বৃষ্টির আশায় নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
ছবি:সংগৃহীত
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে বইছে তীব্র তাপদাহ ও খরা। তীব্র তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জনজীবন সহ ফসলে। ফসলি জমির মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির। মাটি থেকে গরম হাওয়া উঠছে। নওগাঁয় গত কয়েকদিন থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছেন। প্রচন্ড গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণীকুল। ফসলি জমিতে শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। রোদ থেকে বাঁচতে মোটা কাপড় পরিধান করছে। কেউ কেউ রোদে চশমা ও ছাতা ব্যবহার করছে। স্বস্থি পেতে বার বার পানি করতে হচ্ছে। গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে সুখকর কোন বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
চলমান আবহাওয়া থেকে কিছুটা স্বস্থি পেতে গরমের তাপমাত্রা কমে শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির আশায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকা) আদায় করা হয়েছে।
এ দিন সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর দাখিল মাদরাসা মাঠে নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা নজিবর রহমান এবং দুবলহাটি ইউনিয়নের মাতাসাগর ঈদগাহ মাঠে নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা হুসাইন আহমেদ।
পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পাবলিক মাঠে প্রায় শতাধিক মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করা হয়। মোনাজাতের আগে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো. আব্দুল মুকিম।
সাপাহার উপজেলার সরফতুল্লাহ মাদরাসা মাঠে নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ওই মাদরাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা মো. ওমর ফারুক। পোরশা উপজেলার নিতপুর শ্রীকৃষ্ণপুর ঈদগাহ মাঠে নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন হাপানিয়া ফাজিল মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা হযরত আলী।
ধামইরহাট উপজেলার ডিগ্রী কলেজ মাঠে ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন- মাওলানা আস-আদুল্লাহ। রানীনগর উপজেলার শেরে বাংলা সরকারি কলেজ মাঠে ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন- মাওলানা মোস্তফা আলামিন।
এছাড়া অন্যান্য উপজেলার শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।
ইসতিসকা শব্দের অর্থ পানি বা বৃষ্টি প্রার্থনা করা। সালাতুল ইসতিসকা অর্থ বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ। শারিয়তের পরিভাষায় অনাবৃষ্টির সময় আল্লাহর রাসুলের সুন্নত অনুসরন করে খোলা প্রান্তরে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করাকে সালাতুল ইসতিসকা বা ইসতিসকার নামাজ বলা হয়।
নামাজে অংশ নেয়া শহীদুল ইসলাম ও শাহারিয়ার শান্ত বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বইছে। অসহ্য গরমে জনজীবন হাসফাস অবস্থা। কোথায় গিয়ে স্বস্থি মিলছে না। শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় ইসতিসকা নামাজে অংশ নিয়েছে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ জমিন শীতল করে দিবেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ কামনা করা হয়। আল্লাহ চাইলে এ নামাজ কবুল করে রহমতের বৃষ্টি দিয়ে মানুষ, প্রাণিসহ সকলকে শান্তিতে থাকার পরিবেশ করে দেবেন।