বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির ঘটনা ঘটেছিল ২০১৬ সালে; যা এখনও তদন্তাধীন। এই মামলার তদন্তে ৯ বছর পার হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত ফল আসেনি। পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কর্তৃক পরিচালিত তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানসহ ১৪ জনের সংশ্লিষ্টতা শনাক্ত করা হয়েছে। তবে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখন মামলাটি নিজের দায়িত্বে নিতে চায়।
মামলাটির প্রেক্ষাপট অনুসারে, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সিআইডি তদন্ত করে দেখেছে, তবে এক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সঠিকভাবে আইনগতভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, যেমন হ্যাকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ধারার উল্লেখ না করা। দুদকের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় সরকার সম্ভবত ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তদন্ত সিআইডির কাছে হস্তান্তর করেছিল এবং মামলার কৌশলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহায়তা করা হয়েছিল।
এদিকে, দুদক ইতিমধ্যে ৩১ ডিসেম্বর সিআইডিকে চিঠি পাঠিয়ে তদন্তের দায়িত্ব চেয়েছে। দুদকের দাবি, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত এবং এটি তাদের তফসিলভুক্ত অপরাধের মধ্যে পড়ে। ফলে মামলাটি তাদের কাছে হস্তান্তর করা উচিত।
তবে, মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে সিআইডি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, যা তদন্তের দিশা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করেছে। সিআইডির কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এছাড়া, ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন ছাড়া বাকি সবাইকে বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তবে সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বিদেশে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। মামলার তদন্তে আরো উঠে এসেছে, সুইফট সিস্টেমের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণে হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করতে সক্ষম হয়েছিল এবং এর সঙ্গে কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা যোগসাজশ করেছিল।
তদন্তকারীরা বলেছেন, অর্থনৈতিক লাভের আশায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হ্যাকারদের সহায়তা করেছিলেন, তবে তারা ভাগ্যক্রমে টাকার ভাগ পায়নি। এ ধরনের অপরাধের তদন্ত সঠিকভাবে করা না হলে, এটি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এ বিষয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা গণমাধ্যমকে জানান, মামলাটি যথাযথভাবে তদন্ত করা হয়েছে কিনা, তা বিচার করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল যদি বিষয়টি পর্যালোচনা করেন, তবে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।