হয়রানির প্রতিবাদে বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃক বেনাপোলের দু’টি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টেস লাইসেন্স বাতিল ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে শনিবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন।
ফলে দু‘দেশের বন্দর এলাকায় পচনশীল পণ্যসহ শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্সের (শুল্কমুক্ত) মাধ্যমে আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের ট্রাকে বিশেষভাবে লুকিয়ে আনা প্রায় অর্ধকোটি টাকার শাড়ি, থ্রিপিচ, বাংলা মদ, ফেন্সিডিল. বিদেশি সিগারেট, ওষুধ, কারেন্ট জালসহ ভারতীয় পণ্য জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় ড্রাইভার সরাসরি জড়িত থাকলেও ট্রাকসহ ড্রাইভারকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের আমদানিকারক ঢাকাস্থ অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ও ফ্যাশান ফোরাম লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান।
এ ঘটনায় বুধবার (২ মার্চ) বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুইটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউস। পাশাপাশি সিঅ্যান্ডএফের কর্মচারীদের নামেও মামলা করেন বেনাপোল পোর্ট থানায়।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের আটক না করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল ও কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি এক যৌথ সভায় আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
লাইন্সেস পুর্নবহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারতীয় এক শ্রেণির ট্রাকচালক অর্থের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বৈধ আমদানি পণ্যের সাথে চোরাচালানী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য পাচার করে আসছে। এর আগে অসংখ্য ট্রাক অবৈধ মালামালসহ বেনাপোল কাস্টমস বিজিবির হাতে ধরাও পড়েছে।
অপরদিকে, পেট্রাপোল বিএসএফ ও পুলিশ ভারতীয় ট্রাকের মধ্য থেকে সোনা, ডলার, পাসপোর্ট, মোবাইল, রূপার গহনাসহ ট্রাকচালককে আটক করেছে। ভারতে ট্রাকচালক আটক হলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারতীয় কোনো ট্রাকচালককে আটক না করে ছেড়ে দেয়। এখানে আমদানিকারক ও সংশ্লিস্ট সিএন্ডএফকে দায়ি করা হয়। অথচ তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এ রকম ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০টি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব ঘটনায় বন্দর ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা ঘোষণায় বৈধ চালানের আড়ালে ফেনসিডিল, সিগারেট, ভারতীয় মদসহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যসহ বন্দর থেকে ভারতীয় একটি ট্রাক আটক করা হয়।
এ অভিযোগে দুটি সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে শোকজ করা হয়েছে। অবৈধ পণ্য আমদানির অভিযোগে থানায় মামলাও করা হয়েছে।
আমদানি-রপ্তানিসহ কার্যক্রম চলমান রাখতে সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এমএসপি