কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে । মঙ্গলবার (১ মার্চ) রাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজারে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ বুধবার (২ মার্চ) পর্যন্ত চলে। এতে উভয় পক্ষের তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আলী (৪০) নামের একজনকে আটক করেছে কুমারখালী থানা পুলিশ।
আহতরা হলেন-একই এলাকার গোপাল (৪২), কামাল (২৪) ও শাজাহান (৩০)। তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর ও পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। এলাকায় যেকোনো তুচ্ছ ঘটনায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (১ মার্চ) সন্ধ্যার পর উভয় পক্ষের শত শত নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান করে। এ সময় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের তিনজন আহত হয়। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যেকোনও উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনও ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ বিষয়ে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন বলেন, 'কোনো কারণ ছাড়াই সংঘর্ষ হয়েছে। প্রতিপক্ষরা পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে স্বীকৃতি দেয় না। তাই ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। দলীয় অভিভাবকের অভাবে নিজেদের মধ্যে বিবাদমান সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের ক্যাডার বাহিনী কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে মহড়া ও কটুক্তিমূলক স্লোগান দিচ্ছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের সমর্থকেরা প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার একজন সমর্থক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।'
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, 'পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সিল সুমনের থেকে তুলে দিলে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।'
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সমর্থকরা মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। কোনও কারণ ছাড়াই প্রতিপক্ষরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে গোপাল নামের একজনকে হাত-পা ভেঙে গুরুতর আহত করে। কামাল নামের আরও একজন আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।'
এ ব্যাপারে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, 'আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুনরায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যেকোনও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।'
এসআইএইচ