মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অভিযোগ নিষ্পত্তির পরও উজিরকে থানায় নিয়ে পুলিশের নির্যাতন

গত ৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়ার বাড়ি ঘেরাও করেন প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্যরা। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে দরজা খুলতে বলা হয়। এ সময় উজির মিয়া দরজা খুলতে নাখুলতেই পুলিশ তার হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে আঘাত উজির মিয়ার মাথায় করে। এরপর লাঠি দিয়ে তার হাতে আঘাত করে তারা। তারপর বসতঘর থেকে বাহিরে নিয়ে উজির মিয়ার পায়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। তখন উজির মিয়ার বোন পুলিশের পায়ে ধরে না মারার অনুরোধও করেন। তারপরও টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এভাবেই উজির মিয়াকে আটকের সময় নির্যাতন করা হয়েছে বলে ঢাকা প্রকাশকে জানান তার বোন সিপা বেগম।

শুধু আটকের সময়ই নয়, থানায় নিয়ে যাওয়ার পরও উজির মিয়ার উপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয় বলে জানা গেছে। ওই দিন রাতে আটক হন একই গ্রামের শহীদুল ইসলাম ও আক্তার মিয়া নামের আরও দুই যুবক। তাদের ওপরও চলে নির্যাতন। উজির মিয়ার সঙ্গে ওই রাতে আটক হওয়া শহীদুল ও আক্তার মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে জানান, শান্তিগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর গামছা দিয়ে বেঁধে, উল্টা করে ঝুলিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। ভয়াবহ নির্যাতনের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যান উজির মিয়া।

আক্তার মিয়া আরও বলেন, আমাকে ধরে নেওয়ার পর থানায় নিয়ে প্রথমে এসআই দেবাশিষ এবং আরও ২ জন পুলিশ আমাকে লাঠি দিয়ে খুব মারেন। পুলিশের কথামতো নিজেকে চোর স্বীকার না করায় সবাইকে এক রুমে আনা হয়। তখন উজির ভাইয়ের হাতে হ্যান্ডকাফ লাগানো হলো, আমাদেরও লাগাল। দুটি টেবিল কাছাকাছি এনে দুই টেবিলের মাঝখানের অংশে উজির ভাইকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে এসআই দেবাশিষ তাকে অনেক জোরে লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। এ সময় উজির ভাইকে চোর স্বীকার করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। গরু চুরির সঙ্গে উজির ভাই জড়িত এটা স্বীকার করার জন্য আমাকে মারতেই থাকে। আমি মার সহ্য করতে না পেরে মাথা নাড়লে তারা শান্ত হয়।

আরেক যুবক শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাকে কিছু না বলেই কয়েকজন পুলিশ বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে আমাকে শান্তিগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। রাত ১টার সময় থানায় পৌঁছানোর পর আমাদের আলাদা আলাদা রুমে রেখে মুখে গামছা বেঁধে শুরু করে মারধর। তখন লড়তেও পারি না। মুখ খুলে কানতেও পারি না। মার খেতে খেতে দুনিয়ার সবকিছুই ভুলে গেছি কেবল জানটা বাঁচানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই ছিল না আমার। তখন আরেকটা রুমে উজির ভাইকে কীভাবে মেরেছে তা দেখিনি। কিচ্ছুক্ষণ পরে আমার সামনে এনে হাতকড়া লাগিয়ে লুঙ্গি মালকোঁচা বেঁধে প্রথমে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পিঠিয়েছে পুলিশ। তারপর দুই পায়ের তলায়। আমারও পায়ের তলায় লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। মার খেতে খেতে অজ্ঞান হলে পুলিশ হাসি-ঠাট্টা করত, অভিনেতা বলত। ’তুই চোর বল তুই চোর' বলেই নির্যাতন করত পুলিশ। আর্তচিৎকার করলে চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। ভয়াবহ নির্যাতনের এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে উজির ভাই অজ্ঞান হয়ে গেলে আর জ্ঞান ফিরে না, তখন উজির ভাইসহ আমাদের তিনজনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশরা।

সূত্র জানায়, সেই রাতে শহীদুল ও আক্তারকে বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শান্তিগঞ্জ থানায় ফিরিয়ে আনা হলেও উজিরকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পুলিশ হাসপাতালে দাবি করে, চুরি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে তারা। সকালে উজির মিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে তাকে থানায় আনা হয়। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে গরু চুরির মামলায় উজির, শহীদুল, আক্তার ও শামীম মিয়া নামে আরেকজনকে আদালতে হাজির করা হয়। আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উজির, শহীদুল ও আক্তারের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে মুক্তির পরদিন (১১ ফেব্রুয়ারি) গুরুতর অসুস্থ উজির মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেন। পরদিন হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ড থেকে দেওয়া ছাড়পত্রে তার অসুস্থতার কারণ হিসেবে 'ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট (শারীরিক আঘাত) উল্লেখ করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন উজির। এরপর (২১ ফেব্রুয়ারি ) সকালে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে অবস্থার আরও অবনতি হয়। পরে রাস্তায় সুনামগঞ্জ ছাতক উপজেলা কৈতক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উজির মিয়া মারা যাওয়ার সংবাদে পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এলাকাবাসী। শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষের ফাঁসির দাবিতে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উজির মিয়ার মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ ও সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন জনতা। সেই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার উজ জামানকে বহনকারী একটি গাড়ি উজির মিয়ার মরদেহকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় আরও বেড়ে যায় ক্ষোভ। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারা দেশের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। মরদেহকে চাপা দেওয়া গাড়িটি ছিল উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনারের। তবে গাড়ির ভেতরে বসা ছিলেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উজ জামান। এ প্রসঙ্গে ইউএন আনোয়ার উজ জামানের দাবি, তাকে বহনকারী গাড়িটি মরদেহকে চাপা দেয়নি। তবে এ ঘটনার দুটি ভিডিও ক্লিপ আসে ঢাকাপ্রকাশের কাছে।

