মার্চে চালু হচ্ছে রাজশাহীর নভোথিয়েটার

রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্রে নির্মিত বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার এখন দৃশ্যমান। অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষে এখন ডেকোরেশনের কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে মার্চেই এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নভোথিয়েটার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সম্মুখ অংশে দুই দশমিক তিন একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠছে এই নভোথিয়েটার।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে সরজমিনে দেখা যায়, মূল অবকাঠামোর কাজ শেষে এখন ফিনিশিং কাজ চলছে। ভেতরে টাইলস, সিলিং, এসি লাগানো ও কাঁচের কাজ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, এ নভোথিয়েটারে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রজেক্টর সিস্টেমযুক্ত প্ল্যানেটরিয়াম, ৯ ডি, ৫ ডি হল, মুজিব কর্নার, সায়েন্টিফিক লাইব্রেরি, টেলিস্কোপ, কম্পিউটারাইজড টিকেটিং অ্যান্ড ডেকোরেটিং সিস্টেমসহ নানা সুবিধা থাকবে। ২০১২ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্যোগেই প্রকল্পটি গ্রহণ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ২২২ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহী’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রথম হাতে নিয়েছিল রাসিক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
জানা যায়, ২০১৫ সালের আগস্টে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় অনুমোদন পায়। ওই বছরের ডিসেম্বরেই একনেকে পাঠানো হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় প্রকল্পটি পাস হয়। প্রথমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময়কাল ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। একনেক সভায় সময়সীমা ৬ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে নানা কারণে একদফা সংশোধন হয়ে সর্বশেষ প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ২৩২ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর কাজ শুরু হয়। সংশোধিত প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয় ২০২৩ সালের জুন। তবে এর আগেই কাজ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
তৎকালীন রাসিকের প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিশেষত মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করা, বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট কুসংস্কার দূর করতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক নাগরিক তৈরিতে বিজ্ঞানের সুযোগ-সুবিধা রাজধানীর বাইরে ছড়িয়ে দেওয়াই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশীদ বলেন, নভোথিয়েটরের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ফিনিশিং কাজের শেষ পর্যায়ে আছি। সবকিছু মিলিয়ে মার্চেই দশনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করতে পারব।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মেজর তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। একবার আরডিবিবি সংশোধন করা হয়েছে। নভোথিয়েটর একটি বিশেষায়িত কাজ। প্রকল্পের যখন ডিজাইন করা হয়, তখন অনেক কিছুই ধারণা ছিল না। এখানে বেশ কিছু বিজ্ঞাননির্ভর আইটেম সংযোজন করা হয়েছে। ৫ ডি, ইমার্সি ব্রাইট, টেলিস্কোপ সংযোজন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একবার আরডিবিবি করা হয়েছে। নির্ধারিত যে সময় অর্থাৎ জুন ২০২৩ এর আগেই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই নভোথিয়েটরে প্ল্যানেটরিয়াম, ৯ ডি, ৫ ডি হল, মুজিব কর্নার, সাইন্টিভিক লাইব্রেরি ক্যান্টিন সুবিধা থাকবে। নিরাপত্তা বিবেচনায় ১২০ টি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে।
এসএন
