বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সুনামগঞ্জে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি ফসলরক্ষা বাঁধ

হাওর-অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলায় প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে দেখা দেয় অকাল বন্যা। মার্চের দিকে শুরু হওয়া এই বন্যায় হাওরের বোরো ধান ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ফলে ধান রক্ষায় প্রতি বছর সুনামগঞ্জ জেলায় হাওরে নির্মাণ করা হয় ফসলরক্ষা বাঁধ।

কিন্তু এ বছরে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওরের বাঁধ নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ করার কথা থাকলেও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বেশিরভাগ বাঁধের কাজ এখনও শেষ হয়নি। একইসাথে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছাচারিতার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয় এই বাঁধের কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষক ও লোকজনের দাবি, এ পর্যন্ত ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে। অনেক বাঁধে এখনও মাটির কাজই শেষ হয়নি। সঠিক সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ঢলে ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে বোরো ফসলের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, হাওরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বাঁধের কাজে ঢিলেমি লক্ষ্য করা গেছে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওরে বোরো ফসলের সুরক্ষার জন্য ৭২৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ১৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারসহ ৫৩২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ জন্য সরকার ১১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। মৌসুম শেষ পর্যায়ে এসেও মাত্র ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ বাঁধে ঘাস লাগানো হয়নি, করা হয়নি দুর্মুজ। ডিজাইন অনুযায়ী বাঁধের স্লোপ দেওয়া হয়নি।

গোড়া থেকে মাটি কেটে অনেক বাঁধ নির্মাণ করায় সেগুলো দুর্বল হয়েছে। এর সবই কৃষকদের উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বরাম হাওরের গুড়খাই (তুফানখালি) ও বোয়ালিয়া বাঁধে ফসল রক্ষা হয় দিরাই-শাল্লা, খালিয়াজুরি, ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের সীমানা পর্যন্ত বড় বড় হাওরের। বোয়ালিয়া বাঁধ এখনই ধসে গেছে। তুফানখালীর বাঁধে এখনো মাটি পড়ছে।

স্থানীয় রাজাপুর গ্রামের কৃষক ছাত্তার মিয়া বলেন, বাঁধগুলোর কাজ আরও আগে শেষ করা জরুরি ছিল।

একই এলাকার আমিরপুরের কৃষক শামছুল হক বলেন, বোয়ালিয়ায় খুবই দুর্বল বাঁধ হয়েছে। এই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা আছে। ৪-৫ দিন আগে বাঁধে ধ্বস শুরু হয়েছে। তুফানখালীর বাঁধের মাটি কমপেকশন হতে হতে পানি চলে আসবে।

কেবল তুফানখালী বা বোয়ালিয়া নয় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে এখনও মাটিই পড়েনি। ফলে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে।

প্রকল্প কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দাবি, কাজের তুলনায় টাকা কম পাওয়া গেছে। সময় মতো অর্থ না পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। নলয়া হাওর ঘুরে দেখা যায়, নলুয়ার হাওরের ফোল্ডার-১ এর আওতাধীন ১ নম্বর প্রকল্পে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে এখনও মাটি পড়েনি।

ওই প্রকল্পের তেলিকোণা পাকা সড়কের নিকট থেকে নয়াবাড়ী, নোয়াগাঁও ও কান্দারগাঁও এলাকাসহ প্রায় ৫০০ মিটার স্থানে এখনও মাটি পড়েনি। ৩, ৫, ৬ ও ৭ ও ৮ নম্বর প্রকল্পের বেশকিছু স্থানে মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়নি।

নলুয়া হাওরের এক নম্বর প্রকল্পের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, মাটি কাটার মেশিন নষ্ট থাকায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে দুই তিনদিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তিনি জানান, ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ, টাকা পেয়েছি মাত্র ২৫ ভাগ। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে বাঁধের কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

