগি আগের মতো ৪০০-৪১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর নগরীর সিটি বাজারের মুরগি বিক্রেতা সোলেমান মিয়া বলেন, কোরবানির কারণে মুরগির চাহিদা কিছুটা কম ছিল। এ কারণে দামও কমতে থাকে। এখন চাহিদা বাড়ছে। তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ফের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
নগরীর কামারপাড়া এলাকার মমিনুল ইসলাম রিপন সবজি বাজারে এসে দাম কষাকষিতে ব্যস্ত। তিনি বলেন, পরিবারের ৭ জন সদস্যের দিনে প্রায় দেড় কেজি চাল লাগে। সাথে সবজি অথবা মাছ-মাংস। একজনের আয় দিয়ে পুরো সংসার চলে। বেগুন, পেঁয়াজ, পটল ও ডিমের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে সামনের দিনে না খেয়ে থাকতে হবে। মাছ-মাংস না থাকলেও ডিম দিয়ে এক বেলা চালিয়ে নেওয়া যেত। এখন ডিমের দামও বেড়েছে। মাংসের বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৭০ টাকা দরে, খাসির মাংস ৮৮০-৯২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে এসে দাম শুনে কী বলব ভাষা হারিয়ে ফেলার মতো অবস্থা। এভাবে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে মানুষের জীবন-যাপন অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিং জোরদারের দাবি জানান তিনি।
এসজি/
