রাজশাহীর বাজারে জমে উঠেছে গোপালভোগ আমের কেনাবেচা
গুটি জাতের পর এবার রাজশাহীর বাজারে আসতে শুরু করেছে গোপালভোগ আম। উন্নত জাতের সুমিষ্ট আমের মধ্যে গোপালভোগ অন্যতম। তাই এই আমের চাহিদাও ব্যাপক। এতে চড়া দামেই হাট-বাজারে হাঁকডাকে জমে উঠেছে এই আমের কেনাবেচা। অনলাইন বাজারও জমে উঠেছে।
জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং সংক্রান্ত সভায় ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, সোমবার (১৫ মে) থেকে গোপালভোগ আম বাজারে আসার কথা। তবে এর দুই দিন আগে থেকেই গোপালভোগ বাজারে আসতে শুরু করে। এখন বাজার দখল করে আছে গোপালভোগ আম। বুধবার (১৭ মে) রাজশাহীর স্থানীয় বাজারে মানভেদে প্রতি মণ গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ২৮০০ টাকায়।
রাজশাহীর বানেশ্বরের আম ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন জানান, ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডারের প্রথম দিনেই তিনি গাছ থেকে ১২ মণ গোপালভোগ আম নামিয়েছেন। সেই আম তিনি পাইকারি মণ প্রতি ২০০০ থেকে ২৩০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। তবে এখন দাম প্রতি মণে এক থেকে দেড়শো টাকা বেশি।
বাঘা উপজেলার আড়ানী বাজারের আমের আড়তদার নওশাদ আলী জানান, গতবারের চেয়ে এই বছর আম বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে বাজারে মণ প্রতি গোপালভোগ ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকা ও গুটি জাতের আম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায় পাইকারি কেনাবেচা হচ্ছে।
এদিকে পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে আমের দাম প্রতি মণে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
এ প্রসঙ্গে আম ব্যবসায়ী সাজদার রহমান জানান, চাষির হাত থেকে আম পাইকার, ফড়িয়ার হাত হয়ে আড়তে গিয়ে ব্যাপারীদের হাতে যাওয়ায় ধাপে ধাপে দাম ও খরচ বাড়ে। এসব কাজে শতশত মানুষ জড়িত। সবাই কিছু না কিছু আয়-উপার্জন করে।
রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার আমের ক্রেতা শরিফুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরই মৌসুমের প্রথম দিকে আমের দাম বেশি থাকে। আর খুচরা বাজারে তো ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম আদায় করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উপশহর নিউমার্কেট এলাকা থেকে ১ কেজি গোপালভোগ পাকা আম কিনেছেন ৮০ টাকায়।
জেলায় ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডারের ঘোষণা অনুযায়ী, গুটি আমের পর গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানীপসন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। বাকি অন্যান্য জাতের আম এর পরপর বাজারে আসবে।
অনলাইনের মাধ্যমে আমের বেচাকেনা করছেন নাঈম ইসলাম। তিনি জানান, তিনি অনলাইন ও অফলাইন দুই বাজারেই আম বিক্রি করছেন। অনলাইন বাজারে বেশি বেচাকেনা করতে পারছেন। মঙ্গলবার (১৬ মে) তিনি আড়াই মণ গোপালভোগ বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে আমের দাম এবার ভালোই আছে। তারা যে দেড় হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন তা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আর পাইকারি ও খুচরা বাজারে আমাদের এই তারতম্য থাকেই। তবে এই মাত্রাটা যেন খুব বেশি না হয় সেদিকে তারা লক্ষ্য রাখছেন। পাশাপাশি গণমাধ্যম যদি সরব থাকে তবে সাধারণ চাষিরা লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।