এদিকে উজিরের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মামলার সাক্ষীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কথা বলে জানা গেছে, উজির মিয়াকে চুরির যে মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই অভিযোগের বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে আপস-মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল। এরপর থানায় একটি আপসনামাও জমা দিয়েছিলেন বাদী। আপসে অভিযোগ নিষ্পত্তির পরও উজির মিয়াকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) আত্মীয়ের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে উজিরকে পরিকল্পিতভাবে আটক ও নির্যাতন করারও অভিযোগ তাদের। আর যে গরু চুরির মামলায় তাকে আটক করা হয়, থানায় জমা দেওয়া সেই মামলার এজাহারেও‌ ছিল না উজিরের নাম।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আমরিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুর উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির একটি গরু হারায়। পরে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার একটি বাজারে গরু ও অটোরিকশাসহ চারজনকে আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষসহ কয়েকজন পুলিশকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান নুর উদ্দিন। সেখান থেকে গরু ও অটোরিকশা উদ্ধার এবং চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরদিন এই চারজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় গরু চুরির মামলা করেন নুর উদ্দিন। কিন্তু এই মামলায় উজির মিয়াকে কেন আটক করা হলো? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজতে ঢাকা প্রকাশের টিম অনুসন্ধানে করে উপজেলার পশ্চিম পাগলা ও দরগাপাশা দুই ইউনিয়নে।

এ প্রসঙ্গে মামলার চার নম্বর সাক্ষী ও দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, গরু আটকের পর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা থেকে একজন আমাকে কল দেন। আমি গরুর মালিক নুর উদ্দিনকে খবরটি জানাই। এরপর জানতে পারি এই ঘটনায় যাদের আটক ও মামলায় আসামি করা হয়েছে তারা সকলেই আমার গ্রামের। পরে লোকজন আমার কাছে এসে বিষয়টি আপসে নিষ্পত্তির অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধে নুর উদ্দিনকে আপসের প্রস্তাব দেই। ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে নুর উদ্দিনকে জানাই। আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে ওই রাতেই নুর উদ্দিন থানায় আপসের কথা জানান। এর প্রেক্ষিতে পরদিনই সব আসামি আদালতের মাধ্যমে জামিন পান।

এরপর গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি আপসে নিষ্পত্তি হয়েছিল বলে জানান মামলার সাক্ষী মতচ্ছির আলী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘নুর উদ্দিনের গরু উদ্ধার, মামলা দায়ের, সালিশ বৈঠক সবকিছুতেই আমি ছিলাম। কিন্তু এ ঘটনায় উজিরের সম্পৃক্ততার কথা কেউ বলেননি। বাদীও তার নাম বলেননি। উজিরকে ভালো ছেলে বলে জানি। তবুও তাকে কেন আটক করা হলো তা পুলিশই ভালো বলতে পারবে।

মামলার বাদী নূর উদ্দিন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, পুলিশের কথায় আমি অভিযোগ দেই। এরপর গ্রামের মানুষ মামলা তুলে নেয়ার জন্য বলেন। আমি তাদের কথায় আদালতকে আপসের বিষয়টি জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমি উজির মিয়াকে চিনিই না। আমার গরু যারা চুরি করছে তারা হাতেনাতে আটক হয়েছে। চার আসামি জামিন হওয়ার পর এ ঘটনায় পুলিশ তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। উজির মিয়া আটক হওয়ার বিষয়টিও আমি জানি না।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়ার মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে সময় বাড়ানো হয়েছে আরও তিন দিন। জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটি গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এ সময় বাড়ানোর আবেদন করে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। যেহেতু আমাদের দুই–একজন সদস্যকে নিয়ে কথা উঠেছে। তাই বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমাদের কোনো ভুল-ত্রুটি আছে কি না, আমরা সেটিও দেখব।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পুলিশ হোক, অফিসার হোক যে কেউ যদি বারাবারি করে আইন লঙ্ঘন করে তার বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে বিচার করব।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় সৌদি আরবে ছিলেন উজির মিয়া। দেশে ফিরেন সাত বছর আগে। দেশে এসে প্রথমে দোকান দিলেও পরে ছোটখাটো বিল ইজারা নিয়ে মাছের ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