একইভাবে সুনামগঞ্জের দোয়ারা উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ২১টি পিআইসির বেড়িবাঁধের মধ্যে বেশিরভাগ পিআইসির বাঁধের কাজ এখনও শেষ হয়নি।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এবার সুরমা ইউনিয়নের ফসলরক্ষা বেড়ি বাঁধের কাজ ভালো হয়নি। কোনো কোনো ফসলরক্ষা বাঁধের বেশিরভাগ অংশে মাটিই ভরাট হয়নি। বাঁধের দৈর্ঘ, প্রস্থ ও উচ্চতার সঠিকতা নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, সুরমা ইউনিয়নের ২১টি পিআইসির বেড়ি বাঁধের মধ্যে বেশিরভাগ পিআইসি এখলাছুর রহমান ফরাজি ও তার আত্মীয় স্বজনের নামে রয়েছে। সবকিছু সামলে এবারের পিআইসির বেড়িবাঁধ নির্মাণ একই ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে থাকায় বাঁধের কাজ ভালো হয়নি। সুরমা ইউনিয়নের ১ নম্বর পিআইসি এখলাছুর রহমান ফরাজির নামে আছে।

৩ নম্বর পিআইসি এখলাছুর রহমান ফরাজির চাচাতো ভাই সম্পর্কের আত্মীয় মো. আতাউর রহমান ফরাজির নামে, ২৮ নম্বর পিআইসি আপন ভাতিজা মোশারফ হোসেন ফরাজির নামে রয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি পিআইসি রয়েছে এখলাছুর রহমান ফরাজির তত্ত্বাবধানে।

সুরমা ইউনিয়নের ১ নম্বর পিআইসির সভাপতি এখলাছুর রহমান ফরাজি বলেন, আমার বাঁধের কাজ শেষ হতে আরও সপ্তাহ-দশদিন লাগবে। একাধিক পিআইসিতে তার স্বজনরা আছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নিজস্ব ট্রাক, ট্রলি ও এক্সেভেটর আছে। আমি বাঁধে মাটি ভরাটের কাজে ব্যবহার করি। এ জন্য অনেকে বলেন, এসব বেড়ি বাঁধ আমার।

৪-৫ বছর পর পর হাওরে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। যা গত ২০১৭ সালে হাওর বিপর্যয়ের পর শঙ্কামুক্ত ৪টি বছর কাটিয়েছেন কৃষকেরা। কিন্তু জামালগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারগুলোতে মাটি ও দুরমুজের কাজ কোনো রকম শেষ হলেও বাকি আছে টেকসইকরণের বস্তা ও বাঁশ পোঁতার কাজ। জামালগঞ্জ উপজেলার বদরপুর থেকে শুরু হওয়া হাওড়িয়া আলীপুর পর্যন্ত বাঁধে এখনও দুরমুজের কাজ শেষ হয়নি।

এ বাঁধের ঘনিয়ার বিল সংলগ্ন নদী তীরবর্তী একাংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে নদীর বাঁক খাওয়া মোড় থাকায় ধীরে ধীরে ভাঙন আরও প্রবল আকার ধারণ করতে পারে। তখন ঝুঁকিতে পড়বে বিশাল হালি হাওর। এর বিপরীত পাড়ের শনি হাওরের অপর বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শেষ হয়নি।

ওই বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারটি মাটিতে ভরাট হলেও বাঁশ পোঁতাসহ অন্যসব কাজ বাকি আছে। এ হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার লালুরগোয়ালা ও তার লাগোয়া বাঁধে মাটি ফেলা শেষ হয়েছে, কিন্তু মাটি ড্রেসিং ও দুর্বা লাগানোর কাজ করতে কাউকে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, মামুদপুরের ভাঙা থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত ক্লোজারেও বাকি আছে বাঁশ ও বস্তা ফেলার কাজ। দুর্গাপুরের বিপরীত পাড়ের মহালিয়া হাওরের চারটি পিআইসির মধ্যে দুটিতে কেবল মাটি ফেলা শুরু হয়েছে। ওই ৭ ও ৮ নম্বর পিআইসি সংশ্লিষ্ট কাউকে বাঁধে পাওয়া যায়নি। এ হাওরের অপর ২টি বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু মদনাকান্দির বিপরীত পাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারটিতে বাঁধ টেকসইকরণের কাজ এখনও বাকি আছে।

