১৫ জেলে ভারতে বন্দি, আড়াই মাসেও মুক্তি মেলেনি
গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে গিয়ে পথ ভুলে পটুয়াখালী কলাপাড়ার ১৫ জেলে এখন ভারতীয় কারাগারে। আড়াই মাসেও মুক্তি পাননি জেলেরা।
একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাগারে বন্দি থাকায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে ভুক্তভোগী জেলে পরিবার। বর্তমানে এসব পরিবার পার করছে মানবেতর জীবন। তাদের ফিরে পেতে স্বজনদের মধ্যে চলছে আর্তনাদ। আটক জেলে পরিবারে শিশু ও নারীদের কান্না যেন দেখার কেউ নেই।
জেলেদের স্বজনরা জানায়, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মৎস্য বন্দর আলীপুর থেকে এফ,বি তানজিলা ও এফ, বি তাহিরা নামে দুটি ট্রলারে মাছ শিকারে যান জেলেরা। গভীর সমুদ্রে পথ হারিয়ে ভারতীয় জল সীমানায় প্রবেশ করে ট্রলার। এ সময় ভারতীয় কোস্টগার্ড ট্রলারে থাকা জেলেদের আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। আটক এসব জেলে উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
আটক জেলেরা হচ্ছেন, এফ,বি তানজিলা ট্রলারের মালিক পান্না মিয়া, মাঝি আলমগীর হোসেন, নাইম ফরাজী, রহিম মোল্লা, জহির, ইউসুফ, ইসমাইল, তারাইয়া, কবির আহম্মদ। শাহজাহান ফকিরের মালিকানাধীন এফ,বি তাহিরা ট্রলারের মাঝি মো. তৈয়ব, চালক খাইরুল আমিন, ইব্রাহিম সরদার, ইসমাইল, কফিল উদ্দিন ও জাহিদ।
এসব জেলে পরিবারে আর কোনো কর্মক্ষম লোক না থাকায় অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতব জীবনযাপন করতে হচ্ছে। কারাবন্দি জেলে নাঈমের স্ত্রী আনিকা জানান, তার স্বামী সাগরে গিয়ে পথ হারিয়ে ভারতের জেলে আটকা পড়ে আছে।
এফবি তাহিরা ট্রলারের মালিক শাহজাহান ফকির জানান, তার ট্রলারে ছয়জন জেলে ছিলেন এবং এফবি তানজিলা ট্রলারে ছিলেন নয়জন। একই দিন ঘন কুয়াশায় কারণে তারা দিক নির্ণয় করতে না পেরে ভারতীয় জল সীমানায় ঢুকে পড়ে। এর পর কোস্টগার্ডের সদস্যরা তাদের আটক করে সেখানকার পুলিশে হস্তান্তর করে। এ খবর শুনে তারা মহিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে। বর্তমানে এসব জেলে কাকদ্বীপ প্রদেশের মডার্ন কারাগারে রয়েছেন। তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এফবি তানজিলা ট্রলারের মালিক পান্না মিয়া বলেন, ওই ট্রলারে আমার ছেলে নাঈম ছিলেন। তাকেও আটক করে জেলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় ভারতীয় উকিলের মাধ্যমে আমার ছেলে আমার সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর আর কথা বলতে পারিনি।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, জেলেদের ফিরিয়ে আনা জরুরি। এসব জেলে পরিবারে আর কোনো কর্মক্ষম লোক নেই। তাই জেলে পরিবারের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে তাদের মুক্ত করতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ হাই কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।
মহিপুর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেই সময় একটি জিডি করা হয়েছে। আমরাও বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি।
এসএন