বৈশাখের ভোরে ঘন কুয়াশা নওগাঁয়!
বাংলা পঞ্জিকার পাতায় ৩ বৈশাখ। গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। কিন্তু বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে যেন হঠাৎ খেয়ালি হয়ে উঠেছে নওগাঁর প্রকৃতি। এমন দৃশ্য এর আগে কখনোই দেখেননি বলে জানিয়েছেন প্রবীণরা। গ্রীষ্মের প্রথম সপ্তাহে কালবৈশাখী বা বজ্রবৃষ্টির আভাসও নেই। তীব্র দাবদাহের পর ভোরের এমন স্নিগ্ধ কুয়াশায় মন ভুলেছে অনেকের।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) ভোরে দৃশ্যটা ছিল পুরোপুরিই শীতকালের মতো। যদিও শীতকালে যে ধরনের তাপমাত্রা থাকে সেটি ছিল না। সূর্যোদয়ের পর পরই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় সবুজ প্রকৃতি। সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখতে পায়নি নওগাঁবাসী। কয়েক দিন তাপমাত্রা বাড়ার পরও কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি বৃষ্টির দেখা নেই । এরপরই হঠাৎ প্রকৃতির এমন আকস্মিক পরিবর্তন দেখে তাই সবাই অবাক! সচারাচর এমনটি হওয়ার কথা নয়।
বদলগাছী উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, বৈশাখ মাসে এমন সময় কুয়াশায় পড়ার ঘটনা বিরল। বৈশাখে নওগাঁয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির উপরে উঠে গেছে। গতকাল নওগাঁর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। পবিত্র রমজানে এমন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় অনেকেই তৃপ্তি ও প্রশান্তি নিয়ে প্রাতঃভ্রমণ সেরেছেন। মন খুলে হেঁটেছেন। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া সকলের মন জুড়িয়ে দিচ্ছে গরমে স্বস্তি পেয়েছেন অনেকে।
নওগাঁর সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকার মিলন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘সকালে ঢাকা থেকে নওগাঁ ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসি ৬টার দিকে। ভোরে নেমে দেখি প্রচণ্ড কুয়াশা। আমি এর আগে কখনো বৈশাখে এমন কুয়াশা দেখিনি।’
সদরের পার নওগাঁ এলাকার শামীম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘রমজানের জন্য ভোরে সেহেরি খেয়ে মসজিদে নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখি প্রচণ্ড কুয়াশা। নামাজ পড়ে আসার সময় ধান, ঘাস ও লতাপাতার কচি ডগায় শিশির বিন্দু। আসলে এমনটি আগে কখনো হয়নি। মনে হচ্ছিল, এটি আমন মৌসুম না, বোরো মৌসুম। সাধারণত আমন মৌসুমে এমন দেখা যায়।’
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রবিবার ভোরে সূর্যোদয় হলেও পরে কুয়াশা পড়ে। তবে আবার সূর্যের মুখ দেখা যায়। রবিবার নওগাঁতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৮ মিনিটে। ভোর ৬ টায় নওগাঁর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি আরও বলেন, এ রকম কুয়াশা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সাধারণত কোনো এলাকায় মেঘ নিচে নেমে এলে এবং তাপমাত্রা কম থাকলে মেঘলা আকাশের মতো আবহাওয়া বিরাজ করতে দেখা যায়।
এসএন