এসআইএইচ

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে

এ আর রহমান এবং মোহিনী দে। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি হঠাৎ করেই সামাজিক মাধ্যমে সায়রা বানুর সঙ্গে ২৯ বছরের সংসারের ডিভোর্সের ঘোষণা করেন অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। এ আর রহমান ডিভোর্স ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পরেই তার সহশিল্পী গিটার বাদক মোহিনী দেও বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা করেন।

এই দুই ঘটনাকে একসঙ্গে টেনে নেটদুনিয়ায় গুঞ্জন ছড়ায় পরকীয়ার কারণে উভয়ের ডিভোর্স হয়। এই গুঞ্জন নিয়ে রহমান কোনও মন্তব্য না করলেও, তার আইনজীবী এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আর এবার সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে মোহিনী স্পষ্টই জানালেন, রহমান তার কাছে বাবার মতো।

হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন মোহিনী। সঙ্গে লম্বা ক্যাপশন। মোহিনী জানান, ‘খুব অবাক লাগছে, চারিদিকে আমাকে আর রহমানকে নিয়ে যে ধরনের মিথ্যা খবর রটেছে। সংবাদমাধ্যমে পুরো বিষয়টাকে নিয়ে যেভাবে জলঘোলা করা হচ্ছে, তা সত্যি ক্রাইমের পর্যায় পরে।'

মোহিনীর কথায়, ‘আমার জীবনে পিতৃপ্রতিম অনেকেই রয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম রহমান। আট বছরেরও বেশি সময় তার সঙ্গে কাজ করেছি। অকারণ কলঙ্কিত করা হচ্ছে।’

মোহিনী তার পোস্টে লিখেছেন, ‘হৃদয়ে খুবই বেদনা নিয়ে এটা জানাচ্ছি, যে মার্ক এবং আমি বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বিচ্ছেদ একেবারেই দুজনের সিদ্ধান্ত।

দুজনে আলাদা হলেও, আমরা খুব ভালো বন্ধু থাকব এবং ম্যাকের সঙ্গে কাজেও যুক্ত থাকব। আমরা দুজনেই মিলে অনেকগুলো প্রোজেক্টে কাজ করছি। সেটা সফলভাবেই শেষ হবে। আমাদের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান আপনারা, এটাই সবার কাছে চাইবো।’

১৯৯৫ সালে রহমান ও সায়রা বানুর বিয়ে হয়েছিল। দেখাশোনা করেই নাকি এই বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২৯ বছর তারা একসঙ্গে কাটিয়েছেন। খাতিজা, রহিমা ও আমিন, তিন সন্তানের জন্ম হয়েছে। মেয়ে খাতিজার বিয়েও হয়ে গেছে।

বিয়ের এত বছর পর হঠাৎ কেন বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন রহমান ও সায়রা এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে এক্স হ্যান্ডেলে রহমান নিজের ও সায়রার যৌথ বিবৃতি শেয়ার করেছেন। যাতে জানানো হয়, দাম্পত্যের তিরিশ বছরের জন্য অনেক প্রত্যাশা ছিল রহমান ও তার স্ত্রীর কিন্তু তা হল না।

Header Ad

ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করাই বিশেষ কোনো গোষ্ঠির লক্ষ্য।

তিনি বলেন, বিগত কয়েক মাসের চেয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা অনেক ভালো। তবে এখনও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় কিছু শঙ্কা থেকে গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কেউ পরিচয় জানতে চাইলে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে হবে। অকারণে কাউকে গ্রেপ্তারও করা যাবে না। কেউ অবৈধ আদেশ দিলে সেটাও পালন করবেন না।

তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা বেড়ে গেছে। কোনো অবস্থায় মিথ্যা মামলা নেওয়া যাবে না। কেউ যদি মিথ্যা মামলা করে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মিথ্যা মামলা দিয়ে চাঁদাবাজি, হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে যাই বলুক না কেন কাজ করে যেতে হবে। কাজ করতে গেলে অনেক সমস্যার সমালোচনা মোকাবিলা করতে হবে। কী পরিস্থিতির মধ্যে আপনারা কাজ শুরু করেছেন তা সবাইকে বিবেচনা করতে হবে। কেউ প্রশংসা করুক বা না করুক কাজ করে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। মব জাস্টিসের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বের হওয়ার পর পুনরায় অপকর্মে জড়ালে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সবাই মিলে একযোগে কাজ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। যাদের কাছেই অপরাধের তথ্য থাকে তারা তা দিয়ে অন্যদের সহযোগিতা করবেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা তাদের দাবি নিয়ে রাস্তা অবরোধ না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারে। কিংবা আমাদের সঙ্গে আলোচনায়ও বসতে পারে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। আমরা কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কঠোর হতে চাই না।

তিনি বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগিরই এ স্থিতিশীল একটি পরিবেশ তৈরি সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়
কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
সিএমপি হেফাজতে ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ, তোলা হবে আদালতে