অচেতন করেই বাগে আনতে হলো সেই হাতিটি
লালমনিরহাটে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় আনা হাতিটিকে ২৪ ঘণ্টা পর ট্র্যাংকুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডক্টর তপন কুমার দের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম এসে হাতিটিকে অচেতন করে।
এর আগে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে হাতিটি। মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। কিন্তু তারাও ব্যর্থ হন।
স্থানীয়রা জানায়, লালমনিরহাট পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্প মেলায় আনা হাতিটি হঠাৎ করে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়েন শহরে। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়। পরে মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে গেলে আরও উত্তেজিত হয়ে রাস্তার গাছপালাসহ মানুষের ওপর আক্রমণ করে।
এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে সার্কাস দলের সদস্যরা ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে একটি বিলে নেমে পড়ে হাতিটি।
ওই পুকুর থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও সক্ষম হয়নি বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
সকালে ঢাকায় খবর দিলে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডক্টর তপন কুমার দের নেতৃত্বে একটি টিম বেলা ১১টায় লালমনিরহাটে আসে। এ সময় একটি বাঁশবাগানে নিয়ে হাতিটিকে ট্র্যাংকুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করা হয়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সার্জন তপন কুমার দে বলেন, “দুপুরে হাতিটিকে ট্র্যাংকুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করা হয়েছে। ট্র্যাংকুলাইজার গান দিয়ে অচেতন করার ওষুধ প্রয়োগের পর হাতিটি দৌড়ে বাঁশবাগানে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে হাতি অচেতন আছে। হাতিটি প্রায় এক সপ্তাহ অচেতন থাকবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক জানান, সোমবার থেকে চেষ্টা করেও তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তাই ঢাকার বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ৩ সদস্যের একটি টিমকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে ট্র্যাংকুলাইজার দিয়ে অচেতন করেছেন। জ্ঞান ফেরার পর যদি এমন করে তবে হাতিটিকে ট্রাক কিংবা অন্য কোনোভাবে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর বলেন, “সার্কাসের হাতি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শহরের অনেক ক্ষতি করেছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা আবেদন করলে তদন্ত করে অনুদান দেওয়া হবে।”
এমএসপি