মক্তবের ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মুয়াজ্জিন গ্রেপ্তার
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১০ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে হাফেজ মো. মোরসালিন (১৯) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বিকালে নিজ কার্যালয়ে প্রেস করফারেন্স করে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
হাফেজ মো. মোরসালিন বড় সাতাইল বাতাইল জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও আরবির শিক্ষক। তিনি মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে থাকতেন। ওই শিশুটিকে মসজিদে মক্তব পড়াতেন মো. মোরসালিন। শিশুটি তার নানার বাড়িতে থাকত। মো. মোরসালিন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ী গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নীলফামারীর জোড়াবাড়ী গ্রামের মাহাতাব আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন (২১), গোবিন্দগঞ্জের হিরোকপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে আলামিন হোসেন (২২) ও একই উপজেলার জঙ্গলমারা গ্রামের মোজাফফর আলী খন্দকারের ছেলে আরাফাত খন্দকারকে (১৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মো. মোরসালিন ওই শিশুসহ আরও দুই শিশুকে মসজিদে মক্তব পড়ান। পড়া শেষে মো. মোরসালিন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি এলাকার এক ব্যক্তির বাড়িতে মক্তব পড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে রাস্তায় ওই শিশুটির সঙ্গে তার দেখা হলে তাকে মসজিদ সংলগ্ন কক্ষটিতে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে বাঁধা দিলে তার গলা টিপে ধরেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর শিশুটি নিস্তেজ হলে তাকে ধর্ষণ করেন মো. মোরসালিন। তারপর শিশুটির পরনের হিজাব স্কার্ফ দিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়। এরপর মো. মোরসালিন শিশুটিকে সিমেন্টের খালি বস্তায় ঢুকিয়ে দুই কিলোমিটার দূরে সাইকেলের পিছনে ক্যারিয়ারে বেঁধে নিয়ে বর্ধনকুঠি এলাকার একটি বাঁশঝাড়ে ফেলে দিয়ে আসেন। পরের দিন দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই শিশুর মামা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে একটি মামলা দায়ের করে। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মো. মোরসালিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আলামিন হোসেন ও আরাফাত খন্দকারকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ। তাদের মধ্যে মো. মোরসালিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আলামিন হোসেনকে তিন দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মো. মোরসালিন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। আটককৃত অন্যদের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
ঘটনাস্থল থেকে মো. মোরসালিন সাইকেলে করে ওই শিশুটির মরদেহ বর্ধনকুঠি এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে। এজন্য ওই দোকানের মালিককে পুরস্কার দেন পুলিশ সুপার।
প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) আবু লাইচ মো. ইলিয়াচ জিকু, সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) উদয় কুমার সাহা, জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নূর মোহাম্মদ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মো. মাহবুবুল আলম, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মো. ইজার উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও ডিবির উপ-পরিদর্শক নওশাদ আলী প্রমুখ।
টিটি/