এলজিইডির দুই প্রকৌশলীকে ঠিকাদারের মারধরের অভিযোগ
পটুয়াখালীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের (এলজিইডি) দুই কর্মকর্তাকে এক প্রভাবশালী ঠিকাদার মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুমকি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মো. নাজিম উদ্দীন দুমকি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে (এলজিইডি) প্রকৌশলী পদে ও সালাম একই দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত।
অভিযুক্ত ঠিকাদার গোলাম সরোয়ার বাদল ওরফে মেয়র বাদল পটুয়াখালী মেসার্স পল্লী ট্রেডার্সের মালিক।
পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম শাহাবুদ্দিন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সালাম ঢাকাপ্রকাশেকে বলেন, ২০১৬ সালে গোলাম সরোয়ার বাদল দুমকির পাঙ্গাশিয়ায় একটি সেতু নির্মাণ করেন। কাজ শেষ হলেও সেতুতে নানা ত্রুটি থাকায় কাজের অনুকূলে অর্থ পরিশোধ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু ঠিকাদার আমার কাছে এসে শতভাগ বিল দাবি করেন। আমি আপত্তি দিয়ে বলি-ওই প্রকল্পে যৌথ মেজারমেন্ট করে বাকি বিল পরিশোধ করা হবে। আপনি চাইলেই আমি বিল দিতে পারি না। এতে ঠিকাদার বাদল রাগান্বিত হয়ে আমাকে চড়-থাপ্পর মারতে শুরু করেন। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়েও একই কাণ্ড ঘটান।
প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দীন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রথমে আমার কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সালামের সঙ্গে পুরনো একটি বিল নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও তাকে মারধর করে। এরপর তিনি আমার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বিল নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করার পরামর্শ দিই। এ সময় কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি চেয়ার ছুড়ে ও আমার গালে চড়-থাপ্পর মারেন। এ সময় তিনি তার কোমরে থাকা পিস্তল খোঁজেন এবং আমাদের ভয়-ভীতি দেখান।
অভিযুক্ত গোলাম সরোয়ার বাদল বলেন, পুরনো একটি বিল নিয়ে এলজিইডি টালবাহানা শুরু করেছে। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ মধ্যস্থতা করেন। বিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে উপসহকারী প্রকৌশলী আ. সালাম ১০ লাখ টাকা দাবি করলে আমি আজ ধারদেনা করে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা সালামকে দিই। কিন্তু সালাম ওই টাকা হাতে নিয়ে বাকি টাকা দাবি করেন এবং বিল দিতে বেঁকে বসে। তখন আমি তার গায়ে হাত তুলতে বাধ্য হই। কিন্তু প্রকৌশলীর সঙ্গে কিছু হয়নি।
দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ হাওলাদার ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মারধরের বিষয়টি এলজিইডির লোকজন আমাকে জানিয়েছেন।
দুমকি থানার ওসি মো. আব্দুল সালাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ দেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
টিটি/