মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলা: সাবেক মেয়র মুক্তির জামিন বাতিল
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তির অন্তর্বর্তী জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ মুক্তির জামিন বাতিলের এ আদেশ দেন।
এর আগে নয়জন আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শুরু করেন আদালত।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি মনিরুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শর্ত সাপেক্ষে প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ জামিন মঞ্জুর করেন।
অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জামিন বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পন করেন।
আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পাওয়ার আগ পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন তিনি।
সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, সোমবার ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
মুক্তি আইনজীবীদের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ বর্ধিতসহ স্থায়ী জামিন মঞ্জুরের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, তার চিকিৎসা অব্যাহত আছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে।
মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ আদালতে জামিন বর্ধিত না করার আবেদন জানান।
এরপর উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত জামিন বাতিল করে মুক্তিকে
কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ মামলার আসামি সাবেক মেয়র মুক্তিকে শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন আদালত।
প্রসঙ্গত, মুক্তি ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই।
এ ছাড়া তার বাবা আতাউর রহমান খান এই আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিন পেয়ে মুক্ত আছেন। তাদের অপর দুই ভাই আত্মগোপনে রয়েছেন।
এমএসপি