রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ডিম সিন্ডিকেটে অসহায় উৎপাদক-ভোক্তা

প্রায় ২০ কোটি ডিমের উদ্বৃত্তের রাজশাহীতে সিন্ডিকেটের কাছে দাম নিয়ে অসহায় ভোক্তাসহ উৎপাদনকারীরা। ডিম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ ছাড়া কার্যকর কোন সামাধান মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ের দাবি সু-সমন্বিত মূল্য নির্ধারণ করে বাজারকে স্বাভাবিক রাখা।

সর্বশেষ শনিবার (১১ মার্চ) রাজশাহীর সাহেব বাজারের খুচরা লাল ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতিহালি ৪২ টাকা ও সাদা ডিম ৪০ টাকা দরে। কেউ কেউ ৪৪ টাকা হালি দরেও ডিম বিক্রি করছেন। আর পাইকারিতে প্রতি ১০০টি ডিমের দাম ৯৭০ টাকা থেকে ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেই হিসেবে একটা ডিমের (লাল) দাম পড়ছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা। আর সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ৯ টাকা ২০ পয়সায়। একইদিন খামারিরা ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম বিক্রি করেছে ৮ টাকা থেকে ৮ টাকা ৮০ পয়সায়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, খামারির উৎপাদিত ডিমের দাম নির্ধারণ করেন ব্যবসায়ীরা। উৎপাদনের পরে চার থেকে পাঁচ হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছায় ডিম। আর প্রতি হাতবদলে ডিমের দাম বাড়ে ২০ থেকে ৫০ পয়সাসহ কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি। অথচ একজন খামারি প্রতিটি ডিমে ২০ থেকে ২৫ পায়সার বেশি লাভ করতে পারেন না। মধ্যসত্ত্ব ভোগীরাই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সুবিধা লুটছে। অথচ কার্যকর কোন নজরদারি নেই প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ডিমের দাম থেকে শুরু করে বাজার নিয়ন্ত্রণের কাজগুলো সম্পাদন করা হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। ব্যবসায়ীরা পাবনা, ঢাকা ছাড়াও দেশের বড় বড় বাজারে যোগাযোগ করে ডিমের দাম নির্ধারণ করেন। সেই সব বাজারগুলোর ডিমের দামের উপরে নির্ভর করে রাজশাহীর ডিমের দাম।

পবার কুখুন্ডি মল্লিকপুর এলাকার লেয়ার মুরগির খামারি জামরুল ইসলাম জানান, তার খামারে ৯৩০ টা লেয়ার মুরগি রয়েছে। এই মুরগি ১৮ থেকে ২২ মাস পর্যন্ত ডিম দেবে। নতুন মুরগির প্রথম ৬ মাস ডিম আসে ৯০ শতাংশ। পরের ১০ মাসের বেলায় ডিমের উৎপাদন দাঁড়ায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। ১৫ মাসের বেলায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ডিম পাওয়া যায় খামার থেকে। তবে এসময় ডিমের বাজার ভালো থাকতে হবে। অন্যথায় বেশি দামে খাবার খাওয়ানোর ফলে ডিম বিক্রি করে লাভ থাকবে না।

এই মুরগিগুলোর প্রতিদিন দুই বস্তা খাবার লাগে। যার ওজন ১০০ কেজি। দুই বস্তা (কোয়ালিটি প্রিমিয়ার) খাবারের দাম ৬ হাজার ৬০ টাকা। নতুন মুরগি হিসেবে প্রতিদিন ৮৩০ টা করে ডিম দেয়। একটি ডিমে খরচ পড়ে সাত টাকার উপরে। বিক্রি হচ্ছে ৮৭০ থেকে ৮৮০ টাকা (রোববার ৫ মার্চের দাম)। একটি ডিম বিক্রি করে কমবেশি এক টাকা থাকে। তবে বিদ্যুৎ বিল, ওষুধ, নিজের মজুরি ছাড়াও অন্য খরচ বাদ দিলে নগণ্য কিছু লাভ থাকে।

খামারিদের দাবি, ডিমের দাম নির্ধারণে খামারির কোন হাত থাকে না। এটা আড়তগুলো থেকে নির্ধারণ হয়। অনেক সময়ই উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামেও ডিম বিক্রি করা লাগে। ডিম বিক্রির একটা সিন্ডিকেট আছে। আর গত ১৮ থেকে ২০ দিন আগে ডিমের দাম ছিলো ৯ টাকা ৮০ থেকে ৯০ পয়সা। এই দাম ১৫ দিনও থাকে নি। তার পরে কমে গেছে। ডিমের দাম উঠা-নামা করে। কিন্তু খাবারের দাম বাড়লে আর কমে না।

কোম্পানিগুলোর খাবারের দাম বাড়ানো বিষয়ে খামারি জামরুল ইসলাম বলেন, আমি ৮ বছর থেকে এই ব্যবসার সাথে জড়িত। ৮ বছর আগে ৫০ কেজি খাবারের বস্তার দাম ছিল ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকা। ওই বস্তা এখন ৩ হাজার ৩০ টাকা। তাহলে ৮ বছরে প্রতি বস্তায় বেড়েছে প্রায় ১৫০০ টাকা। কিন্তু আট বছর আগে ডিম বিক্রি করেছে ৮ টাকা থেকে সাড়ে ৮ টাকায়। এখনও প্রায় ওই দামেই ডিম বিক্রি করছি।

