লালমনিরহাটে কলেজছাত্রীকে ভারতে পাচার, দেশে ফেরার আকুতি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ১৯ বছর বয়সী এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে প্রেমিক তিলক ওরফে শুভ। পরে শুভ ওই কলেজছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে কাঁটাতারের বেড়ার উপর দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। দেশে ফেরার জন্য ওই কলেজছাত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে আকুতি জানান। ভিডিওটি এলাকাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
ভারতের শিলিগুড়ির ঘোড়ার মোড়ে এক বাড়িতে বন্দি অবস্থায় নিজেকে উদ্ধারের পর এই আকুতি জানান ওই কলেজছাত্রী। ৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে নিজের পরিচয় দিয়ে কলেজছাত্রী বলেন, আমি প্রতারণার শিকার। আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম পরিচয় দিয়ে বিয়ে করে ভারতে পাচার করেছে তিলক শুভ। একটি বাসায় আটকে রেখে আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত তিলক রায় শুভ একই উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকড়ি গ্রামের ধনঞ্জয় রায়ের ছেলে।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই কামরুজ্জামান লুলু বলেন, আমার বোনের সঙ্গে তিলক শুভর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বোনকে নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যায় শুভ। সেখানে তারা বিয়ে করে। বিয়ের পর আমার বোন জানতে পারে তিলক শুভ হিন্দু। এরপর আর তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।
এদিকে বোনকে না পেয়ে তাকে উদ্ধারে জন্য গত ৬ জানুয়ারি তিলক, তার বাবা ধনঞ্জয়, তার মামা গোপাল ও দুই বন্ধুসহ ৫ জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় এজাহার দায়ের করেন কামরুজ্জামান লুলু। এরপরেও তাদের কোনো খোঁজ খবর পাননি তারা।
হঠাৎ একদিন ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী তার বড় ভাইয়ের মোবাইল ফোনে নির্যাতনের কিছু ভিডিও পাঠায়। এর জেরে চলতি মাসের ৪ আগস্ট ওই কলেজছাত্রীর ভাই ভারতের শিলিগুড়ি এলাকার ঘোড়ার মোড় এলাকায় গিয়ে একটি বাসা থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারসহ তিলককে আটক করে এনজেপি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বর্তমানে তারা শিলিগুড়ি থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তিনজনের নামে আমরা আদালতে চার্জশিট দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওই কলেজছাত্রীর একটি ভিডিও আমরা দেখেছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষ তাদের ভারত থেকে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসজি/