পল্লী চিকিৎসকের ভুল ইনজেকশনে প্রাণ গেল শিশুর
নওগাঁর মহাদেবপুরে এক পল্লী দন্ত চিকিৎসকের ভুল ইনজেকশনে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার হাতুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু সাব্বির রহমান (৪) জেলার পত্নীতলা উপজেলার চান্দুইল গ্রামের ছানোয়ার হোসেনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে ওই পল্লী চিকিৎসক পলাতক রয়েছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছানোয়ার হোসেন তার ছেলের দাঁতের চিকিৎসার জন্য মহাদেবপুর উপজেলার হাতুর গ্রামের আশা ডেন্টাল কিওর হোমের পল্লী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মন্ডলের কাছে নিয়ে যায়। এসময় দাঁতের ব্যথা উপশমের জন্য ওই পল্লী চিকিৎসক বলেন, একটি দাঁত তুলে ফেলতে হবে। এর আগে দুটি ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করতে হবে। পরে দুটি ইনজেকশন পুশ করে দাঁত উঠানো হয়। দাঁত উঠানোর পরপরই সাব্বির কাঁপতে কাঁপতে নিথর হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তখন ওই পল্লী দন্ত চিকিৎসক তার চেম্বার থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা সাব্বিরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশুর বাবা ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমি এর আগে বেশ কয়েকবার পল্লী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মন্ডলের কাছে ছেলের দাঁতের চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু দাঁতের ব্যথা না কমায় তার সঙ্গে আজ সকালে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তার চেম্বারে যেতে বলেন। বেলা ১১টার দিকে তার চেম্বারে গেলে তিনি একটি দাঁত তুলে ফেলতে বলেন। তার কথায় রাজি হলে তিনি দাঁত তুলে ফেলার আগে দুটি ইনজেকশন পুশ করেন। দাঁত তুলে ফেলার পর আমার ছেলে কাঁপতে কাঁপতে নিথর হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় ওই চিকিৎসক দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই আমার ছেলে মারা গেছে। ইনজেকশন দিয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে ওই দন্ত চিকিৎসক। সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তিনি বলতে পারতেন আমরা অন্য কোথাও গিয়ে চিকিৎসা করাতাম। ওই পল্লী চিকিৎসকের কঠিন শাস্তি চাই। আর যেন কোনো শিশুকে আমার ছেলের মতো ভুল চিকিৎসায় মরতে না হয়।
মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খোরশেদুল ইসলাম বলেন, শিশু সাব্বিরকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই মারা যায়। ভুল চিকিৎসার কারণেই এমনটা হয়ে থাকতে পারে। কারণ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দুটি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিল। হাইপার সেনসেনটিভ বা নিউজেনিভ শকের কারণেও হতে পারে।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, সাব্বিরের মরদেহ উপজেলা হাসপাতাল থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। নিহতের বাবা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বর্তমানে অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার মন্ডল পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।
এসজি