খাবারের দাম বাড়ার এক সপ্তাহ আগে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দেবে। কিংবা ডিলারের জানিয়ে দেবে ফিডের দাম বাড়ার তারিখ। গত সপ্তায় এক বস্তা খাবারে বেড়েছে ৭৫ টাকা। গত বছর (২০২২) চারবার দাম বেড়েছে খাবারের দাম। নতুন বছর পরে এক বারে ৭৫ টাকা খাবারের দাম বেড়েছে। ব্যবসা শুরু সময়ে একটা মুরগির বাচ্চা দাম ছিল ৩০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে। এখনও সেই দাম আছে। মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ে নি।

সাদেকুল ইসলাম নামের আরেক লেয়ার মুরগির খামারি জানান, ডিম উৎপাদন করে আর আগের মতো লাভ হয় না। যে টাকা লাভ হয় খাবার কিনতেই শেষ হয়ে যায়। খামারে ১ হাজার লেয়ার মুরগি তুলে ছিলাম। এখন টিকে আসা ৯২০ টা। এই মুরগিগুলো ঠিক মতো ডিম দিক আর না দিক খাবার দিতে হবেই। খাবার দিতে না পাড়লে উৎপাদন যতটুকু আছে, তাও থাকবে না।

তিনি আরও জানান, লেয়ার মুরগির খামার করেছিলাম ঋণ করে। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি আছে। যে ডিম উৎপাদন হয় তা দিয়ে নিজের সংসার ও কিস্তি চালাই। তবে খাবারের দাম অনুযায়ী ডিমের দাম আরো ২ টাকা বাড়লে ভালো হতো। আমরা ডিম বিক্রি করছি ৮ টাকা, সাড়ে ৮ টাকা, সর্বোচ্চ ৮ টাকা ৮০ পায়সা। অথচ বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। তার দাবি, বাজার পর্যায়ে না; খামারি পর্যায়ে ডিমের দাম বাড়লে আমরা বাঁচতাম।

ডিম ব্যবসায়ী সেন্টু জানান, প্রতিদিন স্থানীয় বাজারের দাম বেলা ১২টার পরে নির্ধারণ করা হয়। রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদন করে নাবিল গ্রুপ। গতকাল শনিবার (৪ মার্চ) নাবিল গ্রæপের নাবা ফার্ম লিমিটেডের ডিম বিক্রয় কেন্দ্রে প্রতি ১০০টি লাল ডিম বিক্রি হয়েছে ৯২০ টাকায়। এছাড়া স্থানীয় বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে বিভাগের পাবনা, ঢাকার বিভিন্ন বাজারের ডিমের দাম শুনে।

ডিমের বাজারের বিষয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজারের খুচরা ডিম বিক্রিতা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শনিবার (৪ মার্চ) তুলনায় রোববার (৫ মার্চ) প্রতি একটি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ পয়াসা। এছাড়া বাজারে খুচরা লাল ডিম প্রতিহালি ৪২ টাকা ও সাদা ডিম ৪০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাইকারিতে প্রতি ১০০টি ডিমের দাম ৯৭০ টাকা ও সাদা ডিম ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম নির্ধারণ কারা করে ও ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছোট ব্যবসায়ী। আর আমার ব্যাবসার বয়স বেশি দিন না। তাই আমি বলতে পারছি না।

রাজশাহী প্রাণী সম্পদ দপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ২ হাজার ১২টি খামারে প্রতিমাসে পৌনে ৫ কোটি ডিম উৎপাদন হয়। আর ডিমের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৫৭ কোটি। অথচ রাজশাহীতে ডিমের চাহিদা মাত্র ৩৭ কোটি। উদ্বৃত্তের রাজশাহীতেও ডিম কিনতে গিয়ে দিশেহারা ক্রেতারা।

খুচরা ক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ডিমের দাম একেক জায়গায় একেক রকম। হালি হিসেবে ডিম নিলে এক থেকে দেড় টাকা কম পাওয়া যায়। আর খুচরা নিলে বেড়ে যায় ডিমের দাম। সাহেব বাজারের খুচরা দোকানের তুলনায় এলাকার দোকানগুলো প্রতি হালিতে দুই থেকে আড়ায় টাকা বেশি।

রাজশাহী পোল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, সাধারণ ভোক্তারা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হালি দরে ডিম কেনে। একটা ডিম সাধারণ মানুষ ১১ থেকে ১৩ টাকায় কিনছে। এই যে এতো টাকা গ্যাপ হয়ে গেলো। এই গ্যাপের পেছনে কারণ হলো মধ্যসত্ত্ব ভোগি। সরাসরি বিক্রেতার কাছে যাচ্ছে। কয়েক ধাপ পেড়িয়ে ক্রেতার হাতে পরে। কোম্পানিগুলো বড় বড় সেড করছে, তারাই বিভিন্ন বাচ্চা লালন-পালন করে বাজারে দিচ্ছে। তাদের সাথে তো ছোট ছোট খামারিরা পেরে উঠবে না। কোম্পানিগুলোর কাছে ছোট ছোট খামারীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।

রাজশাহী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, আমাদের দেশে ডিমের দাম ওইভাবে নির্ধারণ হয়। ডিমের দাম বেঁধে দেওয়া হয় না। খাদ্য খরচ বাড়লে ডিমের দাম বাড়ে। খামারিদের কথা ডিমের দাম আরও বাড়ানো হোক। ডিমের বাজারে ফরিয়া বা মিডিলম্যান (মধ্যসত্বভোগীদের) যে দৌরাত্ম্য তো আছেই। শুধু ডিমেই নয়, সবজি, মাছ সবক্ষেত্রেই এই দৌরাত্ম্য। এছাড়া করপোরেট বিভিন্ন কোম্পানির কাছেও প্রায়শই জিম্মি দশা তৈরি হয়। এখন এটা পলিসিগত বিষয়। রুট লেভেলে কাজ করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না।
এএজেড

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি