ইউটিউবার মানিকের আয়ে অসহায়রা পাচ্ছেন খাবার

ইউটিউবের আয় দিয়ে অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন উল্লাপাড়ার ইউটিউবার রফিকুল ইসলাম মানিক। কৃষি ভিত্তিক র.ই মানিক নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের আয়ে প্রায় দুই বছর ধরে সপ্তাহে শুক্রবার উল্লাপাড়া পশ্চিম পাড়ায় অসহায়দের খাওয়ার আয়োজন করেন তিনি। সপ্তাহে প্রতি শুক্রবারে তার বাড়িতে আসেন উল্লাপাড়াসহ শাহজাদপুর, বেলকুচির শতশত অসহায় ছিন্ন মুল মানুষ।
৮০ জন মানুষকে খাওয়ানোর আয়োজন থেকে বর্তমানে দেড় হাজারেরও বেশী মানুষকে বিনামুল্যে এক বেলা ভালো খাওয়াচ্ছেন তিনি। তার আয়োজনে খাবারের তালিকায় থাকে সাদা ভাত, গরুর মাংস ডাল৷ খাবারের তালিকা পরিবর্তন করেন একেক সপ্তাহে কোন কোন শুক্রবারে সাদা ভাত, খাসির মাংস, দই মিষ্টি। সমুদ্রের মাছও থাকে এই তালিকায়। খাবারের পাশাপাশি আগত অসহায়দের দেয়া হয় আর্থিক সহায়তা। দুর থেকে যারা গাড়ি ভাড়া করে আসেন তাদের ভাড়া পরিশোধ করেন তিনি।
আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি বয়স্কদের জন্য হাতের লাঠি, হুইলচেয়ার, শেলাই মেশিন, টিউবওয়েল, টয়লেট, থাকার ঘর সহ নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করেন এই ইউটিউবার। সপ্তাহে একদিন এখানে তৃপ্তি সহকারে একবেলা খেতে পেয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন অনেকে। তার এ খবব ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে দেখতে আসছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ।
ইতিমধ্যে দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে তার এ কাজ। সপ্তাহের শুক্রবারে উল্লাপাড়া পশ্চিম পাড়া মানিকের বাড়িতে অসহায়দের উৎসব। মানিকের বাড়িতে খেতে আসা প্রতিবন্ধী জমিলা খাতুন নামে এক বৃদ্ধা বলেন, আমরা ভালো মন্দ খেতে পাই না। শুক্রবারের আশায় থাকি যে সপ্তাহে একদিন মানিক বাবাজির বাড়িতে পেট ভরে ভালো মন্দ খাবো।
আরেক বৃদ্ধ রশিদ বলেন, আমি প্রতিবন্ধী হাটতে পারি না। গত শুক্রবারে এসে এখানে নাম লিখে গিয়েছিলাম আজকে আমাকে খাবারের পরে হুইল চেয়ার দিয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন অসহায় বিধবা সেলাই মেশিন পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। ইউটিউবে মানিকের এসব প্রতিবেদন দেখে যশোর থেকে সরেজমিনে এই কর্মকাণ্ড দেখতে এসেছিলেন রুবেল নামে এক যুবক।
তিনি বলেন, আমি অনেকদিন ধরে ইউটিউবে তার এই প্রোগ্রাম গুলো দেখি। আজ নিজ চোখে দেখতে এসেছি। এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে, এতো মানুষের খাবারের আয়োজন সত্যি অবাক করা দৃশ্য। উল্লাপাড়া সরকারী আকবর আলী কলেজের প্রফেসর শামিম হাসান বলেন, মানিক ভাইদের মতো যোদ্ধারা আছেন বলেই অসহায়রা বেচে থাকার স্বপ্ন দেখতে পারছে। ক্ষুধার্তরা খাবার পাচ্ছে। এমন কাজ প্রতিটি জেলা উপজেলায় হোক।
আয়োজক ইউটিউবার রফিকুল ইসলাম (র.ই মানিক) বলেন, ছোট বেলায় ভাতের কষ্ট করেছি। তখনই সংকল্প করেছি যদি সামর্থ হয় তাহলে আমি অসহায়দের আহার করাবো। আমি ইউটিউবের আয় থেকে দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে যত্ন সহকারে খাওয়াচ্ছি। আস্তে আস্তে বেশী লোকের সমাগম হচ্ছে। ইনশাল্লাহ যতদিন জীবিত আছি এ কাজ চালিয়ে যাবো।
এএজেড