এ অবস্থায় মহালিয়া হাওরটি অরক্ষিত বলে মনে করছেন হাওরের সচেতন মানুষেরা।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের কামারটুক গ্রামের পাশে খরচার হাওরপাড়ের ৬ নম্বর পিআইসির নির্মিত বেড়িবাঁধে নানা অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে। একেবারে বাঁধের গোড়া ঘেঁষে একাধিক খনতা করে মাটি উত্তোলন করায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এমন অভিযোগ একাধিক কৃষকের।

খরচার হাওরের ৬ নম্বর পিআইসির সভাপতি আবুল বরকত বলেন, বেড়িবাঁধের গোড়া থেকে খনতা করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। এ ভাবে খনতা করায় বাঁধে কোনো সমস্যা হবে না। ঘাস লাগানো ও দুমুর্জ করার কাজ বাকী রয়েছে।

তবে সবকিছু মিলে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে চরম অবহেলার চিত্র দেখা গেছে। আগামী এক সপ্তাহেও বাকি কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাওর পাড়ের মানুষেরা।

বাঁধের কাজে ঢিলেমিতে অসন্তুষ্ট হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারাও। তারা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরাবরই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করে না। ফলে এ নিয়ে লাখ লাখ কৃষক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক থাকে।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের এক নেতা অঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এ বছর পানি শুকিয়েছে দ্রুত। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। হাওর ঘুরে দেখলাম, মহালিয়ার ৭ ও ৮, হালির ১০ ও ১১, পাগনা হাওরের ২৭ ও ৩৩ নম্বর পিআইসিসহ শনি হাওরের একটি বাঁধে এখনও মাটি ফেলার কাজ চলছে। এর মধ্যে অধিক বরাদ্দকৃত ৩৩ নম্বর পিআইসিতে একটু মাটিও পড়েনি। মহালিয়ার ২টি বাঁধে কেবল মাটি ফেলা শুরু হওয়ায় পুরো হাওরটি অরক্ষিত মনে হয়েছে। সিংহভাগ বাঁধে এখনও দুর্বা লাগানো হয়নি এবং দুরমুজ করা হয়নি প্রায় ২০টি বাঁধে। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ না হওয়ায় জামালগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি হাওর নিয়ে আমরা চিন্তিত।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, হাওরের কাজ আমরা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছি। প্রথম দফায় কাজ শেষ না হাওয়াতে আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের বাঁধের কাজ সমাপ্ত করা হবে।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, এ পর্যন্ত অনেক বাঁধে মাটির কাজ শেষ হয়নি। মাটি দুরমুজ (কম্পেকশন) ও ঘাস লাগানো হয়েছে আরও কমসংখ্যক বাঁধে। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ৫০ মিটার দূর থেকে বাঁধের মাটি আনার কথা থাকলেও ৩৫ ভাগ ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি।

কাসমির রেজা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সকল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখনো বেশিরভাগ বাঁধে মাটির কাজই শেষ হয়নি। এটি খুব দুঃখজনক। ইতোমধ্যে বৃষ্টি বাদল শুরু হয়ে গেছে। দেরিতে বাঁধ নির্মাণ করলে বাঁধের মাটি নরম থাকে। পানির ধাক্কায় সহজে বাঁধ ভেঙে যায়।

সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘মাটি ফেলার কাজ মোটামুটি শেষ। আশা করি, দুই-চার দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। কৃষকদের শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বৃষ্টি শুরুর আগেই কাজ শেষ হবে।

এমএসপি

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়